তাণ্ডব: থানায় ঢুকে বিক্ষোভ। রবিবার রাতে, টালিগঞ্জ থানায়। নিজস্ব চিত্র
টালিগঞ্জ থানার ভিতরে রবিবার রাতে পুলিশকর্মীদের নিগৃহীত হওয়ার ঘটনায় কারণ দর্শানোর নোটিস ধরানো হল ওসি অনুপ ঘোষকে। উত্তেজিত জনতা থানায় ঢুকে তাণ্ডব চালানোর পরেও হামলাকারীদের বিরুদ্ধে সেই রাতে কোনও অভিযোগ দায়ের করেননি ওসি। এমনকি, ওই ঘটনার বিন্দুবিসর্গও জানাননি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাউকে। সোমবার সংবাদমাধ্যমের কাছ থেকে ওই খবর জানতে পারেন লালবাজারের কর্তারা। আর সেই কারণেই ওসি-র উপরে প্রবল অসন্তুষ্ট তাঁরা। সূত্রের খবর, লালবাজারের কর্তারা ওসি-কে তীব্র ভাষায় ভর্ৎসনা করেছেন।
লালবাজারের একটি সূত্র জানাচ্ছে, রবিবার রাতে থানার ভিতরে ও বাইরে পুলিশকর্মীরা নিগৃহীত হওয়ার পরেও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে গোটা ঘটনাটি চেপে যাওয়া হয়েছিল। উত্তেজিত জনতার সামনে পুলিশের কার্যত ‘আত্মসমর্পণ’-এর বিষয়টি সোমবার সকাল পর্যন্তও জানতেন না কর্তারা। লালবাজারের কন্ট্রোল রুমও বিষয়টি জানতে পারেনি বলে সূত্রের দাবি।
সোমবার সকাল থেকে সংবাদমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে শোরগোল শুরু হতেই নড়েচড়ে বসেন পুলিশের কর্তারা। তড়িঘড়ি তাঁরা খোঁজ নিতে শুরু করেন, ঠিক কী ঘটেছিল। পুলিশের একাংশের দাবি, সেই সময়ে কর্তারা জানতে পারেন, থানার ভিতরে পুলিশ-নিগ্রহের মতো গুরুতর ঘটনা ঘটলেও কোনও মামলা রুজু করা হয়নি। পুলিশের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, ‘‘নিয়ম অনুযায়ী, পুলিশকর্মীদের কাজে বাধাদান করলে সঙ্গে সঙ্গেই মামলা রুজু করে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। তা না করে ওসি নিয়মবিরুদ্ধ কাজ করেছেন। তাঁর ঘরে ঢুকেও যে জনতা কাজে বাধা দিয়েছে, তা-ও জানানো হয়নি।’’ উল্লেখ্য, ওই ঘটনায় শেষমেশ মামলা রুজু হয় সোমবার সকালে।
লালবাজার জানিয়েছে, পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা পুরো বিষয়টির খোঁজ নিতে গোয়েন্দা-প্রধান মুরলীধর শর্মাকে টালিগঞ্জ থানায় যেতে নির্দেশ দেন। সেই মতো এ দিন বিকেলে তিনি সেখানে যান। একই সঙ্গে ডেপুটি কমিশনার (দক্ষিণ) মিরাজ খালিদকে কমিশনার নির্দেশ দেন, পুরো ঘটনাটির তদন্ত করে রিপোর্ট দিতে। সূত্রের দাবি, পুলিশি নিষ্ক্রিয়তা এবং উচ্চ মহলকে যথা সময়ে বিষয়টি না জানানোয় কমিশনার এ দিন বিকেলে থানার ওসি অনুপ ঘোষকে কারণ দর্শানোর
নোটিস দিয়েছেন।
২০১৪-র নভেম্বরে আলিপুর থানায় তাণ্ডব চালিয়েছিলেন শাসক দলের স্থানীয় নেতা ও কর্মী-সমর্থকদের একাংশ। থানায় যাঁদের আটক করে রাখা হয়েছিল, তাঁদের থানা থেকে ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই ঘটনার পরে প্রশ্নের মুখে পড়ে পুলিশের ভূমিকা। পুলিশের একাংশের মতে, ভবিষ্যতে যাতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয়, তার জন্য গাফিলতির
বিষয়টি সামনে আসতেই তড়িঘড়ি ব্যবস্থা নিল লালবাজার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy