উদ্বাস্তুদের আমেরিকায় ঢুকতে বাধা দিচ্ছে মার্কিন পুলিশ। —এএফপির তোলা ফাইল ছবি
গৃহযুদ্ধ, প্রাকৃতিক বিপর্যয়, রাজনৈতিক অস্থিরতা-সহ নানা কারণে দেশে দেশে অসংখ্য মানুষ ঘরছাড়া হয়ে প্রাণ বাঁচাতে অন্য দেশে আশ্রয়ের খোঁজে ছুটে যাচ্ছেন। মায়ানমার থেকে রোহিঙ্গা, সিরিয়া, ইয়েমেন-সহ মধ্যপ্রাচ্যের বহু দেশের মানুষ, গৃহযুদ্ধ ও দুর্ভিক্ষপীড়িত আফ্রিকার বহু দেশের মানুষ এভাবেই এখন শরণার্থী হয়ে ছুটে বেড়াচ্ছেন। বহু দেশই এদের আশ্রয় দিতে নারাজ। দিলেও শরণার্থীদের রাখা হচ্ছে অস্থায়ী শিবিরে, সাধারণ মানুষের প্রাপ্য ন্যূনতম আইনি অধিকারও তারা পাচ্ছেন না। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তো মেক্সিকো থেকে আসা শরণার্থীদের ঠেকাতে সীমান্তে সেনাবাহিনী পাঠিয়ে বসে আছেন। আমেরিকার দেখাদেখি ইউরোপের অনেক দেশই শরণার্থীদের জন্য সীমান্ত খুলতে নারাজ।
বিশ্বজুড়ে শরণার্থী ও আশ্রয়প্রার্থীদের এই বেনজির সঙ্কটের মোকাবিলায় রাষ্ট্রপুঞ্জের সদস্য দেশগুলি শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়ে আলোচনায় বসে। ঠিক হয়, চলতি বছরের ডিসেম্বরে রাষ্ট্রপুঞ্জ শরণার্থীদের আশ্রয়, জীবিকা ও নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে চূড়ান্ত বোঝাপড়া সেরে ফেলে একটি ঘোষণাপত্র প্রকাশ করবে। কিন্তু সত্যিই কি তাতে পশ্চিমী দুনিয়ার ধনী দেশগুলি সায় দেবে?
শরণার্থীদের কেন্দ্র করে এই বিশ্বজোড়া সঙ্কটের প্রেক্ষাপটে কলকাতা রিসার্চ গ্রুপের উদ্যোগে আয়োজিত আন্তর্জাতিক সম্মেলনের প্রথম দিন থেকেই এই আশঙ্কার সুর অংশগ্রহণকারী বক্তাদের কথায়। দক্ষিণ আফ্রিকার বিশিষ্ট মানবাধিকার বিশেষজ্ঞ লরেন্স জুমা, কলকাতার নামী সমাজবিজ্ঞানী রনবীর সমাদ্দার থেকে শুরু করে নেপালের বুধা সিংহ কেপাছাকি-সহ অনেকের কথাতেই সংশয় স্পষ্ট, রাষ্ট্রপুঞ্জ কি পারবে আমেরিকা ও ইউরোপের ধনী দেশগুলিকে রাজি করাতে?
আরও পড়ুন: বাতাস ‘অস্বাস্থ্যকর’! দূষণে দিল্লির সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছে কলকাতা
ক্যালকাটা রিসার্চ গ্রুপের উদ্যোগে পাঁচদিন ধরে কলকাতায় যে আন্তর্জাতিক সম্মেলন শুরু হয়েছে, সেখানে শরণার্থীদের সমস্যা ও তা নিরসনের উপায় খুঁজতে বহু দেশের বিশেষজ্ঞ সমাজবিজ্ঞানী, মানবাধিকার কর্মী ও গবেষক জড়ো হয়েছেন। রয়েছেন ইজরায়েল থেকে ডেভিড নিউম্যান, প্যালেস্তাইন থেকে লুসি নুসিবিয়ে, কানাডা থেকে জেনিফার হাইন্ডম্যান ও উইলিয়াম ওয়ালটার্স, বাংলাদেশ থেকে মেঘনা গুহঠাকুরতা, আমেরিকার মাটান কামিনের, সিঙ্গাপুরের ইতি আব্রাহামরা। ব্রাজিল, পর্তুগাল, শ্রীলঙ্কা, সার্বিয়ার গবেষকরা এসেছেন তাঁদের গবেষণালব্ধ তথ্য ভাগ করে নিতে। কলকাতা তথা ভারতেরও বহু সমাজ ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানী রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে সব্যসাচী বসুরায়চৌধুরী, পলা ব্যানার্জি, ইলিনা সেন প্রমুখ।
আরও পড়ুন: বিজেপির অন্দরেই কি কোন্দল? রাম মন্দিরের সত্ত্ব নেওয়া নেই বিজেপির!জল্পনা উস্কে বললেন উমা
এত বড় এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজক ক্যালকাটা রিসার্চ গ্রুপ হলেও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে জার্মানির রোজা লুক্সেমবুর্গ স্টিফটুং, যাদবপুর ও রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় এবং ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট ইউনিভার্সিটি।পাঁচদিনের অধিবেশনের শেষদিন ৩০ নভেম্বর সম্মেলনের তরফে একটি ঘোষণাপত্র প্রকাশ করা হবে, যা পরে রাষ্ট্রপুঞ্জ ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠনের কাছে পাঠানো হবে।
(কলকাতার রাজনীতি, কলকাতার আড্ডা, কলকাতার ময়দান, কলকাতার ফুটপাথ -কলকাতার সব খবর জানতে পড়ুন আমাদের কলকাতা বিভাগ।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy