উধাও ফুটপাথ। পথচারীর ভরসা তাই রাস্তা। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য।
দৃশ্য ১: চওড়া ফুটপাথের উপরে পর পর প্লাস্টিক আর চটের তাঁবু খাটানো। ভিতরে সংসারের বিভিন্ন জিনিসপত্র। কোথাও বাইরে ইঁট দিয়ে উনুন তৈরি করে বা স্টোভ জ্বেলে চলছে রান্না। কোথাও পোষা মুরগি ঘুরে বেড়াচ্ছে।
দৃশ্য ২: ফুটপাথের উপরে চওড়া চৌবাচ্চার মতো করে রাখা রয়েছে। সেখানে কল দিয়ে অনবরত গঙ্গার জল পড়ছে। নানা বয়সের লোকজন সেখানে স্নান করছেন কিংবা কাপড় কাচছেন।
দৃশ্য ৩: বড় বড় লরি আর ট্রেলার সার দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। কোথাও আবার সারানো হচ্ছে সাইকেল, মোটরবাইকের যন্ত্রাংশ।
এগুলি রফি আহমেদ কিদোয়াই রোডের ফুটপাথের নানা অংশের ছবি। কোথাও অচল গাড়ি কোথাও আবার পর পর অটো, প্রাইভেট গাড়ি, ম্যাটাডর দাঁড় করানো রয়েছে। ফলে এক দিকে, ফুটপাথ এবং অন্য দিকে, রাস্তার দু’পাশই দখলে চলে যাওয়ায় দীর্ঘ রফি আহমেদ কিদোয়াই রোডে পথচারীদের যাতায়াত করাটাই বিপজ্জনক এবং সমস্যাবহুল হয়ে উঠেছে। ঝুঁকি নিয়েই পথচারীরা এখানে নিত্য দিন যাতায়াত করেন।
এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, এক সময়ে এই রাস্তার ট্রামলাইন থেকে লোহার পাত বেরিয়ে পড়ার জন্য প্রায়ই মোটরবাইক কিংবা অটোর দুর্ঘটনা ঘটত। স্থানীয় কাউন্সিলর এবং ট্রাম সংস্থাকে অভিযোগ জানিয়েও লাভ হয়নি। মোটরবাইকের এক বড় দুর্ঘটনার পরে রাস্তা অবরোধ হওয়ায় অবশেষে ট্রাম কোম্পানি লাইন সারায়। সেই সময় কিছু দিনের জন্য রাস্তা বন্ধ থাকায়, লাইনের দু’পাশে রাস্তার উপর লোকজন গাড়ি পার্ক করত। রাস্তা চালু হওয়ার পরেও সেই পার্কিং আর বন্ধ হয়নি। ফলে প্রাণ হাতে করেই পথচারীদের চলতে হচ্ছে।
এলাকার বাসিন্দা খালেক মহম্মদের অভিযোগ, এই রাস্তায় পুরসভার উর্র্দুু মিডিয়াম স্কুল, কলেজ রয়েছে। রয়েছে নানা অফিসও। প্রতি দিন অনেকে যাতায়াত করেন।
অথচ পথচারীদের জন্য কোনও ভাবনা নেই প্রশাসনের।
স্থানীয় গৃহবধূ তবসুম খাতুনের অভিযোগ, বাচ্চাকে নিয়ে এই রাস্তা দিয়ে হাঁটতে ভয় লাগে। তাঁর কথায়, “শহরের অনেক রাস্তার ফুটপাথ দখল হলেও রাস্তা ফাঁকা থাকে। এখানে তো ফুটপাথের সঙ্গে রাস্তাও দখল হয়ে গিয়েছে।”
এ প্রসঙ্গে পুরকর্তৃপক্ষ জানান, বেআইনি গাড়ি থাকলে পুলিশের সহায়তায় তা সরানো হয়। ওখানে অবস্থা কেমন তা না দেখে বলা সম্ভব নয়। আর ফুটপাথে ঝুপড়ি থাকলে তা মাঝে মধ্যেই উচ্ছেদ করা হয়। তবে কিছু দিনের মধ্যেই আবার সেখানে ঝুপড়ি বসে যায়। বার বার পর্যবেক্ষণ করার মতো পরিকাঠামো পুরসভার নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy