সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মেট্রোর আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকে নিজেদের বিভিন্ন অভিযোগ জানাচ্ছেন দুর্গা পিতুরি লেনের ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দারা। রবিবার। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে বিপজ্জনক বাড়ির স্বাস্থ্য নিয়ে সমীক্ষা শুরুর আগেই বৌবাজারে আরও দু’টি বাড়ির বিপজ্জনক অংশ আপৎকালীন ভিত্তিতে ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নিলেন মেট্রো-কর্তৃপক্ষ। সোমবার বাসিন্দাদের সম্মতিসাপেক্ষে দুর্গা পিতুরি লেনের ১৬ এবং ১৬এ নম্বরের বাড়ির বিপজ্জনক অংশ ভাঙার কাজ শুরু হবে বলে মেট্রো সূত্রের খবর। মেট্রো-কর্তারা জানান, পরে প্রয়োজন হলে পুরো বাড়িই ভাঙা হতে পারে। বাসিন্দাদের সঙ্গে আরও নিবিড় সমন্বয়ের স্বার্থে একটি আলাদা সেল গড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মেট্রো।
ঠিক হয়েছে, বাড়ি ভাঙার আগে বাসিন্দাদের বিভিন্ন সামগ্রী পরিবারের এক জন সদস্যের উপস্থিতিতে মেট্রো প্রকল্পের কাজের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদার সংস্থার পক্ষ থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। বাগবাজারে একটি গুদামে বাসিন্দাদের নামে জায়গা বরাদ্দ করে বাড়ির আসবাবপত্র-সহ বিভিন্ন সামগ্রী মজুত রাখা হবে সেখানে। পুরো প্রক্রিয়াটির ভিডিয়ো ফোটোগ্রাফি করে রাখার বন্দোবস্ত হচ্ছে। মেট্রো-কর্তৃপক্ষের তরফে রবিবার জানানো হয়েছে, ভেঙে ফেলা বাড়ির পুনর্নির্মাণ মিটলে ওই সব জিনিস আগের জায়গায় ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হবে।
দুর্গা পিতুরি লেনের বিপজ্জনক এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে এ দিন বৈঠক করেন কলকাতা মেট্রো রেল কর্পোরেশন লিমিটেড বা কেএমআরসিএল কর্তৃপক্ষ। বৈঠক হয় তৃণমূলের স্থানীয় সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, বিধায়ক নয়না বন্দ্যোপাধ্যায়, কাউন্সিলর বিশ্বরূপ দে এবং কেএমআরসিএলের ম্যানেজিং ডিরেক্টরের উপস্থিতিতে। বৈঠকে উপস্থিত স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে সাম্প্রতিক ফাটলের জেরে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িগুলির বাসিন্দারা যেমন ছিলেন, তেমনই ছিলেন ২০১৯ সালে সুড়ঙ্গ বিপর্যয়ের জেরে গৃহহীনেরাও। স্থানীয় বাসিন্দা সোনালি শীল, রিকি গুপ্ত, অভিজিৎ মতিলালেরা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
২০১৯ সাল থেকে বাড়িছাড়া সোনালিদেবী বলেন, ‘‘তিন বছর কেটে গেলেও বাড়ির ব্যবস্থা হয়নি। এ বার লিখিত প্রতিশ্রুতি দেওয়া হোক।’’ রিকি গুপ্তের অভিযোগ, মেট্রো-কর্তৃপক্ষ ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে সমন্বয় রাখেন না। একটি কোর গ্রুপ তৈরি করার দাবি জানান তিনি। অভিজিৎ মতিলালের দাবি, প্রকল্প এলাকার মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িগুলির স্বাস্থ্য পরীক্ষার রিপোর্ট বাসিন্দাদের জানানো হোক। কেএমআরসিএলের এমডি চন্দ্রেশ্বর নাথ ঝা জানান, বাসিন্দাদের হয়রানির জন্য তাঁরা দুঃখিত। আগের তুলনায় অনেক বেশি সতর্কতা নেওয়া সত্ত্বেও এই বিপত্তি আকস্মিক। তিনি বলেন, ‘‘পুরনো ভেঙে পড়া বাড়ি তৈরির কাজ আমরা খুব তাড়াতাড়ি শুরু করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আকস্মিক বিপত্তি সেই কাজ পিছিয়ে দিল। সামগ্রিক প্রকল্পে ভবিষ্যতে কোনও ধরনের সমস্যার আশঙ্কা আছে কি না, সেটা আইআইটি রুরকির বিশেষজ্ঞেরা খতিয়ে দেখবেন।"
প্রস্তাবিত সমন্বয় সেলের মাধ্যমে মেট্রো আধিকারিকেরা বাসিন্দাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখবেন বলে জানানো হয়েছে। স্থানীয় কাউন্সিলর বিশ্বরূপ দে এ দিন বলেন, ‘‘কোন বাড়ি ভাঙা হবে, কী ভাবে কাজ হবে, কখন হবে ইত্যাদি বিষয়ে মানুষ ঠিকঠাক তথ্য পাচ্ছেন না। তাই উৎকণ্ঠা বাড়ছে।’’ সাংসদ সুদীপবাবু বলেন, ‘‘উভয় পক্ষ পরস্পরের অভিযোগ ও সমস্যার কথা শুনেছেন। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞদের রিপোর্ট পেলে বাসিন্দারা কবে ফিরতে পারবেন, জানা যাবে। কয়েক সপ্তাহ পরে আবার বৈঠক হবে।’’ মেট্রোর পক্ষ থেকে বাসিন্দাদের ক্ষোভ নিরসনে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা ও সমস্যার সমাধানে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy