জলযান: এ ভাবেই ডুবে গিয়েছে অর্ধেক বাস। বাঁশের সাঁকো তৈরি করে বার করে আনা হচ্ছে যাত্রীদের। শুক্রবার, পাতিপুকুর আন্ডারপাসে।— নিজস্ব চিত্র।
বিকেল থেকে শুরু হয়েছিল অঝোর বৃষ্টি। ঘণ্টা দুয়েক পরেই দেখা গেল, জমা জলে ভাসছে মহানগরের অধিকাংশ এলাকা। সন্ধের ব্যস্ত সময়ে বাড়ি ফেরার পথে নাস্তানাবুদ অসংখ্য মানুষ। এরই মধ্যে পাতিপুকুর আন্ডারপাসের এমনই অবস্থা হয় যে, সেখানে যাত্রিবোঝাই একটি বাস আটকে যায়। জল দাঁড়িয়ে যায় বাসের জানলা অবধি। শুক্রবার সন্ধের ঘটনা। স্থানীয় লোকজন বাঁশ জোগাড় করে এনে তার সাহায্যে কোনও মতে বার করে আনেন যাত্রীদের। ফলে ব়ড় অঘটনের হাত থেকে রক্ষা পান তাঁরা।
পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন সন্ধ্যায় ৩সি/১ রুটের একটি বেসরকারি বাস আন্ডারপাস দিয়ে যেতে গিয়ে আটকে যায়। যাত্রীরা দেখেন, হুহু করে বাসের ভিতরে জল ঢুকছে। এক সময়ে আন্ডারপাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত এগিয়ে বাসটি আটকে যায়। জল-আতঙ্কে যাত্রীরা চিৎকার শুরু করলে লোকজন ছুটে আসেন। কিন্তু বাসের দরজার অর্ধেকটা জলের
তলায় থাকায় যাত্রীরা বেরোতে পারছিলেন না। লোকজন বাঁশ জোগাড় করে এনে আন্ডারপাসের রেলিংয়ের উপর দিয়ে বাসের ভিতরে ঢুকিয়ে ব্রিজের মতো তৈরি করে লোকজনকে বার করে আনেন।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, পাতিপুকুর আন্ডারপাসে একটু বৃষ্টি হলেই জল জমে যায়। এ দিন ওই বাসের চালক জলের গভীরতা আঁচ করতে পারেননি বলেই বাস নিয়ে এগিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, ওই আন্ডারপাসে এত জল জমছে কী করে? কেনই বা এত সময় লাগে জল বার করতে? তারকেন্দু চক্রবর্তী নামে বাসে আটকা পড়া এক যাত্রী বলেন, ‘‘এক সময়ে মনে হচ্ছিল, বাসের ভিতরেই জলে ডুবে মরে যাব।’’
আরও পড়ুন: বন্ধ ঘরে মা-ছেলের দগ্ধ দেহ, রহস্য
দক্ষিণ দমদম পুর প্রশাসনের একাংশের বক্তব্য, আন্ডারপাস তৈরি করেছে ‘কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি’ (কেএমডিএ)। জল জমলে কেএমডিএ-র ইঞ্জিনিয়ারদেরই খবর দেওয়া হয়। তাঁরা পাম্পের মাধ্যমে জল বার করার চেষ্টা করেন। জল ফেলা হয় বাগজোলা খালে। পুরসভার চেয়ারম্যানের দাবি, এ দিন বিকেল থেকে অতিবৃষ্টি হয়েছে। এমনিতেই আশপাশের খালগুলি জলে টইটম্বুর। সেই জল ব্যাক-ফ্লো করছে। ফলে আন্ডারপাসে পাম্প চালালেও জল সরতে কিছুটা সময় লাগবে। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, এ দিন সন্ধ্যায় ৯৩-১০৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।
অন্য দিকে, কলকাতা পুরসভা সূত্রের খবর, বৃষ্টিতে সব চেয়ে খারাপ অবস্থা হয় দক্ষিণ কলকাতা-সহ লাগোয়া এলাকার। মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় জানান, এ দিন বেলেঘাটা এলাকার পামারবাজার পাম্পিং স্টেশনে বৃষ্টির পরিমাণ ছিল ৯০ মিলিমিটার। বেহালায় প্রায় ১০৪ মিলিমিটার। ঘণ্টা দেড়েকের বৃষ্টিতেই জলমগ্ন হয়ে যায় গড়িয়াহাট, রাসবিহারী, টালিগঞ্জ, বেহালার বিভিন্ন রাস্তা, পার্ক স্ট্রিট, শেক্সপিয়র সরণি, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ, আমহার্স্ট স্ট্রিট, খিদিরপুর, ওয়াটগঞ্জ-সহ বহু এলাকা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy