ছিল পিয়নের পদ। তা উঠে গিয়ে হল এডুকেশন অফিসারের পদ। আর পদের এই ‘ভোলবদলেই’ আলোচনা শুরু হয়েছে কলকাতা পুরসভার অন্দরে। পিয়নের পদমর্যাদা ও এডুকেশন অফিসারের পদমর্যাদাও তো এক নয়! তা হলে কী ভাবে এক পদের পরিবর্তে অন্য পদ তৈরি করা হল, তা নিয়েই সংশয় প্রকাশ করেছেন পুর আধিকারিকদের একাংশ। তা ছাড়া একেই পুরসভায় পিয়নের টানাটানি। সেখানে পিয়ন পদের সংখ্যা কমিয়ে কেন এডুকেশন অফিসার বা শিক্ষা আধিকারিকের পদ তৈরি করা হল, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
পুরসভা সূত্রের খবর, এত দিন এডুকেশন অফিসারের একটি পদ ছিল পুরসভায়। কিন্তু সম্প্রতি পুর প্রশাসন সিদ্ধান্ত নেয়, এডুকেশন অফিসারের অতিরিক্ত চারটি পদ তৈরি করা হবে। তাঁরা শহর জুড়ে পুর স্কুলগুলির পঠনপাঠন, উন্নয়নের পরিকল্পনা করবেন। সেই মতো চারজনকে নিয়োগ করা হবে। কিন্তু সমস্যা দেখা দেয় পদের সংস্থান করা নিয়ে। পুর প্রশাসনের একাংশ প্রশ্ন তোলেন, একেই অগুণতি পদ তৈরি হয়েছে পুরসভায়। সেখানে আবারও নতুন পদ তৈরি করতে গেলে তো সমস্যা হবে! এ দিকে নিয়ম মতো পুরসভার মোট স্থায়ী পদের সংখ্যা বাড়ানো যাবে না।
তখন পুর প্রশাসন সিদ্ধান্ত নেয়, ১৩টি পিয়নের পদ পুরোপুরি তুলে দেওয়া হবে। সেই মতো প্রস্তাবও তৈরি করা হয়। কিন্তু বিতর্ক শুরু হয় তার পরেই। কারণ, একেই পুরসভার দফতরগুলিতে পর্যাপ্ত সংখ্যক পিয়নের অভাব রয়েছে। ফলে পিয়ন নিয়ে রীতিমতো দড়ি টানাটানি হয় দফতরগুলির মধ্যে। কারণ, টেবিলে টেবিলে সার দিয়ে থাকা ফাইলপত্র, চিঠির তাড়া, প্রয়োজনীয় নথিপত্র এই বিভাগ থেকে ওই বিভাগে নিয়ে যাওয়ার একমাত্র মাধ্যম তো পিয়নেরাই।
পুরসভা সূত্রের খবর, এক সময় পুরসভায় পিয়ন-পদ ছিল ১৮০০টি। পাঁচ বছর আগেও সেই সংখ্যাই ছিল। ‘জুনিয়র’ ও ‘সিনিয়র’ পিয়নের পদ ছিল ৯০০টি করে। কিন্তু সেখানে সব মিলিয়ে বর্তমানে পিয়নের সংখ্যা পঞ্চাশের মতো! উদ্যান বিভাগের এক পদস্থ আধিকারিকের কথায়, ‘‘অন্য দফতরের সঙ্গে আমাদের রীতিমতো ঝামেলা হয় পিয়ন নিয়ে। কারণ, আমাদের দফতরে তো কোনও পিয়নই নেই। যে ক’টা পিয়ন পদ ছিল, তা-ও যদি উঠে যায়, তা হলে তো সমস্যা।’’ আর এক পুর আধিকারিকের বক্তব্য, ‘‘পিয়নের পরিবর্তে এডুকেশন অফিসার নিয়োগ, এটা হয় নাকি!’’
যদিও পুর প্রশাসনের একাংশ জানাচ্ছেন, পদ তুলে দিয়ে অন্য পদ তৈরি বা নিয়োগ নতুন কোনও ব্যাপার নয়। হামেশাই এমনটা হয়ে থাকে। কারণ, নিয়ম মতো
স্থায়ীপদের সংখ্যা বাড়ানো যাবে না। সেই সঙ্গে নতুন নিয়োগ করা কর্মীদের মাইনের ব্যাপারটি নিশ্চিত করতেও পুরনো পদের অবলুপ্তি প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রেও তেমনই করা হয়েছে। পুরসভার এক উচ্চপদস্থ কর্তার কথায়, ‘‘নিয়ম বহির্ভূত ভাবে কিছু করা হয়নি। স্থায়ীপদের সংখ্যায় যাতে হেরফের না হয়, সে দিকেই খেয়াল রাখা হয়েছে।’’ মেয়র পারিষদ (শিক্ষা) অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘চার জন এডুকেশন অফিসার নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মিউনিসিপ্যাল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে সরাসরি ওই নিয়োগ করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy