Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪

চোরাই সোনা পাচারের কেন্দ্র হয়ে উঠেছে কলকাতা

ধানত মায়ানমার ও বাংলাদেশ থেকে চোরাই পথে নিয়ে আসা সোনা ভারতে ঢুকেই চলে আসছে কলকাতায়।

ছবি রয়টার্স।

ছবি রয়টার্স।

সুনন্দ ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০১৯ ০২:৩৯
Share: Save:

সোনা পাচার নিয়ে নতুন তথ্য উঠে এল গোয়েন্দাদের হাতে।

শুক্রবার রাতে কলকাতা বিমানবন্দরে চোরাই সোনা-সহ ধরা পড়েছে এক যুবক। সে সকালের উড়ানে মুম্বই থেকে শহরে এসে রাতের উড়ানে পুণে যাচ্ছিল। কলকাতা বিমানবন্দরের কাছে একটি হোটেলে এক ব্যক্তি তার হাতে ওই চোরাই সোনা তুলে দিয়েছিল বলে তদন্তে জানা গিয়েছে।

গোয়েন্দাদের দাবি, কলকাতা এখন সোনা পাচারের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রধানত মায়ানমার ও বাংলাদেশ থেকে চোরাই পথে নিয়ে আসা সোনা ভারতে ঢুকেই চলে আসছে কলকাতায়। শহরে মজুত করা হচ্ছে প্রচুর পরিমাণ চোরাই সোনা। সম্প্রতি বড়বাজার ও সিঁথি এলাকায় হানা দিয়ে ডিরেক্টরেট অব রেভিনিউ ইন্টেলিজেন্স (ডিআরআই) প্রচুর সোনা বাজেয়াপ্ত করেছে। সেই সোনারই একটি বড় অংশ মুম্বইয়ে পাঠানোর কথা ছিল।

গোয়েন্দাদের দাবি, এক যুবক বিমানে করে সকালে মুম্বই থেকে কলকাতায় এসে আবার সোনা নিয়ে রাতের উড়ানে পুণে যাওয়ার অর্থ হল, সারা দেশে চোরাই সোনা সরবরাহ হচ্ছে কলকাতা থেকেই। এবং এই পাচারের জন্য বিমানের ভাড়া দিয়েই ক্যারিয়ারেরা যাতায়াত করছে। গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, এই রাজ্যের সঙ্গে বাংলাদেশের খোলা সীমান্ত দিয়েই ঢুকছে সোনা। কলকাতা থেকে সারা ভারতের উড়ান ও ট্রেন যোগাযোগ রয়েছে। চোরাচালানকারীরা সেই সুযোগটাকেই কাজে লাগাচ্ছে।

বিমানবন্দর সূত্রের খবর, শুক্রবার রাতে ধৃত যুবকের নাম সঞ্জু বাসিতা। ২৮ বছরের সঞ্জুর বাড়ি মহারাষ্ট্রের উল্লাসনগরে। সোনা নিয়ে মুম্বই যাওয়ার কথা ছিল তার। কিন্তু ফিরতি টিকিটের দাম বেশি হওয়ায় তুলনায় সস্তায় পুণের টিকিট কেটে সেখান থেকে সড়কপথে মুম্বই যাওয়ার কথা ছিল সঞ্জুর।

শুক্রবার রাত ৯টা ১০ মিনিটের উড়ানে পুণে যাওয়ার কথা ছিল সঞ্জুর। শুধু একটি হাতব্যাগ নিয়েই রাত আটটা নাগাদ দেহ তল্লাশির জন্য নিরাপত্তা বেষ্টনীতে পৌঁছয় সে। মেটাল ডিটেক্টর ডোর ফ্রেম পেরিয়ে যাওয়ার সময়ে তার হাবভাব দেখে সন্দেহ হয় নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সিআইএসএফ কর্মীদের। মেটাল ডিটেক্টরও বার্তা পাঠিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে।

সঞ্জুকে বেশ কিছু ক্ষণ ধরে জেরা ও তল্লাশির পরে তার পায়ুর ভিতর থেকে চারটি সোনার টুকরো পাওয়া যায়। মেটাল ডিটেক্টর বা এক্স-রেতে যাতে ধরা না পড়ে, তার জন্য সোনার টুকরোগুলি কার্বন পেপার ও কালো রঙের আঠালো টেপ দিয়ে মোড়া ছিল। সব মিলিয়ে ৮০৪ গ্রাম সোনা পাওয়া যায়, যার বাজারদর প্রায় ২৮ লক্ষ টাকা বলে জানা গিয়েছে। শহরের হোটেল থেকে সোনা পাওয়ার কথা সঞ্জুই জানায়। রাতেই তাকে শুল্ক দফতরের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

গত বৃহস্পতিবারই মুর্শিদাবাদের নিউ ফরাক্কা জংশন স্টেশনে কুন্দন শাহ এবং সোলু শর্মা নামে যে দু’জনকে ডিআরআই ধরেছিল, তাদের কাছ থেকে পাওয়া সোনাও কলকাতায় আনা হচ্ছিল। ধৃত ওই দু’জনের বাড়ি কলকাতার কার্ল মার্ক্স সরণিতে বলে গোয়েন্দারা জানিয়েছেন। শিলিগুড়ি থেকে শতাব্দী এক্সপ্রেসে করে চোরাই সোনা কলকাতায় নিয়ে আসছিল তারা। কুন্দন ও সোলুর কোমরের ভিতরে লুকনো খাপ থেকে সাত কেজিরও বেশি পরিমাণ সোনা পাওয়া যায়, যার বাজারদর প্রায় ২ কোটি ৮৪ লক্ষ টাকা বলে জানা গিয়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Smuggling Gold
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy