আরজি করের চিকিৎসক পড়ুয়াকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় উত্তাল রাজ্য। এই আবহে ‘জাস্টিস ফর আরজি কর’ আন্দোলনে শামিল হলেন কলকাতা হাই কোর্টের আইনজীবীরাও। বুধবার বিকেলে হাই কোর্ট চত্বরে পালিত হল অভিনব মানববন্ধন কর্মসূচি। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে তাতে দেখা গেল ধৃত সন্দীপ ঘোষের আইনজীবী বিশ্বরূপ ভট্টাচার্যকে।
সোমবার কলকাতায় সিবিআই গ্রেফতার করেছে আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপকে। সেই গ্রেফতারিকে চ্যালেঞ্জ করে বুধবার আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি। তার আগে নিরাপত্তা চেয়ে হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছিলেন সন্দীপ। সেই সময় তাঁর হয়ে সওয়াল করেছিলেন আইনজীবী বিশ্বরূপ। তখন প্রধান বিচারপতি সন্দীপের ভূমিকার সমালোচনা করেন। ওই আইনজীবীর উদ্দেশে তাঁর মন্তব্য, ‘‘আপনার মক্কেল তো প্রচণ্ড প্রভাবশালী। তাঁর নিরাপত্তায় তো রাজ্য রয়েছে। তাঁকে বলুন বাড়িতে বিশ্রাম নিতে।’’
আরও পড়ুন:
এ ছাড়া আরজি কর হাসপাতালে আর্থিক অনিয়মের মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজ। ওই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ৩০ মিনিটের মধ্যে ডিভিশন বেঞ্চে যান বিশ্বরূপ। সন্দীপের আইনজীবীর সওয়াল ছিল, তাঁর মক্কেলের বক্তব্য না শুনেই একতরফা ভাবে নির্দেশ দিয়েছে সিঙ্গল বেঞ্চ। ওই মামলায় অবশ্য শেষমেশ সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশের উপর হস্তক্ষেপ করেনি ডিভিশন বেঞ্চ।
আরজি কর-কাণ্ডে সংবাদমাধ্যমের ভূমিকার বিরুদ্ধেও সন্দীপের তরফে হাই কোর্টে আবেদন জানিয়েছিলেন বিশ্বরূপ। তাঁর বক্তব্য ছিল, সংবাদমাধ্যম তাঁর মক্কেল সম্পর্কে ‘অসত্য’ এবং অবমাননাকর খবর প্রকাশ করছে। তার ফলে তদন্ত যেমন প্রভাবিত হচ্ছে তেমনই সন্দীপের সম্মানহানি হচ্ছে। তাঁর বিরুদ্ধে জনরোষও তৈরি হচ্ছে। যদিও তাঁর সেই অভিযোগ কার্যত খারিজ করে বিচারপতি শম্পা সরকার গত ২২ অগস্ট তাঁর পর্যবেক্ষণে জানিয়েছিলেন, মামলাকারী এমন কোনও তথ্য দেখাতে পারেননি, যা থেকে ‘মিডিয়া ট্রায়াল’ বোঝা যায়।
আরও পড়ুন:
প্রসঙ্গত, আরজি কর-কাণ্ডের পর থেকেই সন্দীপের ভূমিকা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। এর পরে তিনি নিজে থেকে ইস্তফা দেওয়ার কিছু ক্ষণের মধ্যেই সন্দীপকে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ নিয়োগ করা হয়। কিন্তু সেখানে তিনি ঢুকতে পারেননি পড়ুয়াদের ক্ষোভে। শেষে নিয়োগপত্র ফিরিয়ে নিতে হয় রাজ্য সরকারকে। এর পরে তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে গেলে ১৬ দিন জেরা করা হয় সন্দীপকে। ইতিমধ্যেই কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে আরজি করে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে তদন্তের দায়িত্ব পায় সিবিআই। সেই মামলাতেই সন্দীপকে গ্রেফতার করা হয় সোমবার।