‘‘বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর, সবার আমি ছাত্র। নানান ভাবে নতুন জিনিস, শিখছি দিবারাত্র।’’— কবি সুনির্মল বসুর এই মন্ত্র এখন মেনে চলা শুরু করেছে ইংরেজি ও বাংলা মাধ্যমের কয়েকটি স্কুল। প্রকৃতি থেকে কী ভাবে শিক্ষা নিতে হয়, পড়ুয়াদের সে বিষয়ে উৎসাহ দেওয়া শুরু হয়েছে।
বালিগঞ্জের মডার্ন হাই স্কুল ফর গার্লস কর্তৃপক্ষ চলতি শিক্ষাবর্ষের ‘থিম’ করেছেন, প্রকৃতি থেকে শিক্ষা। ‘সবার আমি ছাত্র’ কবিতায় সুনির্মল বসু বলেছিলেন, কী ভাবে আকাশ, বাতাস, সূর্য, চন্দ্র থেকে শিক্ষা নেওয়া যায়। বাস্তবে তার প্রয়োগ ঘটিয়ে সারা বছর ধরে পালিত হবে এই কাজ। স্কুলের অধিকর্তা দেবী কর বলেন, ‘‘যেমন, একটু ভেবে দেখলে মেয়েদের চুলের ক্লিপ কিন্তু অনেকটাই কাঁকড়ার দাঁড়ের নকল। তেমনই প্রকৃতিতে ছড়িয়ে থাকা বিভিন্ন জিনিসের আদলে নানা জিনিস তৈরি করবে পড়ুয়ারা। সাহায্য করবেন স্কুলের শিক্ষকেরা।’’ সারা বছর ধরে এই কাজ করার পরে বছরের শেষে দেখা হবে, কোন পড়়ুয়া কী কী তৈরি করতে পেরেছে। এর ফলে এক দিকে, প্রকৃতির সঙ্গে পড়ুয়াদের আত্মিক টান তৈরি হবে। অন্য দিকে, নিজেদের সৃজনশীলতা সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা হবে পড়ুয়াদের।
গাছ কাটা, প্লাস্টিকের ষথেচ্ছ ব্যবহারের ফলে যে ভাবে পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে, তাতে ছেদ টানতে প্রকৃতিকে ভালবাসা জরুরি, বলছেন স্কুল শিক্ষকেরা। সেই ভাবনা থেকে ইতিমধ্যেই কয়েকটি স্কুলে এই উদ্যোগ শুরু হয়েছে। গত বছর স্কুলশিক্ষা দফতর থেকেও সরকার পোষিত বাংলা স্কুলে সুবজ পাঁচিল অর্থাৎ গাছ দিয়ে ঘেরা পাঁচিল তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। সর্বত্র অবশ্য এই প্রতিফলন দেখা যায় না।
প্রকৃতিকে গুরুত্ব দিয়ে পড়ুয়াদের সচেতন করার কাজ করে শ্রী শিক্ষায়তন স্কুলও। স্কুলের মহাসচিব ব্রততী ভট্টাচার্য জানান, তাঁদের একটি ‘নেচার ক্লাব’ রয়েছে। পড়ুয়ারা সেখানকার সদস্য। স্কুল চত্বরে গাছ লাগানোর পাশাপাশি পড়ুয়াদের উপরেই সেগুলি রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব থাকে। এর ফলে গাছের সঙ্গে অনেক বেশি একাত্মতা তৈরি হবে পড়ুয়াদের। গোটা শিক্ষাবর্ষ জুড়ে এমন নানা কাজ চলতে থাকে। এমনকী, যে সব পড়ুয়ারা প্রকৃতি নিয়ে বেশি উৎসাহিত, ক্লাস রুমের বাইরে নিয়ে গিয়ে তাদের পঠনপাঠনের ব্যবস্থা করা হয়।
এমনই কিছু উদ্যোগ শুরু করেছে বাংলা মাধ্যমের কয়েকটি স্কুল।
বেথুন স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা মিতালি কুন্ডু জানান, পড়ুয়াদের সঙ্গে প্রকৃতির সম্পর্ক গঠনের রূপরেখা চলছে। মিত্র ইনস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষক অসিতবরণ গিরি বলেন, ‘‘নবম থেকে একাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের প্রতি বছর প্রকৃতি পাঠ দিতে ঘুরতে নিয়ে যাওয়া হয়। তাছাড়া স্কুলেও কী ভাবে প্রকৃতি ও পড়ুয়াদের মধ্যে আত্মিক সম্পর্ক তৈরি করা যায় সেই চেষ্টা চলছে।’’ প্রকৃতি ও পড়ুয়াদের মেলবন্ধনের পাঠ দেওয়া হয় সাখওয়াত মেমোরিয়াল সরকারি বালিকা বিদ্যালয়েও। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা পাপিয়া সিংহমহাপাত্র এমনটাই জানালেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy