কলকাতা পৌরসংস্থা। —ফাইল চিত্র।
কথায় বলে ‘আঠেরো মাসে বছর’। বিশেষ করে কলকাতা পুরসভার কোনও কাজের গতি সম্পর্কে এই কথাটি আরও বেশি খাটে বলে মনে করেন অনেকেই। কিন্তু এ বার সেই ‘দীর্ঘসূত্রতা’র অভিযোগ কাটাতে উঠেপড়ে লেগেছেন কলকাতা পুর কর্তৃপক্ষ। তাই যথাযথ কারণ ছাড়া নিজের কাছে ফাইল জমিয়ে রাখলেই সংশ্লিষ্ট পুর আধিকারিককে কর্তৃপক্ষের প্রশ্নের মুখে পড়তে হতে পারে বলে সতর্কতা জারি করেছে পুরসভা।
অনেক পুরকর্তা, আধিকারিকেরই নিজেদের কাছে ফাইল জমিয়ে রাখা বা কাজ ফেলে রাখার প্রবণতা নতুন কিছু নয়। কিন্তু জমিয়ে রাখা ফাইল, ই-ফাইলের সংখ্যা এমন একটা জায়গায় পৌঁছেছে যে, তা সম্প্রতি নজরে এসেছে পুর কর্তৃপক্ষের। পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে দেখা যাচ্ছে, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ফাইল ছাড়তে অহেতুক দেরি করছেন আধিকারিকদের একাংশ। এর ফলে সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের কাজের গতি ব্যাহত হচ্ছে বা নির্দিষ্ট সময়ে সে কাজ সম্পূর্ণ হচ্ছে না। যার দায় এসে পড়ছে কলকাতা পুর কর্তৃপক্ষের উপরে। পুরসভার দফতরগুলির অভ্যন্তরীণ রিপোর্টেও এই ফাইল জমিয়ে রাখার বাস্তবটি উঠে এসেছে।
এই পরিস্থিতি পাল্টানোর জন্যই সব দফতরে নির্দেশ পাঠানো হয়েছে, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ফাইল, ই-ফাইল ছেড়ে দেওয়ার জন্য। বলা হয়েছে, ফাইল যাওয়ার সর্বাধিক ১৫ দিনের মধ্যে ছাড়তে হবে। নিজের কাছে তা জমিয়ে রাখলে চলবে না। একাধিক ফাইল থাকলে কাজ ও গুরুত্বের অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে তা একে একে ছাড়তে হবে। কোনও ভাবেই তা ফেলে রাখা চলবে না। এক পুরকর্তার কথায়, ‘‘অর্থাৎ ফাইল নিজেদের কাছে রেখে দিয়ে ‘আজ ছাড়ব, কাল ছাড়ব’ করলে আর চলবে না। ফাইল জমা পড়া মাত্রই তা দেখে নির্দিষ্ট জায়গায় পাঠিয়ে দিতে হবে।’’ এই নিয়মের ব্যত্যয় হলে এবং সঙ্গত কারণ ছাড়া ফাইল দেরি করে ছাড়লে সংশ্লিষ্ট আধিকারিককে জবাবদিহি করতে হতে পারে বলে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন পুর কর্তৃপক্ষ। প্রয়োজনে কড়া পদক্ষেপও করা হতে পারে।
যদিও আদৌ এই নিয়ম কত দিন পালন করা হবে, তা নিয়ে সংশয়ী অনেকেই। কারণ, অতীতে দেখা গিয়েছে, ফাইল জমিয়ে না রাখা নিয়ে একাধিক বার কর্তৃপক্ষের তরফে হুঁশিয়ারি জারি করা হয়েছিল। শুরুর কিছু দিন তা মেনে ফাইলের কাজ ঠিক সময়ে সম্পূর্ণ করে ফেলতেন প্রত্যেকে। কিন্তু দিন গড়াতে না গড়াতেই ফের গয়ংগচ্ছ মনোভাব দেখা যায় আধিকারিকদের মধ্যে। একই সঙ্গে পুর কর্তৃপক্ষও উদাসীন হয়ে পড়েন পুরো বিষয়টি নিয়ে। এক পুর আধিকারিকের কথায়, ‘‘এ বারও তার ব্যতিক্রম হবে বলে মনে হয় না। তবে সত্যিই ঠিক সময়ে ফাইল ছাড়ার ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ গুরুত্ব দিয়ে থাকলে তখন পরিস্থিতির পরিবর্তন হবে। তার আগে পর্যন্ত যেমন চলছে, তেমনই কাজ চলবে পুরসভায়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy