Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Teenage girl rescued

গল্ফ গার্ডেন্সের কিশোরীকে ধর্ষণের প্রমাণ মিলেছে

শুক্রবার সকাল পৌনে ৭টা নাগাদ কলকাতার গল্ফ গার্ডেন্স এলাকায় প্রিন্স গোলাম মহম্মদ শাহ রোডের একটি আবাসন চত্বরে কিশোরীটিকে পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয় এক মহিলা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০১৮ ০২:৫১
Share: Save:

চোখে-মুখে আঘাতের চিহ্ন। ফুলে গিয়েছে গোটা মুখ। ধারালো কিছু দিয়ে চিরে দেওয়া হয়েছে হাতের বিভিন্ন জায়গা। চোখের উপরের অংশও কাটা। জামাকাপড় ছেঁড়া।

শুক্রবার সকাল পৌনে ৭টা নাগাদ কলকাতার গল্ফ গার্ডেন্স এলাকায় প্রিন্স গোলাম মহম্মদ শাহ রোডের একটি আবাসন চত্বরে কিশোরীটিকে পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয় এক মহিলা। খবর দেন পাশের বস্তিতে। এলাকাবাসীরা এসে দেখেন, বৃহস্পতিবার রাতে তাঁরা যে মেয়েটিকে খুঁজেছিলেন, পড়ে রয়েছে সে-ই।

দ্রুত তাকে এম আর বাঙুর হাসপাতালে নিয়ে যান স্থানীয় একটি দোকানের মালিক স্বপন বৈদ্য। হাসপাতালের একটি সূত্রের খবর, ওই কিশোরীর ডাক্তারি পরীক্ষায় ধর্ষণের প্রমাণ মিলেছে। যৌনাঙ্গে একাধিক আঘাত রয়েছে। চিকিৎসক ও পুলিশের অনুমান, অত্যাচারে বাধা দেওয়ায় মারধর করা হয়েছিল তাকে। রাতে অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে আইসিইউয়ে পাঠানো হয়।

আরও পড়ুন: কিশোরীকে গণধর্ষণ, পুড়িয়ে খুন ঝাড়খণ্ডে

পুলিশ জানিয়েছে, বছর চোদ্দোর মেয়েটির মা মারা গিয়েছেন। বাবা চলে গিয়েছেন তাকে ছেড়ে। ওই কিশোরী দাদু-দিদার কাছে মানুষ। বৃহস্পতিবার ১১টা নাগাদ স্কুলে যাচ্ছে বলে বেরোয় সে। কিন্তু ছুটির পরেও নাতনি ফিরছে না দেখে তার কয়েক জন বান্ধবীর সঙ্গে কথা বলেন মেয়েটির দাদু। তখনই তিনি জানতে পারেন, মেয়েটি ওই দিন স্কুলেই যায়নি!

এর পরেই স্থানীয় বাসিন্দারা বিভিন্ন জায়গায় কিশোরীটির খোঁজ করতে শুরু করেন। কিন্তু রাত ২টো পর্যন্ত তার সন্ধান মেলেনি। শেষে যাদবপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তার দাদু। এ দিন সকালে খবরের কাগজ দিতে বেরিয়ে আবাসন চত্বরে কিশোরীটিকে পড়ে থাকতে দেখেন এক মহিলা।

দোকান-মালিক স্বপনবাবু বলেন, ‘‘হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময়ে মেয়েটির জ্ঞান ছিল না। মুখ এতই ফোলা ছিল যে হঠাৎ করে দেখলে চেনাও যাচ্ছিল না।’’ মেয়েটির দাদুর কথায়, ‘‘বৃহস্পতিবার নাতনি স্কুলের পোশাক পরে বেরিয়েছিল। জানতাম স্কুলেই গিয়েছে। কিন্তু সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত না ফেরায় বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারি, ও স্কুলে যায়নি।’’ তবে পুলিশ জানাচ্ছে, শুধু বৃহস্পতিবারই নয়, ওই কিশোরী গত এক মাস যাবৎ স্কুলে যাচ্ছিল না।

আরও যে বিষয়টি পুলিশকে ভাবাচ্ছে তা হল, মেয়েটির দাদু জানিয়েছেন, নাতনি স্কুলের পোশাক পরে বেরিয়েছিল। কিন্তু পড়শিরা যখন তাকে উদ্ধার করেন, তখন সে ছিল সাধারণ পোশাকে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ওই কিশোরী কোথায় ছিল, সঙ্গে কেউ ছিল কি না, কী ভাবেই বা তার শরীরে এত আঘাত লাগল— সব দিকই খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।

হাসপাতাল সূত্রের খবর, এ দিন বিকেলে কিছু ক্ষণের জন্য মেয়েটির জ্ঞান ফেরে। হাসপাতালে গিয়ে তার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেন যাদবপুর থানার ওসি। তবে শুক্রবার রাত পর্যন্ত এই ঘটনায় কেউ গ্রেফতার হয়নি।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE