যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। —ফাইল চিত্র।
পুরো এক বছর পার হতে বাকি আর দিন দশেক। তবু দেরিতে হলেও শেষ পর্যন্ত যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে র্যাগিং-কাণ্ডে শাস্তিমূলক পদক্ষেপের খানিক চেষ্টা দেখা গেল। গত বছর ১০ অগস্টের রাতে র্যাগিংয়ের জেরে মেন হস্টেলের তেতলার বারান্দা থেকে পড়ে নবাগত এক ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় এত দিনে দোষী ছাত্রদের কারণ দর্শানোর (শো-কজ়) চিঠি দিতে শুরু করেছেন যাদবপুর কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্য ভাস্কর গুপ্ত বলেন, ‘‘শো-কজ়ের চিঠি ধরানো শুরু হয়েছে। অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতেই নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া মেনে কয়েক জনকে শো-কজ় করা হয়েছে।’’
গত মে মাসে যাদবপুরের কর্মসমিতির বৈঠকে অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটির রিপোর্টটি গৃহীত হয়। তার আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যান্টি-র্যাগিং স্কোয়াড এবং অ্যান্টি-র্যাগিং কমিটির বৈঠকেও বিষয়টি মান্যতা পায়। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে অ্যান্টি-র্যাগিং স্কোয়াড পাঁচ জন ছাত্রকে চারটি সিমেস্টারের জন্য সাসপেন্ড এবং হস্টেল থেকে সারা জীবনের জন্য বহিষ্কারের সুপারিশ করে। সেই সঙ্গে ২৫ জন ছাত্রকে একটি সিমেস্টারের জন্য সাসপেন্ড এবং হস্টেল থেকে সারা জীবনের জন্য বহিষ্কারের সুপারিশ করা হয়। ফেটসু-র প্রাক্তন চেয়ারপার্সন অরিত্র মজুমদারকে ছ’মাস সাসপেন্ড করার কথাও বলা হয়েছিল। ফেটসু-র নেতা সৈকত শিট এবং গৌরব দাসকেও সারা জীবনের মতো বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ঢুকতে না-দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ ছাড়া, বাংলা বিভাগের এক পড়ুয়া র্যাগিংয়ে জড়িত না-থাকলেও তাঁকে কিছুটা সতর্ক করতে এক মাসের জন্য সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, যাঁদের নাম উঠে এসেছে, তাঁদের মধ্যে ছ’জন এখন পুলিশি হেফাজতে রয়েছেন। সৈকত এবং গৌরব এখন প্রাক্তনী। তাই তাঁদের জন্য কারণ দর্শানোর চিঠি কার্যত নিরর্থক। তবে যাদবপুরের ডিন অব স্টুডেন্টস রজত রায় বলেন, ‘‘ছাত্রেরা হস্টেলে না-থাকলে বাড়িতে চিঠি পাঠানো যেতে পারে। বাকি ছাত্রদের সুপারের মাধ্যমে হস্টেলে চিঠি ধরানো হবে।’’
তবে, শো-কজ়ের চিঠি ধরালেও ছাত্রেরা জবাব দেওয়ার সময় পাবেন। এখনই কাউকে হস্টেল ছেড়ে যেতে হবে না। গত সপ্তাহে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের হেল্প ডেস্কেও গত বছরের র্যাগিং-কাণ্ডে অভিযুক্তদের এক জনকে দেখা গিয়েছিল বলে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন সরব হয়। মেন হস্টেলের ‘সালিশি সভা’য় সাম্প্রতিক ছাত্র-হেনস্থার ঘটনাটিতেও ক্ষোভ বাড়ছে।
এ দিন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (জুটা)-র বৈঠকে হস্টেলে সমান্তরাল প্রশাসনের দৌরাত্ম্য নিয়ে অনেকে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। ইউজিসি-র বিধি মেনে হস্টেলে সিসি ক্যামেরা বসানো নিয়েও কথা ওঠে। জনৈক শিক্ষক বলেন, ‘‘মেন হস্টেলে কিছু বেপরোয়া ছাত্রকে নিয়ে পড়ুয়ামহলে এখনও আতঙ্ক রয়েছে। প্রথম বর্ষের জন্য একটি হস্টেল খালি করার সময়ে দেখি, স্নাতকোত্তরের ছাত্রেরাও মেন হস্টেলে যেতে ভয় পাচ্ছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy