Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Kankurgachi

Kankurgachi murder: অনুতাপ থেকেই আত্মসমর্পণের তত্ত্ব, চিকিৎসা রুখতে পারে অপরাধ?

অল্পে মেজাজ হারানো, চিৎকার করার মতো লক্ষণ দেখে চিকিৎসকের পরামর্শ নিলে এমন ঘটনা এড়ানো সম্ভব।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২২ ০৬:০৩
Share: Save:

কখনও বাড়ির অমতে বিয়ে এবং তার জেরে অশান্তিতে স্ত্রীকে খুন, আবার কখনও বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কের সন্দেহে স্ত্রীকে খুন করে থানায় আত্মসমর্পণ। কখনও আবার টানাটানির সংসারে নিত্য অশান্তির জেরে স্ত্রীকে ছুরির কোপ মেরে থানায় গিয়ে স্বামীর স্বীকারোক্তি, ‘‘বড় ভুল করে ফেলেছি।’’

মঙ্গলবার রাতে কাঁকুড়গাছিতে স্ত্রীকে খুনের দাবি করে স্বামীর থানায় আত্মসমর্পণ মনে করাচ্ছে সাম্প্রতিক কালের একাধিক ঘটনাকে। কাঁকুড়গাছি রোডের এই ঘটনার প্রাথমিক তদন্তে বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কই কারণ হিসেবে মনে করছেন তদন্তকারীদের একাংশ। অভিযোগ, তার জেরে ওই রাতে অশান্তি হলে স্ত্রীর গলায় ছুরির একের পর এক কোপ বসিয়ে দেয় উত্তম বাকুলি। এর পরে নিজে বিষ খেয়ে ফুলবাগান থানায় গিয়ে গোটা ঘটনার কথা জানায়। মহিলাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলেও বাঁচানো যায়নি। ওই হাসপাতালেই ভর্তি উত্তম।

মঙ্গলবার রাতের এই ঘটনার সঙ্গে মিল রয়েছে জুলাই, ২০২১-এ চিৎপুরের একটি ঘটনার। এক বছর আগের ওই ঘটনাতেও স্ত্রীর বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক আছে বলে সন্দেহ করত স্বামী। বছর আঠারোর ছেলের সামনে দম্পতির মধ্যে অশান্তি হত। ঘটনার দিন এ সব নিয়ে অশান্তি চালাকালীন আচমকা স্ত্রীর গলায় প্রথমে ওড়নার ফাঁস দিয়ে, পরে স্বামী তাঁর গলা টিপে ধরে বলে অভিযোগ। চিৎপুর থানায় গিয়ে সে কথা জানায়ও অভিযুক্ত।

ওই মাসেই বাগুইআটি থানা এলাকাতেও একই রকম আর একটি ঘটনা ঘটে। উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা এক তরুণীর সঙ্গে রাজস্থানের বাসিন্দা যুবকের বাড়ির অমতে বিয়ে হয়েছিল। ঘর ভাড়া নিয়ে মাস দুয়েক ধরে থাকছিলেন দম্পতি। বিয়ের পর থেকেই নানা কারণে অশান্তি লেগে থাকত। তার জেরেই স্ত্রীকে বালিশ চাপা দিয়ে মেরে থানায় এসে খুনের দাবি করে অভিযুক্ত স্বামী।

দিনকয়েক আগেও মালদহের চাঁচলে রক্তমাখা জামা গায়ে ছুরি হাতে সটান থানায় চলে যায় স্বামী। পুলিশ আধিকারিকেরা প্রথমে ওই ব্যক্তির আক্রান্ত হওয়ার কথা ভাবেন, কিন্তু সে নিজেই স্ত্রীকে মারার কথা স্বীকার করে। বছর পাঁচেক আগে অন্ডালের একটি ঘটনায় আবার স্ত্রী ও মেয়েকে খুন করে থানায় গিয়ে নিজেকে গ্রেফতার করার দাবি তোলে বছর ৪৫-এর এক ব্যক্তি। প্রাথমিক জেরায় জানা যায়, অভাবের কারণে অশান্তি হচ্ছিল। স্ত্রী বিচ্ছেদ চাওয়ায় বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কের সন্দেহ চেপে বসে অভিযুক্তের মনে। এর জেরেই সে স্ত্রী ও মেয়েকে খুন করেছিল বলে দাবি করে।

কয়েক সপ্তাহ আগে বাঁশদ্রোণী থানা আবার উল্টো ঘটনার সাক্ষী থেকেছিল। হঠাৎ থানায় এসে নিজের দাদাকে খুনের কথা জানান এক যুবক। যদিও ঘটনার তদন্তে নেমে খুনের কোনও প্রমাণ পাননি তদন্তকারীরা।

মনোরোগ চিকিৎসক সুজিত সরখেলের কথায়, ‘‘অপরাধ দু’ভাবে ঘটে— একটি পরিকল্পনামাফিক, অন্যটি রাগের বশে। দ্বিতীয় কারণে অপরাধ করলে পরে অনুতপ্ত হয়ে অনেকে থানায় গিয়ে স্বীকার করেন।’’ তাঁর কথায়, ‘‘দীর্ঘ দিন অশান্তি চললে এই ধরনের ঘটনার আগে আভাস মেলে। অল্পে মেজাজ হারানো, চিৎকার করার মতো লক্ষণ দেখে চিকিৎসকের পরামর্শ নিলে এমন ঘটনা এড়ানো সম্ভব।’’ মনোরোগ চিকিৎসক সব্যসাচী মিত্রের কথায়, ‘‘অনেকেরই ক্রোধে নিয়ন্ত্রণ থাকে না বা রাগে বড় কিছু ঘটিয়ে ফেলেন। কারও মধ্যে সামান্য কারণে রাগ, চিৎকার করার লক্ষণ দেখে চিকিৎসকের পরামর্শ নিলে সমস্যা নিয়ন্ত্রণ করা যায়।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Kankurgachi Murder Husband Attack Wife
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy