Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪
Covid Death

কোভিডে মৃতের দেহ বাড়িতে পড়ে ২১ ঘণ্টা!

পুরসভার হেল্পলাইন নম্বরে ফোন করেও কাজ হয়নি বলে অভিযোগ।

মর্মান্তিক: ২১ ঘণ্টা পরে সরানো হচ্ছে কোভিডে মৃত ছেলের দেহ। তাকিয়ে বাবা। সোমবার, বেহালায়।

মর্মান্তিক: ২১ ঘণ্টা পরে সরানো হচ্ছে কোভিডে মৃত ছেলের দেহ। তাকিয়ে বাবা। সোমবার, বেহালায়। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ মে ২০২১ ০৫:৫২
Share: Save:

করোনা রোগীর মৃত্যুর পরে দীর্ঘক্ষণ বাড়িতেই দেহ পড়ে থাকার মতো ঘটনা বার বার ঘটছে এ শহরে। এ বার বেহালার সখেরবাজার এলাকার বৈশালী পার্কের কাছে সোমবার ফের সেই একই ঘটনা ঘটল। অভিযোগ, সেখানে মৃত্যুর পরেও ২১ ঘণ্টা দেহ বাড়িতেই পড়ে ছিল। মৃতের পরিবারের দাবি, বার বার খবর দেওয়া হলেও দীর্ঘক্ষণ মৃতদেহ তুলতে আসেননি কোনও পুরকর্মী। এমনকি পুরসভার হেল্পলাইন নম্বরে ফোন করেও কাজ হয়নি বলে অভিযোগ।

পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রের খবর, বৈশালী পার্কের কাছে বৃদ্ধ বাবাকে নিয়ে থাকতেন বছর পঞ্চাশের ওই ব্যক্তি। তিনি পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। গত সপ্তাহে হার্নিয়ার অস্ত্রোপচার করাতে হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। কিন্তু অস্ত্রোপচারের আগে তাঁর কোভিড পরীক্ষা করানো হলে রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। ফলে অস্ত্রোপচার না করিয়েই তাঁকে বাড়ি পাঠানো হয়। কোভিড হাসপাতাল থেকেও তাঁকে বাড়িতে আইসোলেশনে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়।

এর পরে গত রবিবার দুপুরে ওই ব্যক্তির শারীরিক অবস্থার অবনতি থাকে। ঘরের মধ্যে তিনি পড়ে যান। সে সময়ে তাঁর বৃদ্ধ বাবার পক্ষে ছেলেকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। পরে দুপুর ৩টে নাগাদ বাড়িতেই মৃত্যু হয় ছেলের। চিকিৎসককে খবর দেওয়া হলে তিনি নিয়ম মেনে ডেথ সার্টিফিকেটও দিয়ে দেন।

এর পরে মৃতদেহ সৎকার করানোর জন্য থানায় খবর দেন মৃতের বাবা। দাবি, পুলিশ পুরসভার সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলে এবং একটি ফোন নম্বর দেয়। কিন্তু অভিযোগ, পুরসভার সেই হেল্পলাইন নম্বরে একাধিক বার ফোন করেও দীর্ঘক্ষণ যোগাযোগ করা যায়নি।

এ দিকে মৃত্যুর পরে রাতভর বাড়িতেই পড়ে ছিল দেহ। সোমবার সকালেও দেহ নিতে পুরসভার গাড়ি না আসায় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েন প্রতিবেশীরা। এর পরেই দফায় দফায় পুরসভার হেল্পলাইন নম্বরে ফোন করা হলে সোমবার বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ পুরসভার গাড়ি এসে মৃতদেহ নিয়ে যায়।

কলকাতা পুরসভার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুব্রত রায়চৌধুরী অবশ্য বলছেন, ‘‘কোভিডে মৃত্যুর খবর পুলিশের তরফে জানতে পারলে সঙ্গে সঙ্গেই অ্যাম্বুল্যান্স পাঠানো হয়। রবিবার রাত পর্যন্ত এ নিয়ে কেউ যোগাযোগ করেননি।’’ কোভিডের দায়িত্বপ্রাপ্ত পুর আধিকারিক মনিরুল ইসলাম মোল্লা বলেন, ‘‘পুলিশের থেকে খবর পাওয়ার পরেই পুরসভার তরফে গাড়ি পাঠানো হয়েছে।’’ যদিও পুলিশের দাবি, ঘটনার কথা জানার পরে সঙ্গে সঙ্গে সমস্ত তথ্য পুরসভাকে জানানো হয়েছিল। যদিও বার বার শহরের বুকে এমন ঘটনা ঘটায় এ নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন শহরবাসীর একাংশ।

অন্য বিষয়গুলি:

Covid Death
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE