Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Higher Secondary

Higher Secondary: দুই বোর্ডের সঙ্গে ‘লড়াই’ উচ্চ মাধ্যমিক উত্তীর্ণদের

পরিসংখ্যান বলছে, এ বার উচ্চ মাধ্যমিকে ‘ও’ গ্রেড অর্থাৎ ৯০-১০০ শতাংশ নম্বর পেয়েছে ৯০১৩ জন। গত বছরের উচ্চ মাধ্যমিকে সেই সংখ্যা ছিল ৩০,২২০।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২১ ০৬:০৫
Share: Save:

দুই বোর্ডের পরীক্ষায় একেবারে বিপরীত চিত্র। এক দিকে আইএসসি-তে ৯০ শতাংশ এবং তার বেশি নম্বরের ছড়াছড়ি। অন্য দিকে, উচ্চ মাধ্যমিকে ৯০ শতাংশ এবং তার বেশি নম্বর পাওয়া পরীক্ষার্থীর সংখ্যা গত বছরের থেকেও গিয়েছে কমে। এই পরিস্থিতিতে কলেজে ভর্তি হতে গিয়ে তারা প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়বে কি না, সেই আশঙ্কায় এখন ভুগছে রাজ্যের উচ্চ মাধ্যমিক পড়ুয়াদের একটা বড় অংশ।

পরিসংখ্যান বলছে, এ বার উচ্চ মাধ্যমিকে ‘ও’ গ্রেড অর্থাৎ ৯০-১০০ শতাংশ নম্বর পেয়েছে ৯০১৩ জন। গত বছরের উচ্চ মাধ্যমিকে সেই সংখ্যা ছিল ৩০,২২০। অন্য দিকে, চলতি বছরের উচ্চ মাধ্যমিকে ‘এ প্লাস’ অর্থাৎ ৮০-৮৯ শতাংশ নম্বর পেয়েছে ৪৯,৩৭০ জন। গত বছর যা ছিল ৮৪,৭৪৬। যা থেকে স্পষ্ট, ‘ও’ এবং ‘এ প্লাস’— দু’রকম গ্রেড পাওয়া পরীক্ষার্থীই অনেক কমে গিয়েছে চলতি বছরে।

ঠিক এর উল্টো ছবি আইএসসি-তে। বাতিল হওয়া ওই পরীক্ষায় ৯০ শতাংশের বেশি নম্বর পাওয়া পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ভূরি ভূরি। রামমোহন মিশন হাইস্কুলের প্রিন্সিপাল সুজয় বিশ্বাস বলেন, ‘‘পরীক্ষা না হলেও আইএসসি এবং আইসিএসই-র মূল্যায়ন খুবই বিজ্ঞানসম্মত ভাবে হয়েছে। বহু স্কুলের একাধিক পড়ুয়া ৯০ শতাংশ তো বটেই, অনেকে ৯৫ শতাংশের বেশিও পেয়েছে।’’ মডার্ন হাইস্কুল ফর গার্লসের ডিরেক্টর দেবী কর বলেন, ‘‘আইএসসি-তে আমাদের স্কুলে ছাত্রীদের গড় নম্বর ৯৩ শতাংশের একটু বেশি।’’ সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজিয়েট স্কুলেও আইএসসি-তে গড় নম্বর খুব ভাল হয়েছে বলে স্কুল সূত্রের খবর।

অন্য দিকে শহরের বেশ কিছু নামী সরকারি স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা জানাচ্ছেন, তাঁদের স্কুলের ফল অন্য বারের তুলনায় খারাপই হয়েছে। বিশেষত, ৯০ থেকে ১০০ শতাংশ পাওয়া পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কম। এই তালিকায় রয়েছে হেয়ার স্কুলও। সেখানকার এক শিক্ষক বলেন, ‘‘আমাদের স্কুল বরাবর উচ্চ মাধ্যমিকে ভাল ফল করে। সেখানে এ বার ৯০-১০০ শতাংশ পাওয়া পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কম। তারা কলেজে ভর্তির ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়বে কি না, সেই আশঙ্কা থাকছেই।’’ বেথুন কলেজিয়েট স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা শাশ্বতী অধিকারী বলেন, “পছন্দের বিষয় নিয়ে কলেজে ভর্তি হতে অসুবিধা তো হবেই। এমনকি কয়েক জন অভিভাবক আমাকে জিজ্ঞাসাও করেছেন, রিভিউ করে কি নম্বর বাড়িয়ে দেওয়া যায় না?” শিয়ালদহের টাকি বয়েজের প্রধান শিক্ষিকা স্বাগতা বসাক বলেন, “এই ফলাফলে কলেজে ভর্তির ক্ষেত্রে রাজ্যের পড়ুয়ারা অসুবিধায় পড়তে পারে। আমাদের স্কুলেরই বেশ কিছু ছাত্র আমাকে জিজ্ঞাসা করেছে, এই নম্বরে তারা কী ভাবে ভাল কলেজে ভর্তি হবে?”

স্বভাবতই প্রশ্ন উঠেছে, এই রাজ্যের উচ্চ মাধ্যমিক পাশ মেধাবী পড়ুয়ারা কি নিজেদের পছন্দের বিষয় নিয়ে কলেজে ভর্তি হতে পারবে? সেই সঙ্গে শিক্ষকদের একাংশ মনে করছেন, দ্বাদশ শ্রেণির বোর্ডের পরীক্ষা পাশ করে অনেকেই অন্য রাজ্যে উচ্চশিক্ষার জন্য যায়। কিন্তু এ বার করোনা পরিস্থিতিতে তেমন পড়ুয়ার সংখ্যা কমতে পারে। যার জন্য আরও বাড়বে ভর্তির প্রতিযোগিতা। যদিও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভানেত্রী মহুয়া দাস বলেন, “নির্দিষ্ট নীতি মেনেই মূল্যায়ন করা হয়েছে। পরীক্ষার্থীদের একাদশ শ্রেণিতে প্রাপ্ত নম্বর এবং মাধ্যমিকের নম্বরের ভিত্তিতে মূল্যায়ন হয়েছে। স্কুলগুলিই সেই নম্বর পাঠিয়েছে। আমরা তার ভিত্তিতে মূল্যায়ন করেছি।”

তবে প্রতিযোগিতা যে বাড়বে, তা ভালই বুঝতে পারছে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ পরীক্ষার্থীরা। এমনই এক পড়ুয়া পার্থজিৎ সিংহ বলে, ‘‘ভেবেছিলাম, এখানে পছন্দ মতো বিষয়ে পড়ার সুযোগ না পেলে অন্য রাজ্যে যাব। কিন্তু, করোনার জন্য বাড়ি থেকে ছাড়বে না। এ দিকে শুধু আইএসসি নয়, আমাদের লড়তে হবে সিবিএসই-র দ্বাদশ পাশ পড়ুয়াদের সঙ্গেও। তাদের এখনও ফল বেরোয়নি। সব মিলিয়ে প্রতিযোগিতা যে ভালই হবে, তা নিয়ে সংশয় নেই। তবে যতই কঠিন লড়াই হোক, পছন্দের কলেজে পছন্দের বিষয় নিয়ে ভর্তির মরিয়া চেষ্টা তো করতেই হবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

College admission Higher Secondary
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy