নুড়ি-পাথরের সভ্যতায় বদল আনার জন্য এর আগে প্রস্তাব জমা পড়েছিল। এত দিন সেই প্রস্তাবে সাড়া দেয়নি রাজ্য সরকার। কিন্তু এ বার সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে রাজভবনের নুড়ি-পাথরের পথ বদল নিয়ে নিজেদের মত জানাল রাজ্য হেরিটেজ কমিশন। হেরিটেজ শৈলী অক্ষত রেখে কী ভাবে ওই নুড়ি-পাথরের পথ বদল করা সম্ভব, কমিশনের তরফে সম্প্রতি রাজভবনে সে প্রস্তাব জমা পড়েছে।
প্রসঙ্গত, রাজভবনের নুড়ি-পাথর বিছানো পথের পরিবর্তে বাঁধানো রাস্তা করা যায় কি না, তা নিয়ে চলতি বছরের শুরুতেই রাজভবনের তরফে প্রস্তাব জমা পড়ে রাজ্য সরকারের কাছে। আগেও ওই পথ পরিবর্তনের জন্য রাজভবনের তরফে সরকারের কাছে আবেদন জানানো হয়েছিল। কিন্তু সে বার খুব একটা আগ্রহ দেখায়নি রাজ্য। ওই পরিবর্তনের সঙ্গে যেহেতু হেরিটেজের বিষয় জড়িত, তাই সেই প্রস্তাব সরকারের তরফে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল রাজ্য হেরিটেজ কমিশনের কাছে।
সেই মতোই কমিশন সম্প্রতি রাজভবনকে নিজেদের মতামত জানিয়েছে। কমিশনের প্রস্তাবে কী ভাবে ওই পথ বাঁধানো যায়, সে ব্যাপারে নির্দিষ্ট ভাবে জানানো হয়েছে। প্রসঙ্গত, প্রথম দিকে নুড়ি-পাথরের পথ বদলে তেমন সায় দেয়নি হেরিটেজ কমিশন। কারণ, সেটি হেরিটেজ শৈলীর অঙ্গ। ফলে তা অক্ষত রেখে কী ভাবে পথের বদল সম্ভব, তা নিয়ে এত দিন কমিশনের কর্তারা দোলাচলে ছিলেন। পরে সব দিক বিচার-বিবেচনা করেই পথ বদলের পক্ষে মত দেয় কমিশন। কমিশনের এক সদস্যের কথায়, ‘‘হেরিটেজ অক্ষুণ্ণ রেখেও পথ বদল সম্ভব। সেই পদ্ধতির কথাই বরাবর বলা হয়েছে আমাদের তরফে। রাজভবনের যে অংশটুকুতে গাড়ি চলে না, পরীক্ষামূলক ভাবে সেই অংশের রাস্তা প্রাথমিক ভাবে বাঁধানোর কথা বলা হয়েছে। তার পরে তা অন্য অংশে করা যেতে পারে। এ বিষয়ে রাজভবনই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।’’
প্রসঙ্গত, পার্লামেন্ট হাউস, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল-সহ ব্রিটিশ আমলে তৈরি একাধিক হেরিটেজ ভবনে ‘পেবল্স রোড’ রয়েছে। হেরিটেজ স্থপতিদের একাংশের অনুমান, বড় এলাকা জুড়ে যে সমস্ত ভবনগুলি রয়েছে, সেগুলির পাকা রাস্তার খরচ বাঁচাতেই ওই নুড়ি-পাথরের পথ তৈরি করেছিল ব্রিটিশরা। অনেকের ধারণা, নিরাপত্তার দিকটি মাথায় রেখেও ওই রাস্তা নুড়ি-পাথরের করা হয়েছিল। কেউ যাতে কোনও দুষ্কর্ম করে সহজে পালাতে না পারে। কারণ, নুড়ি-পাথর দিয়ে হাঁটা বা দৌড়নোর অসুবিধাজনক।
নুড়িপথ দিয়ে হাঁটা বা গাড়ি চলাচলে অসুবিধা থাকলেও এর সুবিধার কথাও বলেছেন হেরিটেজ স্থপতিরা। তাঁদের বক্তব্য, বৃষ্টির সময়ে জল সহজেই নুড়ি-পাথরের মধ্যে দিয়ে মাটিতে প্রবেশ করে যায়। কিন্তু পথ বাঁধানো হলে নিকাশির আলাদা ব্যবস্থা করতে হবে। কমিশনের এক সদস্যের কথায়, ‘‘রাস্তা বাঁধানো হলে বিকল্প নিকাশির দিকটাও ভাবতে হবে। সেটার জন্যও পরিকল্পনা দরকার।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy