অপেক্ষা: হস্তান্তরিত না হওয়ায় বন্ধই পড়ে স্কাইওয়াকের দোকান। শনিবার। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়
দক্ষিণেশ্বরে স্কাইওয়াক চালুর পরে কেটে গিয়েছে প্রায় দেড় মাস। তার উপরে থাকা দোকান বণ্টনের জন্য লটারিও হয়ে গিয়েছে। কিন্তু এখনও কোনও দোকানেরই চাবি হস্তান্তর করা হয়নি বলে অভিযোগ ব্যবসায়ীদের। তাঁদের দাবি, যে বিকল্প জায়গায় তাঁদের এতদিন দোকান ছিল, সেখানে আর বেচাকেনা প্রায় নেই বললেই চলে। মেরেকেটে ১০০ টাকা রোজগার করতেই কালঘাম ছুটে যাচ্ছে।
ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, গত ৫ নভেম্বর দক্ষিণেশ্বরে রানি রাসমণি স্কাইওয়াকের উদ্বোধন করতে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাত দিনের মধ্যে দোকান বণ্টন করার জন্য বলেছিলেন কামারহাটি পুরসভার চেয়ারম্যানকে। পাশাপাশি, সবচেয়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন দোকানকে প্রতি বছর পুরস্কার দেওয়ার জন্যও নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু মাস কেটে গেলেও এখনও কেউ দোকানের চাবি পাননি বলেই অভিযোগ। ‘রানি রাসমণি রোড দোকানদার সমিতি’র তরফে গৌতম মালাকার বলেন, ‘‘স্কাইওয়াক চালু হওয়ার পর থেকে ব্যবসা প্রায় উঠে যাওয়ার জোগাড়। প্রতিদিন সকালে দোকান খোলার পরে বউনি হবে কি না, সেটাই এখন চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।’’
তবে কামারহাটি পুরসভা সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশমতো জরুরি ভিত্তিতে লটারি করে ইতিমধ্যেই কে কোন দোকানঘর পাবেন, তা চিহ্নিত করা হয়েছে। দোকান হস্তান্তরের চুক্তিপত্রও তৈরি হয়ে গিয়েছে। কিন্তু সমস্যা দেখা দিয়েছে বিদ্যুতের সংযোগ নিয়ে। চেয়ারম্যান গোপাল সাহা জানান, স্কাইওয়াকের মূল বিদ্যুৎ সংযোগের সঙ্গে দোকানের লাইন জুড়ে রয়েছে। তা থাকলে পরবর্তী সময়ে কার কত বিল হচ্ছে, তা নির্ধারণ করতে সমস্যা দেখা দেবে। গোপালবাবু বলেন, ‘‘দোকানদারেরাই অনুরোধ করেছিলেন যেন এই সমস্যাটা গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয়। তাই প্রতিটি দোকানের জন্য আলাদা সাব-মিটারের ব্যবস্থা করতে একটু সময় লাগছে।’’ পাশাপাশি আরও একটি বিষয়ে জোর দিয়েছে পুরসভা। এক কর্তা জানান, যে জায়গায় দোকানদারদের পুনর্বাসন দেওয়া হয়েছিল, সেখানে সমস্ত দোকানে বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য একটি মিটার করে দেওয়া হয়েছিল। সিদ্ধান্ত হয়েছিল, যা বিল আসবে তা নিজেরা ভাগাভাগি করে মেটাবেন দোকানদারেরা। গোপালবাবু বলেন, ‘‘দেখা গিয়েছে তিন বছর ধরে বিদ্যুতের ওই বিলের টাকা পুরসভা থেকে দিতে হয়েছে। তাই দোকানদারদের ওই বকেয়া টাকাও মেটাতে বলা হয়েছে।’’
স্কাইওয়াক তৈরির জন্য রানি রাসমণি রোডের দু’পাশের দোকান তুলে দেওয়া হয়েছিল। পুনর্বাসন হিসেবে মন্দিরের পিছন দিকের গেটের বাইরে জননী মা সারদা রোডে অস্থায়ী ভাবে টিনের তৈরি ঘর দেওয়া হয়েছিল ১৩৪ জন ব্যবসায়ীকে। ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, স্কাইওয়াক তৈরির আগে কোনও সমস্যা ছিল না। সব দর্শনার্থীকেই যেহেতু ওই রাস্তা দিয়ে ঢুকতে হত, তাই বেচাকেনাও ছিল। কিন্তু স্কাইওয়াক চালু হওয়ার পরে স্বাভাবিক ভাবে কোনও দর্শনার্থীই আর ওই রাস্তা দিয়ে মন্দিরে যাতায়াত করছেন না। এক দোকানদারের কথায়, ‘‘এমন অবস্থা হয়েছে যে সারা দিন দোকান খোলা রেখে ৪০-৭০ টাকার বিক্রি হচ্ছে। এক প্রকার খালি হাতে রোজ রাতে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে। পুরসভা বিদ্যুতের বিলের টাকা দেওয়ার কথা আগে বললে এমন সমস্যা হত না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy