Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Truck Drivers

ট্রাকচালকদের মাদক ব্যবহারে শীর্ষে কলকাতা

কলকাতা, দিল্লি এবং কানপুরের ক্ষেত্রে চালকদের একটি বড় অংশ ক্লান্তি কাটানোর জন্য নিজেদের মাদক-নির্ভরতার কথা জানিয়েছেন।

সমীক্ষা করা হয়েছিল এমনই ট্রাকচালকদের নিয়ে। ছবি: সুমন বল্লভ

সমীক্ষা করা হয়েছিল এমনই ট্রাকচালকদের নিয়ে। ছবি: সুমন বল্লভ

ফিরোজ ইসলাম
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০২০ ১০:০০
Share: Save:

ট্রাক চালানোর সময়ে মাদক সেবন করা চালকদের সংখ্যার নিরিখে দেশের মধ্যে প্রথম স্থানে রয়েছে কলকাতা। এর পরেই রয়েছে দিল্লি এবং কানপুর।

ট্রাকচালকদের কাজের পরিবেশ নিয়ে সম্প্রতি দেশের ১০টি শহরে সমীক্ষা চালিয়েছিল একটি সর্বভারতীয় গাড়ি নির্মাতা সংস্থা এবং একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। দিল্লি, মুম্বই, চেন্নাই, কলকাতা, বেঙ্গালুরু, জয়পুর, আমদাবাদ, গুয়াহাটি, কানপুর এবং বিজয়ওয়াড়ার মতো ১০টি শহরের ১২০০ জন ট্রাকচালক এবং ১০০ জন পরিবহণ ব্যবসায়ীকে নিয়ে চালানো সমীক্ষায় এই তথ্য উঠে এসেছে।

কলকাতা, দিল্লি এবং কানপুরের ক্ষেত্রে চালকদের একটি বড় অংশ ক্লান্তি কাটানোর জন্য নিজেদের মাদক-নির্ভরতার কথা জানিয়েছেন। গাঁজা, ভাঙ, চরসের পাশাপাশি মেথিড্রিন শ্রেণির মাদক ব্যবহার করার প্রবণতাও রয়েছে তাঁদের মধ্যে। কলকাতায় যেখানে ৭৫ শতাংশ চালকের মাদক ব্যবহারের প্রবণতা রয়েছে, সেখানে দিল্লি এবং কানপুরের ক্ষেত্রে ওই সংখ্যা যথাক্রমে ৬২ এবং ৬৩ শতাংশ।

সমীক্ষায় প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, প্রায় সব চালককেই দিনে ১২ ঘণ্টা বা তার বেশি সময় গাড়ি চালাতে হয়। এর মধ্যে অন্তত ৬০ শতাংশ চালক ক্লান্ত হয়ে পড়লেও বিশ্রাম নেওয়ার সুযোগই পান না। ক্লান্তির ভার নিয়েই তাঁদের গাড়ি চালাতে হয়। সমীক্ষায় সামগ্রিক ভাবে পেশা নিয়ে অসন্তোষের কথা জানিয়েছেন ৫৩ শতাংশ চালক। ঘাড়, পিঠ এবং অস্থিসন্ধির ব্যথায় ভোগা ছাড়াও হজমের সমস্যার মতো অসুখ রয়েছে তাঁদের। হাড়ভাঙা পরিশ্রম করলেও ন্যূনতম ১০ হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত মাসে আয় হয়। পেশা ও কাজের পরিবেশ নিয়ে অসন্তোষের কথা সব চেয়ে বেশি জানিয়েছেন দিল্লি এবং মুম্বইয়ের ট্রাকচালকেরা। ওই দুই শহরে যথাক্রমে ৮৯ এবং ৮৫ শতাংশ চালক ট্রাক চালানোকে পেশা হিসেবে আর আকর্ষণীয় বলে মনে করেন না। তুলনায় কলকাতায় চালকদের ক্ষোভ কিছুটা কম। তবে কলকাতায় গত ১০ বছরে ৪৬ শতাংশ ট্রাকচালকের গড় আয় কমেছে।

রাস্তায় চালকদের একটি বড় অংশ নানা কারণে নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন। সময় বাঁচাতে গিয়ে চালকদের একাংশ পরিবহণ সংক্রান্ত বিভিন্ন নিয়ম ভাঙেন বলেও জানিয়েছেন। পাশাপাশি, ৪৯ শতাংশ ট্রাকচালক ধার্য করা ওজনের চেয়ে বেশি পণ্য পরিবহণ করেন বলে স্বীকার করেছেন। রাস্তায় বিভিন্ন নিয়ম ভাঙার জন্য পুলিশকে টাকা দেওয়ার কথাও স্বীকার করেছেন তাঁরা। সমীক্ষকদের দাবি, দেশে যত সংখ্যক ট্রাক চলে, তাতে ঘুষ বাবদ ৪৭ হাজার কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয় বছরে।

বিভিন্ন সড়ক দুর্ঘটনার মধ্যে ট্রাক দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা তৃতীয় সর্বোচ্চ। প্রথম দিকে রয়েছে মোটরবাইক এবং রাস্তায় চাপা পড়ার ঘটনা। প্রতি বছর ট্রাক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ২৩ হাজার মানুষের। এর মধ্যে ট্রাকচালকদের সংখ্যা প্রায় ১৫ হাজার।

ওই সমীক্ষার রিপোর্টে সড়ক পরিবহণ দফতরের প্রতিমন্ত্রী ভি কে সিংহ পরিবহণ ব্যবস্থার এই ভয়াবহতার কথা মেনে নিয়েছেন। তবে রাজ্য পরিবহণ দফতরের আধিকারিকদের একাংশের দাবি, ওই সমীক্ষা পূর্ণাঙ্গ নয়। চালকদের মধ্যে পথ নিরাপত্তা নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে প্রচার চালানোর ফলে দুর্ঘটনা কমছে বলে দাবি তাঁদের।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy