Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

রেকের আকালে ব্যবধান বেড়েছে দুই মেট্রোয়

গত কয়েক মাস ধরেই যাত্রীদের একাংশের অভিযোগ, সপ্তাহের কাজের দিনে মেট্রো পেতে আগের চেয়ে বেশি সময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে তাঁদের। সরকারি ছুটির দিন ছাড়াও নানা কারণে প্রায়ই ট্রেনের সংখ্যা কম থাকায় ওই অপেক্ষা আরও কয়েক মিনিট বেড়ে যাচ্ছে।

ফিরোজ ইসলাম
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০১৯ ০২:১০
Share: Save:

ব্যবধান বেড়ে গিয়েছে দু’টি মেট্রোর মাঝে!

দিনের ব্যস্ত সময়ে ন্যূনতম পাঁচ মিনিট অন্তর ট্রেন চলার কথা। কিন্তু তেমনটা আর হচ্ছে না। দু’টি ট্রেনের ব্যবধান এখন বেড়ে ৬ মিনিট হয়ে গিয়েছে। অপ্রতুল পরিকাঠামোর কারণেই কর্তৃপক্ষ ট্রেনের সংখ্যা কমাতে বাধ্য হয়েছেন বলে মেট্রো সূত্রের খবর। রেকের আকাল তার মধ্যে অন্যতম।

গত কয়েক মাস ধরেই যাত্রীদের একাংশের অভিযোগ, সপ্তাহের কাজের দিনে মেট্রো পেতে আগের চেয়ে বেশি সময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে তাঁদের। সরকারি ছুটির দিন ছাড়াও নানা কারণে প্রায়ই ট্রেনের সংখ্যা কম থাকায় ওই অপেক্ষা আরও কয়েক মিনিট বেড়ে যাচ্ছে। চলতি বছরে এখনও পর্যন্ত সপ্তাহের ছুটির দিন শনি-রবি বার ছাড়াও দোল, পয়লা বৈশাখ, মে দিবস, মহাবীর জয়ন্তী, ঘূর্ণিঝড় ফণী-সহ নানা কারণে বিভিন্ন দিনে ট্রেনের সংখ্যা কম থেকেছে। আজ, বৃহস্পতিবার, নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার দিনেও মেট্রোর সংখ্যা ২৮৪ থেকে কমিয়ে ২২৪ করা হয়েছে।

কিন্তু এ ভাবে ট্রেনের সংখ্যা মাঝেমধ্যেই কমিয়ে দেওয়ার কারণ কী?

মেট্রো সূত্রের খবর, যাত্রী-সংখ্যা স্বাভাবিকের চেয়ে কম থাকার আশঙ্কা দেখা দিলেই তাঁরা ট্রেনের সংখ্যা কিছুটা কমিয়ে দেন। মূলত রেকের আকালকেই ওই সমস্যার জন্য দায়ী করেছেন তাঁরা। কলকাতা মেট্রোয় কিছু দিন আগেও ১৩টি এসি এবং ১৪টি নন এসি রেক ছিল। এসি রেকগুলির মধ্যে গড়ে ১০টি রেক পাওয়া যায়। ১৪টি নন এসি রেকের মধ্যে পাঁচটি রেকের অবস্থা খুব খারাপ। বছর দুই আগে ছ’টি নন এসি রেকের খোলনলচে বদলে মেরামত করা হয়েছে। ভিতর থেকে অনেকটা এসি রেকের মতো দেখেতে এই নন এসি রেকগুলিই আপাতত ভিড়ের চাপ সামলাচ্ছে। বাকি তিনটি নন এসি রেক মাঝেমধ্যে চললেও সেগুলির মেয়াদ অনেক আগেই ফুরিয়েছে। চেন্নাইয়ের ইন্টিগ্রাল কোচ ফ্যাক্টরি থেকে আসা পাঁচটি নতুন রেকের মধ্যে দু’টি আপাতত দিনে দু’বার করে চালানো হচ্ছে। বাকি তিনটি রেকের মধ্যে দু’টির এখনও নানা সমস্যা আছে। তা মেটানোর চেষ্টা চলছে।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

পঞ্চম রেকটি অবশ্য তুলনামূলক ভাবে উন্নত। যাত্রী পরিবহণের কাজে ওই রেকটি নামানোর চেষ্টা চলছে। এ ছাড়াও চিন থেকে আসা ডালিয়ানের রেকের পরীক্ষামূলক দৌড় চলছে। জুনের আগে ওই রেকটি যাত্রী পরিবহণের কাজে লাগানো সম্ভব হবে না। ফলে নতুন করে অন্তত পাঁচটি রেক পুরোদমে কাজে লাগানো না গেলে পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ার সম্ভাবনা কম বলে মেট্রোকর্তাদের দাবি। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে এক কর্তা বলেন, ‘‘সম্ভাব্য যাত্রী-সংখ্যার দিকে লক্ষ্য রেখেই ট্রেন কমানো হয়। গরমে বেশি ট্রেন চালাতে গেলে নন এসি রেকের সংখ্যা বাড়বে। তাতে যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্য কমবে।’’ মেট্রো কর্তাদের দাবি, অতীতে যাত্রী-সংখ্যা কম থাকা সত্ত্বেও দিনে ৩০০টি করে ট্রেন চালানো হত। এর জেরে রেকের আয়ু যেমন দ্রুত ফুরিয়েছে, তেমনই পরিকাঠামোর ক্ষয় হয়েছে।

তবে নতুন এসি রেক চালু করা গেলেও দিনের ব্যস্ত সময়ে দু’টি মেট্রোর ব্যবধান পাঁচ মিনিটে নামিয়ে আনা সম্ভব হবে কি না, তা নিয়েও সংশয় আছে। গত ডিসেম্বরে ময়দান স্টেশনে অগ্নিকাণ্ডের পরে মেট্রোর সামগ্রিক পরিকাঠামো নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। রেলওয়ে সেফটি কমিশনার ঘটনার তদন্ত করে মেট্রো কর্তৃপক্ষকে একাধিক সুপারিশ করেন। তাতে বর্তমান পরিকাঠামোর বেশ কিছু বদল ছাড়া পাঁচ মিনিট অন্তর ট্রেন চালানো সম্ভব নয় বলে জানান তিনি।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE