বেআইনি: বাণিজ্যিক নম্বর প্লেট ছাড়াই চলছে স্কুলগাড়ি। নিজস্ব চিত্র
হুগলির পোলবায় স্কুলগাড়ি দুর্ঘটনার পরে টনক নড়েছে হাওড়া সিটি পুলিশের। এ বার তাই স্কুলগাড়ির চালক ও মালিকদের সচেতনতার পাঠ দেবে তারা। সেই সঙ্গে অভিভাবক ও বিভিন্ন স্কুল কর্তৃপক্ষকেও জানানো হবে, পড়ুয়াদের নিরাপত্তার জন্য কী কী করা উচিত এবং কী কী করা উচিত নয়। স্কুলগাড়ি নিয়ে একটি অডিয়ো-ভিসুয়াল উপস্থাপনার ব্যবস্থাও করছে পুলিশ। সচেতনতার পাঠ দিতে খুব শীঘ্রই ওই কর্মশালা করবে পুলিশ।
সাম্প্রতিক কালে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় একের পর এক স্কুলগাড়ি দুর্ঘটনা ঘটলেও সকলকে নাড়িয়ে দিয়েছে হুগলির পোলবার ঘটনাটি। সেই সূত্রেই প্রশ্ন উঠেছে, স্কুলগাড়িগুলি কি আদৌ পরিবহণ দফতরের নিয়ম মেনে চলে? ওই ঘটনার পরেই ফের নতুন করে সামনে এসেছে স্কুলগাড়ি চালকদের স্পিড গভর্নর খুলে রাখা এবং পুরনো যন্ত্রাংশ ও রিসোল টায়ার ব্যবহার করার কথা। হাওড়াতেও পরিস্থিতি একই রকম। কয়েক সপ্তাহ আগে টিকিয়াপাড়ার কাছে ইস্ট-ওয়েস্ট বাইপাসে একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের বাসের সঙ্গে উল্টো দিক থেকে আসা বেসরকারি বাসের মুখোমুখি ধাক্কায় ছ’জনের চোট লাগে। জখমদের তিন জনই ওই স্কুলের পড়ুয়া। ওই দুর্ঘটনার পরেও স্কুলবাস চালকের দিকে আঙুল তুলেছিল পুলিশ। প্রশ্ন ওঠে, বাসের গতি নিয়ে।
এর মধ্যে হুগলির দুর্ঘটনা ঘটে যাওয়ায় নড়ে বসে পুলিশ। ঠিক হয়, পুলকারে যাতায়াত করা পড়ুয়াদের নিরাপত্তার জন্য গাড়ির চালক, মালিক, অভিভাবক ও স্কুল কর্তৃপক্ষ— সকলকেই অডিয়ো-ভিসুয়াল উপস্থাপনার মাধ্যমে এই সচেতনতার পাঠ দেওয়া হবে। হাওড়া সিটি পুলিশের এসিপি অশোক চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘হাওড়ায় প্রচুর স্কুলগাড়ি চলে। পড়ুয়াদের নিরাপত্তার কথা ভেবে আমরা সামগ্রিক ভাবে একটা বৈঠক করব, যেখানে সমস্ত রকম সচেতনতার পাঠ অডিয়ো-ভিসুয়াল উপস্থাপনার মাধ্যমে দেখানো হবে।’’ পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দাশনগর ট্র্যাফিক গার্ডের কাছে এই কর্মশালার আয়োজন করা হবে। সেখানে কত জন অংশ নিতে পারেন, সে সম্পর্কে একটা ধারণা পেয়ে গেলেই কর্মশালার দিনক্ষণ ঠিক করবে পুলিশ।
কী থাকবে ওই উপস্থাপনায়?
পুলিশ সূত্রের খবর, প্রাথমিক ভাবে তিনটি বিষয়ে জোর দেওয়া হচ্ছে। যেমন, চালকদের কী ভাবে চলতে হবে, তার পুঙ্খানুপুঙ্খ পাঠ দেবে পুলিশ। পাশাপাশি, গাড়ির মালিকদেরও বোঝানো হবে তাঁদের দায়িত্বের কথা। পুলকারগুলি অধিকাংশই ব্যক্তি মালিকানাধীন। তাই অভিভাবকদের নজর রাখতে হবে সেই গাড়ির উপরে। কোনও গন্ডগোল দেখতে পেলেই মালিককে জানাতে হবে। পাশাপাশি, অভিভাবকদের সচেতন করা হবে, স্কুলে যাওয়ার সময়ে তাঁর সন্তানের দেরির জন্য অন্য পড়ুয়াদের যেন দেরি না হয়ে যায়। তা হলে চালকের আর দ্রুত গাড়ি চালানোর প্রবণতা থাকবে না। স্কুলগাড়ির বিষয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষের পরোক্ষে হলেও কিছুটা দায়িত্ব রয়েছে। সেগুলিও বোঝানো হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy