Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

গাড়ি-ভূতের জন্য ‘ওঝা’র ব্যবস্থা পুরসভায়

পুর প্রশাসনের এক শীর্ষ কর্তার কথায়, ‘‘বিষয়টিতে স্বচ্ছতা এলে পুরসভার খরচ এক ধাক্কায় অনেকটাই কমানো যাবে।’’

কলকাতা পুরসভা।

কলকাতা পুরসভা।

দেবাশিস ঘড়াই
শেষ আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০১৯ ০১:৩০
Share: Save:

বিভিন্ন খাতে নানা ‘অপচয়ের’ কারণে পুরসভার ভাঁড়ারে টানের কথা একাধিক বার সামনে এসেছে। এ বার গাড়ি দুর্নীতির কারণে মাসে লক্ষ লক্ষ টাকা নষ্ট হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠল। বিষয়টি জানার পরেই সেই অনিয়ম ঠেকাতে নতুন কিছু ব্যবস্থা চালু করেছেন পুর কর্তৃপক্ষ।

স্থির হয়েছে, এখন থেকে কোনও পুরকর্তার বরাদ্দ গাড়ির নবীকরণ বা বদল, যে কোনও ক্ষেত্রেই স্পেশাল পুর কমিশনারের অনুমতি নিতে হবে। তাঁর অনুমোদন ছাড়া গাড়ির নবীকরণ বা গাড়ি বদল করা যাবে না। সেই সঙ্গে কোনও কর্তা যদি অবসর নেন এবং তাঁর জন্য যদি কোনও গাড়ি বরাদ্দ থেকে থাকে, তা সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দফতরের প্রধান স্পেশাল পুর কমিশনারকে জানাবেন। নির্দিষ্ট সময়ে অবসরের ঘটনাটি জানানো না হলে সংশ্লিষ্ট দফতরের প্রধানকেই এ ক্ষেত্রে দায়ী করা হবে। পুর প্রশাসনের এক শীর্ষ কর্তার কথায়, ‘‘বিষয়টিতে স্বচ্ছতা এলে পুরসভার খরচ এক ধাক্কায় অনেকটাই কমানো যাবে।’’

পুরসভা সূত্রের খবর, পুরকর্তা, বরো চেয়ারম্যান-সহ প্রায় সাড়ে পাঁচশো গাড়ি দৈনিক ভাড়া খাটে পুরসভায়। সে জন্য মাসে প্রায় ৬০ লক্ষ টাকা খরচ হয়। পদের তারতম্যে প্রতিটি গাড়ির জন্য আলাদা আলাদা পরিমাণ তেল বরাদ্দ করা থাকে। দৈনিক ৫-১২ লিটার তেলের মধ্যে ঘোরাফেরা করে বরাদ্দের এই পরিমাণ। কিন্তু এখানেই অনেক ক্ষেত্রে কারচুপি হচ্ছে বলে অভিযোগ করছেন পুর আধিকারিকদের একাংশ। এক পুরকর্তার কথায়, ‘‘অনেক সময়ে দেখা যাচ্ছে, কেউ অবসর নেওয়ার পরেও তাঁর নামে বরাদ্দ করা গাড়িটি দিব্যি চলছে। কে চালাচ্ছেন, কে গাড়ি নিয়ে বেরোচ্ছেন, তা জানা যাচ্ছে না। এই গাড়ি-ভূতের জন্য আমাদেরই ‘ওঝা’ হতে হবে।’’

পুর আধিকারিকদের একাংশের বক্তব্য, বহু দিন ধরেই পুরকর্তাদের নামে বরাদ্দ গাড়ি নিয়ে অভিযোগ উঠছিল। কিন্তু সে সব ছিল বিচ্ছিন্ন ক্ষেত্রে। তাই এত দিন সে বিষয়ে বিশেষ কোনও হেলদোলও দেখা যায়নি কর্তৃপক্ষের। কিন্তু সম্প্রতি পুরসভার ভাঁড়ারে টানের কারণে একাধিক প্রকল্প আটকে থাকায় বিভিন্ন খাতে হিসেবের গরমিল ঠেকানোর উপরে জোর দেওয়া হয়। তখনই গাড়ির বিষয়টি আলাদা ভাবে সামনে আসে।

পুর প্রশাসনের একাংশ এ-ও জানাচ্ছে, গাড়ি দুর্নীতির পাশাপাশি জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশের চাপও এই নতুন নিয়মের পিছনে কাজ করেছে। কারণ, পরিবেশ আদালত ইতিমধ্যেই
নির্দেশ দিয়েছে যে, ১৫ বছরের
পুরনো গাড়ি বাতিল করতে হবে। ধাপে ধাপে সেই কাজ শুরুও করেছে পুরসভা। এত দিন জঞ্জাল সাফাই দফতরের গাড়ির ক্ষেত্রে এই কাজ করা হচ্ছিল। এখন পুরকর্তাদের গাড়ির ক্ষেত্রেও একই নিয়ম চালু করা হচ্ছে। পুরসভার এক শীর্ষ কর্তার কথায়, ‘‘তাই গাড়ির নবীকরণ বা বদলের ক্ষেত্রে করের শংসাপত্র, বিমার কাগজের সঙ্গে দূষণ নিয়ন্ত্রণের শংসাপত্র (পলিউশন কন্ট্রোল সার্টিফিকেট) সবই বৈধ চাওয়া হচ্ছে। তা না দিতে পারলে গাড়ি বরাদ্দ করা হবে না।’’

অন্য বিষয়গুলি:

KMC Kolkata Corporation Car Scam Scam
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy