প্রতীকী চিত্র।
ঘর থেকে উদ্ধার হল এক যুবকের ঝুলন্ত দেহ। রবিবার সকালে দক্ষিণ শহরতলির বিষ্ণুপুরের জয়রামপুর এলাকার ঘটনা। মৃতের নাম আশিস মণ্ডল (২২)।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, আশিস স্নাতকোত্তর দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। বাড়ি থেকে কিছু দূরে মামার বাড়িতে দাদু-দিদার সঙ্গে থাকতেন। পাড়ায় খুব বেশি মেলামেশা করতেন না তিনি। ল্যাপটপ ও মোবাইল নিয়েই বুঁদ থাকতেন। পরিবার সূত্রের খবর, শনিবার রাতে দাদু-দিদার সঙ্গে খেয়ে নিজের ঘরে শুয়েছিলেন তিনি। সম্প্রতি ওজন বেড়ে যাচ্ছিল বলে সকালে দৌড়নো শুরু করেছিলেন আশিস। এ দিন সকালে ৮টা বেজে যাওয়ার পরেও দরজা না খুললে দিদিমা সন্ধ্যা মণ্ডল দরজায় ধাক্কা দেন। সাড়া না পেয়ে ঘরের পিছনের জানলা দিয়ে দেখা যায়, ফাঁস লাগানো অবস্থায় সিলিং ফ্যান থেকে আশিসের দেহ ঝুলছে। পুলিশ গিয়ে দেহটি উদ্ধার করে।
মৃতের পরিবারের অভিযোগ, কোনও ভিডিয়ো গেমের জেরে আশিস আত্মঘাতী হয়ে থাকতে পারেন। আশিসের ল্যাপটপ ও মোবাইলটি বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। তবে ল্যাপটপ থেকে সাধারণ গেম ছাড়া কোনও আত্মঘাতী গেমের হদিস পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা। মোবাইলটি পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত হোয়াটসঅ্যাপে অনলাইন ছিলেন তিনি। আশিস সন্ধ্যার পরে তিন বন্ধুকে পড়াশোনা সংক্রান্ত বিষয়ে হোয়াটসঅ্যাপ থেকে মেসেজ পাঠান। তাঁর মাসতুতো ভাই অনুব্রত মণ্ডল বলেন, ‘‘শনিবার বিকেলেও পাড়ার ছেলেদের সঙ্গে ক্রিকেট খেলেছিল আশিস। সকালে ওর বাবা-মায়ের কাছেও গিয়েছিল। সন্ধ্যায় কয়েক জন ছাত্রকে পড়িয়ে ফিরেছিল ও। তবে এমন কী হল যে চরম সিদ্ধান্ত নিতে হল! সেটাই তো বুঝতে পারছি না।’’
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, উদ্ধার করার সময়ে ওই যুবকের দেহে কোনও পোশাক ছিল না। মেঝেতে নারকেল তেল ছড়ানো ছিল। আশিসের দিদা বলেন, ‘‘রাত ন’টা নাগাদ খাবার খেয়েছিল আশিস। তার পরে মুখে নারকেল তেল লাগাবে বলে আমার থেকে সেটি চেয়ে নিয়েছিল।’’ ঘরে নারকেল তেল পড়ে থাকা এবং বিবস্ত্র অবস্থায় দেহ উদ্ধারের বিষয় নিয়ে ধন্দে তদন্তকারীরা। আশিসের ঘর থেকে কোনও সুইসাইড নোটও মেলেনি। তবে দরজাটি ভিতর থেকে বন্ধ ছিল। ফলে খুনের সম্ভাবনা প্রায় নেই বলেই মনে করছেন তদন্তকারীরা।
আশিসের বাবা দিলীপ মণ্ডল বলেন, ‘‘সকালে আমার কাছে এসেছিল ছেলেটা। কোনও কিছুই তো বুঝতে পারিনি!’’ একই কথা বলছেন মা সোমা। তিনি বলেন, ‘‘সকালে বাড়ি এসে খাবার খেল। দাদু-দিদিমা একা থাকত বলে ছোট থেকে ওখানেই থাকত আশিস। তবে দিনে এক বার আমাদের সঙ্গে দেখা
করতে আসত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy