Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪

যথেচ্ছ প্লেটলেট ব্যবহার, সতর্ক করল স্বাস্থ্য ভবন

ওই নির্দেশিকায় লেখা হয়েছে, ‘প্লেটলেট ট্রান্সফিউশন নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের যে নির্দেশিকা রয়েছে, তা ডেঙ্গি রোগীদের চিকিৎসার সময়ে চিকিৎসকেরা মানছেন না’।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০১৯ ০২:১২
Share: Save:

ডেঙ্গির চিকিৎসায় প্লেটলেটের যথেচ্ছ ব্যবহার নিয়ে চিকিৎসকদের একাংশকে কাঠগড়ায় তুলল রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশিকা।

ওই নির্দেশিকায় লেখা হয়েছে, ‘প্লেটলেট ট্রান্সফিউশন নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের যে নির্দেশিকা রয়েছে, তা ডেঙ্গি রোগীদের চিকিৎসার সময়ে চিকিৎসকেরা মানছেন না’। তবে নির্দেশিকায় ‘অসাবধানতাবশত’ শব্দটিও ব্যবহার করা হয়েছে। প্লেটলেটের যথেচ্ছ ব্যবহার রোধে চিকিৎসকদের করণীয়ও স্থির করে দিয়েছে ওই নির্দেশিকা। এর প্রেক্ষিতে স্বাস্থ্যকর্তাদের বক্তব্য, কোন অবস্থায় রোগীকে প্লেটলেট দিতে হবে তা নিয়ে অনেক ক্ষেত্রে অজ্ঞতা কাজ করে। আবার মুনাফা লোটার লোভেও এক শ্রেণির বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোমে অবৈজ্ঞানিক ভাবে ডেঙ্গি রোগীকে প্লেটলেট দেওয়া হচ্ছে। যার জেরে নানা পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ায় অসুস্থদের অবস্থার অবনতি হচ্ছে। নির্দেশিকা অনুযায়ী, কিছু ক্ষেত্রে এ ধরনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ায় প্রাণহানির ঘটনাও ঘটছে।

নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, রক্তে প্লেটলেটের সংখ্যা ১০ হাজার থেকে ২০ হাজার কিউবিক মিলিমিটারের মধ্যে থাকলে ও শরীরে অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ না হলে প্লেটলেট দেওয়া নিষ্প্রয়োজন। যদি রক্তক্ষরণ হয় তবে চিকিৎসক রোগীর অবস্থা দেখে প্লেটলেট দেওয়ার ব্যাপারে তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নেবেন এবং সেটি ব্যতিক্রমী অবস্থা বলে ধরতে হবে।

আরও পড়ুন: গণপিটুনিতে দোষী সাব্যস্ত ১২ জনকে আমৃত্যু কারাদণ্ড

স্বাস্থ্য দফতর আরও জানিয়েছে, একই গ্রুপের রক্তের প্লেটলেট দিতে হয়, এমন ধারণা রোগীর পরিজনদের দেওয়া হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে তাঁরা নির্দিষ্ট গ্রুপের প্লেটলেটের খোঁজে হন্যে হয়ে শেষে চড়া দামে তা কিনছেন। স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘কিছু বেসরকারি হাসপাতাল প্লেটলেট নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। অযথা প্লেটলেটের ঘাটতি তৈরি হচ্ছে। অপ্রয়োজনে প্লেটলেট দেওয়ায় রোগীর দেহে খারাপ প্রতিক্রিয়াও হচ্ছে।’’

অজয়বাবু জানান, একমাত্র ‘ও’ গ্রুপের রক্তের প্লেটলেট অন্য গ্রুপের রোগীকে দেওয়ার ক্ষেত্রে নিষেধ করা হয়েছে। কারণ, তাতে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার আশঙ্কা থাকে। পাশাপাশি, নেগেটিভ ব্লাড গ্রুপের শিশু, গর্ভবতী মহিলা ও সন্তান প্রসবের বয়স রয়েছে, এমন মহিলাকে শুধু নেগেটিভ গ্রুপের প্লেটলেটই দিতে হবে। এই তিন ধরনের রোগী ছাড়া নেগেটিভ ব্লাড গ্রুপের অন্যদের পজিটিভ গ্রুপের প্লেটলেট দেওয়া যাবে। তবে শিশুদের বেলায় পজিটিভ ও নেগেটিভ, দু’ক্ষেত্রেই গ্রুপ মিলিয়ে প্লেটলেট দিতে বলা হয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিকর্তার কথায়, ‘‘কিছু হাসপাতাল প্লেটলেট নিয়ে ব্যবসা করছে। তাদের সতর্ক করা হয়েছে।’’ যদিও প্লেটলেটের ব্যবহার নিয়ে সরকারি চিকিৎসকদের মধ্যেও ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে বলে মত রক্তদান পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত সমাজকর্মীদের। ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কের প্রাক্তন অধিকর্তা মধুসূদন মণ্ডল বলেন, ‘‘এই নির্দেশিকা তিন বছর আগেও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সচেতনতা তৈরি হয়নি।’’

পূর্বাঞ্চলের হাসপাতালগুলির সংগঠনের তরফে ভাইস প্রেসিডেন্ট রূপক বড়ুয়ার দাবি, ‘‘নামী হাসপাতাল ডেঙ্গি রোগীকে অকারণে প্লেটলেট দিতে বলে না বা এক গ্রুপের প্লেটলেটের জন্য চাপ দেয় না। অলিগলিতে গজিয়ে ওঠা নার্সিংহোমগুলি নিয়েই সমস্যা। তারা অনেকেই নিয়ম মেনে চিকিৎসা করে না। ডেঙ্গি রোগী ভর্তি হলে স্বাস্থ্য দফতরকে জানায়ও না।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Dengue Platelets
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy