লেক মল লিজ দেওয়া নিয়ে জনস্বার্থে দায়ের করা মামলায় সব পক্ষকে হলফনামা দাখিল করতে নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। শুক্রবার হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুর ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চে মামলাটি শুনানির জন্য ওঠে। ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছে, কলকাতা পুরসভা, পুরসভার চিফ ম্যানেজার (লিগ্যাল অফিসার), রাজ্য সরকার, বেঙ্কটেশ ফাউন্ডেশন লিমিটেড (যে সংস্থা লেক মল লিজ নিয়েছে) এবং মামলার আবেদনকারীদের বক্তব্য হলফনামা আকারে পেশ করতে। আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে ওই হলফনামা দিতে হবে।
কলকাতা পুরসভার নথি অনুসারে, লেক মল নিয়ে পুর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বড়বাজারের অরুণ প্লাস্টিক প্রাইভেট লিমিটেড নামে এক সংস্থার (যা পরে বেঙ্কটেশ ফাউন্ডেশন নামে পরিচিত হয়) চুক্তি হয়েছিল ৬০ বছরের। সরকারি আইন অনুসারে, লিজ চুক্তি ৩০ বছরের বেশি হলে লিজ রেজিস্ট্রেশন করাতে জায়গার বাজার দর (মার্কেট ভ্যালু) ধরে মোট জায়গার দামের উপরে ৭ শতাংশ হারে স্ট্যাম্প ডিউটি দিতে হয়। এখানে যার পরিমাণ প্রায় ২৪ কোটি। কিন্তু ৩০ বছর বা তার কম সময়ের চুক্তি হলে লিজ ভাড়ার হিসেবে স্ট্যাম্প ডিউটি লাগে। এ ক্ষেত্রে যা প্রায় ৭ লক্ষ। অভিযোগ, বেঙ্কটেশ সংস্থাকে ‘সুবিধা’ দিতে পুরসভা ৬০ বছরের চুক্তিকে ৩০ বছর করে দু’ভাগে ভাগ করেছে। যার অর্থ, প্রায় ২৪ কোটি টাকা স্ট্যাম্প ডিউটি না দেওয়ার রাস্তা বেঙ্কটেশ সংস্থাকে করে দিয়েছে পুরসভা। বদলে ওই সংস্থাকে স্ট্যাম্প ডিউটি দিতে হয়েছে মাত্র ৯ লক্ষ টাকা।
গত ১১ ফেব্রুয়ারি লেক মল নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থে মামলা দায়ের করেন দ্বৈপায়ন সেনগুপ্ত-সহ তিন আইনজীবী। তাঁদের অন্যতম আইনজীবী পুষ্পল চক্রবর্তী শুক্রবার জানান, মামলার আবেদনে বলা হয়েছে, বেঙ্কটেশ ফাউন্ডেশন প্রাইভেট লিমিটেডের মালিক শ্রীকান্ত মোহতাকে যে ভাবে লিজ চুক্তি দু’ভাগে ভেঙে দেওয়া হয়েছে, তা বেআইনি। অবিলম্বে ওই লিজ প্রত্যাহার বা বাতিল করার আবেদনও জানানো হয়েছে।
এ দিন মামলার আবেদনকারীদের আইনজীবীরা প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে অভিযোগ করেন, পুর-কর্তৃপক্ষ কোনও দরপত্র না ডেকেই ওই সংস্থাকে লিজ দিয়েছেন। বিনা দরপত্রে লিজ দেওয়ায় অন্য কোনও সংস্থা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ পায়নি। ফলে বাড়তি সুবিধা পেয়েছে বেঙ্কটেশ সংস্থাই। সেই কাজও বেআইনি। যদিও পুর কর্তৃপক্ষের আইনজীবী এ দিন দাবি করেন, দরপত্র ডেকেই লেক মল লিজ দেওয়া হয়েছে। মামলার আবেদনকারীদের আইনজীবীরা আরও জানান, কেন এ ভাবে দু’দফায় লিজ দেওয়া হল, তার তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই অবশ্য প্রথম ৩০ বছরের জন্য বেঙ্কটেশ ফাউন্ডেশনের সঙ্গে পুরসভার লিজ চুক্তি রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হয়েছে। তার জন্য ওই সংস্থাকে স্ট্যাম্প ডিউটি দিতে হয়েছে মাত্র ৯ লক্ষ টাকা। মামলার আবেদনকারীদের দাবি, এ ভাবে লিজ দিয়ে রাজ্য সরকারের যে আর্থিক ক্ষতি হয়েছে, তা মেটাতে হবে ওই সংস্থাকেই। অন্যথায় পুর-কর্তৃপক্ষকে নতুন করে দরপত্র ডেকে লিজ দিতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy