প্রতীকী ছবি।
মায়ের গায়ে আগুন দিয়ে দিয়েছেন ঠাকুরমা। নিজের চোখে এমন ঘটনা দেখেছে বলে প্রতিবেশীদের কাছে দাবি করল বছর সাতেকের এক বালক। শুক্রবার ঘটনাটি ঘটেছে দমদমের বেদিয়াপাড়ায়। এই ঘটনায় পুলিশে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই বালকের মামা। যার ভিত্তিতে আটক করা হয়েছে ওই বালকের বাবাকে। পুলিশ সূত্রের খবর, শিশুটির মা আশঙ্কাজনক অবস্থায় আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি। তাঁর দেহের ৩০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, বেদিয়াপাড়ার বড়পুকুরের বাসিন্দা জয়দীপ দাসের সঙ্গে বছর দশেক আগে বিয়ে হয় সাঁইথিয়ার বাসিন্দা দীপা দে-র। তাঁদের সাত বছরের ছেলে সৌম্যদীপ চোখের সামনে নিজের ঠাকুরমাকে মায়ের গায়ে আগুন ধরিয়ে দিতে দেখেছে বলে পুলিশে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন তার মামা মান্না দে।
পুলিশ জানিয়েছে, দীপার শ্বশুর-শাশুড়ি পলাতক। তাঁদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। কী ভাবে আগুন লাগল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
প্রতিবেশীরা জানান, গত এক বছর ধরে ওই পরিবারে অশান্তি চরমে উঠেছিল। দীপা এর আগে দু’বার আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টাও করেন বলে অভিযোগ। দীপার পরিবার সূত্রে খবর, এ দিনই সকালে সাঁইথিয়ায় দাদা মান্নাবাবুকে ফোন করে দীপা জানিয়েছিলেন, শ্বশুর, শাশুড়ি, স্বামীর অত্যাচারে তিনি আর বেদিয়াপাড়ার বাড়িতে থাকতে পারছেন না। দাদা বলেছিলেন, অফিসের কাজ সেরে তাঁকে ফোন করে গোটা বিষয়টি শুনবেন।
মান্নাবাবু এ দিন বলেন, ‘‘এর পরে দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ ফোন করলে বোন শুধু বলে, দাদা আমাকে বাঁচা। আমার সারা শরীর জ্বলে যাচ্ছে, পুড়ে যাচ্ছে!” সেই ফোন পেয়েই ট্রেন ধরে দমদম আসেন মান্নাবাবু। তাঁর বক্তব্য, ‘‘ভগ্নীপতি সংসারের কোনও দায়িত্ব নিত না। কিছু বললেই বোনকে ডিভোর্স দেওয়ার হুমকি দিত। শ্বশুর-শাশুড়ি অত্যাচার করত জানতাম। তবে এত বড় ঘটনা ঘটবে, তা বুঝতে পারিনি।” রাতে বেদিয়াপাড়া পৌঁছে মান্নাবাবু দেখেন, ভাগ্নে কথা বলছে না। মামাকে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়ে প্রথম শ্রেণির ছাত্র সৌম্যদীপ। মান্নাবাবুর দাবি, ‘‘পরে ভাগ্নে অভিযোগ করে, সকাল থেকে ঝগড়া হচ্ছিল। হঠাৎ ঠাকুরমা দেশলাই বাক্স থেকে আগুন ধরিয়ে দিল।” দীপার প্রতিবেশী মধুমিতা কর্মকার এ দিন বলেন, ‘‘ছেলেটা কেঁদেই চলেছে। কিছু জিজ্ঞেস করলেই বলছে, মা রান্না করছিল। ঠাকুরমা হঠাৎ গায়ে আগুন দিয়ে দিল।”
স্থানীয় কাউন্সিলর গোপা পাণ্ডে বলেন, ‘‘খবর পাওয়া মাত্র অ্যাম্বুল্যান্স দিয়ে ওই মহিলাকে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছি। দোষীদের কঠোর শাস্তি হওয়া উচিত।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy