Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪

যৌন নিগ্রহের তদন্তে গিয়ে উদ্ধার ঝুলন্ত দেহ

পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম উমাকান্ত হালদার (৭০)। দুপুরে দেহ উদ্ধারের আগে পর্যন্ত তাঁর বিরুদ্ধে কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০১৮ ০২:৪৫
Share: Save:

সকালে কিশোরীর যৌন নিগ্রহের অভিযোগ উঠেছিল এক বৃদ্ধের বিরুদ্ধে। সেই ঘটনার তদন্তে গিয়েই বাড়ির ভিতর থেকে ওই বৃদ্ধের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করল পুলিশ। রবিবার, সোনারপুর থানা এলাকার সুভাষগ্রামের ঘটনা।

পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম উমাকান্ত হালদার (৭০)। দুপুরে দেহ উদ্ধারের আগে পর্যন্ত তাঁর বিরুদ্ধে কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি। নাবালিকার অভিভাবকদের মৌখিক অভিযোগ শুনে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে গিয়েছিল সোনারপুর থানা। প্রাথমিক তদন্তেই পুলিশের অনুমান, লোকলজ্জার ভয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন ওই বৃদ্ধ। এ নিয়ে তাঁর পরিবারের তরফে কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি বলে পুলিশের দাবি।

পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন সকাল ১০টা নাগাদ স্থানীয় বাসিন্দা ন’বছরের কিশোরী উমাকান্তের দোকানে নু়ডলস কিনতে গিয়েছিল। দোকানের পিছনেই উমাকান্তের বা়ড়ি। ওই মেয়েটির অভিযোগ, নানা অছিলায় তাকে ফাঁকা বাড়িতে নিয়ে গিয়ে যৌন নিগ্রহ করেন উমাকান্ত। মেয়েটি চিৎকার করলে তাকে ছেড়ে দেন তিনি। তার পরে মেয়েটি বাড়ি ফিরে অভিভাবকদের সব কথা জানায়। সেখান থেকেই এলাকায় বিষয়টি ছড়িয়ে যায়। মেয়েটিকে নিয়ে সোনারপুর থানায় যান তার অভিভাবকেরা। স্থানীয় সূত্রের দাবি, মেয়েটির পরিবার যে পুলিশের কাছে গিয়েছে, তা জানতে পারেন উমাকান্তও।

পুলিশ সূত্রের খবর, অভিযোগ শুনে দুপুর দেড়টা নাগাদ কয়েক জন পুলিশকর্মী বিষয়টির তদন্ত করতে যান। বাড়ির ভিতরে ঢুকে উমাকান্তের খোঁজ করেন তাঁরা। কিন্তু সাড়া মেলেনি। এর পরে বাড়ির পিছনের দিকে ঝুলন্ত দেহটি দেখতে পান পুলিশকর্মীরা। দেহ উদ্ধার করে প্রথমে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় এবং পরে ময়না-তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে দেহটি। এ দিন সকালে উমাকান্তের পরিবারের সকলেই ডায়মন্ড হারবারে বেড়াতে গিয়েছিলেন। পুলিশের কাছ থেকে খবর শুনে ফিরে আসেন তাঁরা।

পুলিশের একাংশের অনুমান, গ্রেফতারের ভয় এবং সামাজিক অপমানের কথা চিন্তা করেই চরম পথ বেছে নিয়েছেন ওই বৃদ্ধ। এ ক্ষেত্রে নাবালিকার পরিবার অভিযোগ করলেও তার সত্যতা বিচারের পথ অনেকটা কঠিন হয়ে গেল বলে মনে করছেন তাঁরা। মনোবিদদের অনেকে এই মৃত্যুর ঘটনার পিছনে অনুশোচনার তত্ত্ব খাড়া করছেন। তাঁদের একাংশের মতে, ওই বৃদ্ধ হয়তো নিজের কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত হয়ে পড়েছিলেন। যাতে সমাজের কাছে খাটো না হতে হয়, সে কারণেই নিজেকে শেষ করে
দিয়েছেন। কেউ কেউ এ-ও বলছেন, এই ঘটনার প্রভাব সামনে এলে পরিবারের বাকি সদস্যদের হেনস্থা হতে হত। তা এড়াতেই এমন পথ বেছে নিয়েছেন তিনি। তবে ভিন্ন মতও রয়েছে। কেউ কেউ এ-ও বলছেন, অনেক ক্ষেত্রে ভুয়ো অভিযোগও ওঠে। সে ক্ষেত্রে অপরাধ প্রমাণের আগেই সমাজের কাছে দাগি বলে চিহ্নিত হয়ে যেতে হয়। এ ক্ষেত্রেও সেই ভয় কাজ করেছে কি না, তাও খতিয়ে দেখা প্রয়োজন পুলিশের।

অন্য বিষয়গুলি:

Rescuers investigation hanging body
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE