বিক্রম চট্টোপাধ্যায়
ধারা বদলের ২৪ ঘণ্টা পরেও তদন্তে কোনও অগ্রগতি হল না। গ্রেফতার তো দূর অস্ত্, বুধবার বিক্রম চট্টোপাধ্যায়ের খোঁজও নেওয়া হয়নি বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
এই ঘটনায় জামিন অযোগ্য ধারা যুক্ত হওয়ার পরেও পুলিশ কেন চুপ, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এর আগেও অভিযুক্ত অভিনেতার রক্ত পরীক্ষার জন্য পাঠাতে দেরি হওয়ায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। অভিযোগ ছিল, ঘটনার ন’দিন পেরিয়ে যাওয়ার পরে অভিযুক্তের রক্ত গিয়েছিল পরীক্ষার জন্য। লালবাজারের একটি অংশের অবশ্য দাবি, ধারা বদলানোর পরে মডেল সোনিকা সিংহ চৌহানের মৃত্যুর ঘটনায় অভিনেতা বিক্রমেকে গ্রেফতার করার ব্যাপারে সব দিক দেখে নিয়ে এগোতে চায় পুলিশ। কোনও তাড়াহুড়ো করতে চাইছে না পুলিশ।
মঙ্গলবারই মৃত মডেলের বন্ধু ও গাড়ির চালক অভিনেতা বিক্রমের বেসামাল-বেপরোয়া আচরণকে দায়ী করে আদালতে তাঁর বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত ভাবে মৃত্যু ঘটানোর ধারা যুক্ত করেন তদন্তকারীরা। ওই নতুন ধারা যুক্ত হওয়ার ফলে এখন বিক্রমকে গ্রেফতারে কোনও বাধা নেই পুলিশের। কিন্তু পুলিশের একাংশের দাবি, মডেলের মৃত্যুর ঘটনায় তদন্তকারীরা ধীরে চলতে চান। বিক্রমকে গ্রেফতারের আগে সব দিক খতিয়ে দেখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তাঁদের। পুলিশের ওই অংশের দাবি, আসলে তদন্তে সময় নিতে চাইছেন দায়িত্বপ্রাপ্তেরা। যাতে বিক্রম আদালত থেকে জামিন নিতে পারেন। গোয়েন্দারা অবশ্য এ কথা মানতে রাজি নন। তাঁদের বক্তব্য, বিক্রমের বিরুদ্ধে ওই ধারা প্রয়োগের একাধিক প্রমাণ আছে। মত্ত অবস্থায় বেসামাল-বেপরোয়া আচরণের জন্য ওই ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি গোয়েন্দাদের।
আরও পড়ুন: সোনিকার মৃত্যুর পিছনে বিক্রমের বেসামাল ও বেপরোয়া আচরণই দায়ী
বিক্রমের আইনজীবী অনির্বাণ গুহঠাকুরতা অবশ্য জানান, ঘটনার পরেই বিক্রমের বিরুদ্ধে পুলিশ জামিনযোগ্য ধারায় মামলা করেছিল। তার প্রেক্ষিতে আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন নেন বিক্রম। ফলে তাঁকে গ্রেফতার করতে হলে আদালতের অনুমতি দরকার। যার আবেদন পুলিশ বুধবার পর্যন্ত করেনি বলেই সূত্রের খবর। সোনিকার পরিবারের তরফে ওই ধারা বদলকে স্বাগত জানানোর পাশাপাশি বিক্রমকে জেরা করে সত্য উদ্ঘাটনের আবেদনও করা হয়েছে পুলিশের কাছে। লালবাজারের এক কর্তার দাবি, দুর্ঘটনায় গায়ক কালীকাপ্রসাদের মৃত্যুতে অনিচ্ছাকৃত ভাবে মৃত্যু ঘটানোর মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছিল গাড়িচালককে। পরে হাইকোর্ট ওই ধারা যুক্ত করা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। এ ক্ষেত্রে যাতে তা না হয়, তাই সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
পুলিশ জানায়, ফরেন্সিক রিপোর্ট বিক্রমের গাড়ির যান্ত্রিক ত্রুটির সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছে। বেপরোয়া গতিতেই দুর্ঘটনা বলে দাবি বিশেষজ্ঞদের। অন্য দিকে, বুধবার বিক্রমের রক্ত পরীক্ষার রিপোর্ট এসেছে লালবাজারে। সঙ্গে এসেছে সোনিকার পোশাক পরীক্ষার রিপোর্টও। সব রিপোর্ট আদালতের কাছে জমা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy