Advertisement
০৯ নভেম্বর ২০২৪

কালীপুজোর চেনা ছবিটাই নেই কালীঘাটে

কালীপুজোর সকাল। অথচ কালীঘাট মন্দির চত্বরই খাঁ খাঁ!

শুভাশিস ঘটক
শেষ আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০১৮ ০১:৩১
Share: Save:

কালীপুজোর সকাল। অথচ কালীঘাট মন্দির চত্বরই খাঁ খাঁ!

প্রতি বছর কালীপুজোর আগের রাত থেকেই ভক্তদের ঢল নামে মন্দিরে। ভিড় সামলাতে হিমশিম খেয়ে যায় পুলিশ। পাণ্ডারাও নানা ফন্দি-ফিকির খাটিয়ে কালীভক্তদের থেকে কিছু বেশি দক্ষিণা আদায় করেন বলে অভিযোগ ওঠে। অথচ মঙ্গলবার সকালে মন্দিরে গিয়ে দেখা গেল, হাতে গোনা কয়েক জন ভক্ত এসেছেন। অমাবস্যা-যোগ থাকা বা না-থাকা নিয়ে তাঁদের অবশ্য বিশেষ মাথাব্যথা নেই। ওই ভক্তদের কথায়, ‘‘বহু দিনের যেমন অভ্যাস, তেমনই পুজো দিচ্ছি। অত তিথি-নক্ষত্র মেনে মায়ের পুজো দেওয়া সম্ভব নয়।’’

কালীমন্দিরের এক পুরোহিত অবশ্য বলছেন, ‘‘এ বছর অমাবস্যা লাগছে রাত দশটার পরে। সে কারণেই ভক্ত সমাগম সকালে তুলনায় কম।’’ তাঁরা মূলত অমাবস্যা-যোগে পুজো দেন। অমাবস্যা-যোগের পরে নিত্যপূজার পাশাপাশি মন্দিরে ধনলক্ষ্মীর পুজো করা হয়। মন্দিরের চারপাশে পাটকাঠি পুড়িয়ে অলক্ষ্মী দূর করে হয় সেই পুজো।

তবে মঙ্গলবার রাতে ভক্তদের ভিড় উপচে পড়বে আন্দাজ করে বিশেষ পুলিশি ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এক জন অতিরিক্ত কমিশনারের নেতৃত্বে বিশেষ দল থাকছে মন্দির চত্বরের নিরাপত্তার দায়িত্বে। এক পুলিশকর্তার কথায়, ‘‘সাধারণ ভক্তদের পাশাপাশি বহু ভিআইপিও অমাবস্যা-যোগে পুজো দেন। অনেক সময়ে আসেন মুখ্যমন্ত্রীও। সে কারণেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা আঁটোসাঁটো করা হচ্ছে। শুধু মঙ্গলবার রাত নয়। অমাবস্যা থাকছে আজ, বুধবার সারা দিন। তাই মন্দিরের সুরক্ষায় এবং ভক্তদের নিরাপত্তায় তিনটি শিফ্‌টে পুলিশকর্মীদের আলাদা দল তৈরি রাখা হচ্ছে। এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘সারা বছরই কালীঘাট মন্দিরের সর্বত্র একটি নিরাপত্তা বলয় থাকে। চারটি গেটে থাকে মেটাল ডিটেক্টর। এর পাশাপাশি এ বার কালীপুজোয় পুলিশকর্মীদের হাতেও মেটাল ডিটেক্টর থাকবে।’’

যদিও মঙ্গলবার রাত ও বুধবার সারা দিনে কত ভক্ত আসবেন, তা নিয়ে নিশ্চিত নন মন্দিরের সেবায়েত ও পাণ্ডারা। তাঁদের কথায়, ‘‘কালীপুজোর দিনেই সাধারণত ছুটি থাকে। এ বার সেই ছুটি ছিল মঙ্গলবার। অথচ মূল পুজোর সময় মঙ্গলবার রাত আর বুধবার সারা দিন। সে ক্ষেত্রে অন্য বছরের মতো ভক্ত সমাগম হবে কি না সন্দেহ।’’

তা হলে কি এ বছর কালীপুজোর দক্ষিণা আদায়ে ভাটা পড়বে? সেই আশঙ্কাই উঁকি দিচ্ছে পাণ্ডা থেকে সেবায়েতদের মনে। এক সেবায়েতের কথায়, ‘‘ছুটির দিন একটা ফ্যাক্টর অবশ্যই। এক দিকে ছুটি, অন্য দিকে পুজো দেওয়া— তেমনই করে থাকেন সাধারণ ভক্তেরা। কিন্তু বেশি রাতে অনেকেই পুজো দিতে আসেন না। আর এ বার বুধবার ছুটি না থাকায় ভক্ত সমাগমের আশা খুব কম।’’ অতএব এ বারের তিথির যোগে দক্ষিণা আদায়ও কম হবে বলে মনে করছেন তাঁরা। মন্দিরের আর এক সেবায়েত বলেন, ‘‘বছরে দু’টি দিন আমাদের পকেটে দিনে প্রায় হাজার পাঁচেক টাকা দক্ষিণা আসে। ওই দু’দিন হল পয়লা বৈশাখ আর

কালীপুজো। অনেক পরিচিত ভক্তই সেই দিনে অতিরিক্ত দক্ষিণা দেন। আমরাও বেশি নিয়ে থাকি। কিন্তু এ বছর ভক্ত সমাগমই কম হলে কার কাছে দক্ষিণা চাইব?’’

অন্য বিষয়গুলি:

Religion Kalighat Temple Kali Puja 2018
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE