নিজাম প্যালেস থেকে সন্দীপ ঘোষকে নিয়ে বেরিয়ে আসছে সিবিআইয়ের দল। মঙ্গলবার। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।
আর জি কর হাসপাতাল-সহ রাজ্যের প্রায় ২৫টি সরকারি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে হওয়া দুর্নীতির বিস্তারিত বিবরণ সিবিআইয়ের পরে এ বার সুপ্রিম কোর্টের হাতে তুলে দিতে উদ্যোগী হল অল ইন্ডিয়া ফেডারেশন অব ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন (এআইএফজিডিএ) ও জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অব ডক্টর্স, পশ্চিমবঙ্গ (জেপিডি)। আর্থিক নয়ছয়, স্বজনপোষণ, নানাবিধ দুর্নীতি চক্র চালানোর অভিযোগ জানিয়ে আজ আর জি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের চিকিৎসা করার লাইসেন্স বাতিল করার জন্য জাতীয় মেডিক্যাল কমিশনের কাছে দরবার করেছে এআইএফজিডিএ। আগামিকাল আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে জহওরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়, যন্তর মন্তর-সহ দিল্লির বিভিন্ন প্রান্তে সন্ধ্যায় মোমবাতি মিছিলের আয়োজন করা হয়েছে।
আজ চিকিৎসকদের দুই সংগঠনের পক্ষ থেকে দিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠকে জানানো হয়েছে, রাজ্যের কেবল আর জি কর নয়, কমপক্ষে ২৫টি সরকারি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি ছড়িয়ে পড়েছে। এআইএফজিডিএ-র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুবর্ণ গোস্বামী বলেন, ‘‘ওই হাসপাতালগুলিতে স্বজনপোষণ, অর্থ নয়ছয়, ওষুধ বিক্রির মতো চক্র সক্রিয় রয়েছে। তা ছাড়া কী ভাবে কিছু লোক শাসক দলের ঘনিষ্ঠ হওয়ার সুবাদে হাসপাতালগুলিতে সন্ত্রাসের বাতাবরণ সৃষ্টি করে রেখেছিল তা সিবিআইয়ের কাছে জমা দেওয়া ১১০০ পাতার নথিতে বলা আছে।’’
সূত্রের মতে, ওই নথিতে অন্তত ডজনখানেক ব্যক্তির নামও রয়েছে, যাঁরা পিছন থেকে সরকারি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে ওই দুর্নীতি চক্র চালাতেন। সুবর্ণের মতে, ‘‘স্বাস্থ্য দফতরের আওতায় থাকা স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানগুলির নিয়ন্ত্রক হল শাসক দলের অধীনে থাকা গ্যাং বা চক্র। সামাজিক ও আর্থিক দুর্নীতির সিন্ডিকেটের সঙ্গে রাজ্য প্রশাসনের ঘনিষ্ঠ যোগসাজশ রয়েছে।’’ চিকিৎসকদের মতে, স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে ওই সিন্ডিকেটের দায় এড়াতে পারেন না খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আগামী বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টে আর জি কর কাণ্ডের শুনানি রয়েছে। তার আগে ওই এগারোশো পাতার রিপোর্ট যাতে শীর্ষ আদালতে জমা পড়ে সে জন্য উদ্যোগী হয়েছে চিকিৎসকদের সংগঠন। দিল্লির রাম মনোহর লোহিয়া হাসপাতালের চিকিৎসক অর্চনা কুমারী বলেন, ‘‘ওই ঘটনার পরের দিন আমার নাইট ডিউটি ছিল। কিন্তু আর জি করের কাণ্ডের ফলে আমি এতটাই আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলাম যে ঘরে বিশ্রাম করার সাহস পাইনি। নিজের হাসপাতালেই অসুরক্ষিত মনে হচ্ছিল নিজেকে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy