দগ্ধ: ভস্মীভূত দোকানে শেষ সম্বলের খোঁজে স্থানীয়েরা। রবিবার, কেষ্টপুরে। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
গভীর রাতে এলাকার দোকানগুলির একটিতে প্রথম আগুনের শিখা দেখতে পেয়েছিলেন স্থানীয়েরা। মুহূর্তের মধ্যে পাশের দরমা ও টিনের চালের দোকানগুলিতে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এ ভাবেই শনিবার রাতে বিধ্বংসী আগুনে ভস্মীভূত হয়ে গেল ভিআইপি রোডের ধারে, কেষ্টপুর থেকে সল্টলেকের বৈশাখী আবাসনের দিকে যাওয়ার পথে শতরূপা পল্লি সংলগ্ন ২৬টি দোকান এবং দোকানের দোতলায় তৈরি অস্থায়ী কিছু ঘর। আগুন নেভাতে গিয়ে জখম হলেন চার স্থানীয় বাসিন্দা ও দু’জন দমকলকর্মী। তাঁদের মধ্যে এক জন আশঙ্কাজনক।
দমকল ও স্থানীয় সূত্রের খবর, শনিবার রাত ২টো ৪০ মিনিট নাগাদ কেষ্টপুর এলাকার ওই দোকানগুলিতে আগুন লাগে। খবর পেয়ে দমকলের ১৫টি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রায় চার ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে। রবিবার সকাল ৯টা নাগাদ আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসে। শর্ট সার্কিট থেকেই আগুন বলে প্রাথমিক তদন্তে দমকলের অনুমান। আগুন নেভাতে গিয়ে চার জন স্থানীয় বাসিন্দা ও দু’জন দমকলকর্মী আহত হন। আহতদের মধ্যে বিপ্লব সেনগুপ্ত নামে এক বাসিন্দার অবস্থা গুরুতর। তাঁকে এসএসকেএমে ভর্তি করা হয়েছে। বাকি আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
রবিবার ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেল, সোনার অস্থায়ী দোকান থেকে শুরু করে সাইকেল সারাই, আসবাব বা চায়ের দোকান— বিধ্বংসী আগুনের গ্রাস থেকে বাদ যায়নি কিছুই। আগুন লাগার পরে প্রথমে স্থানীয়েরাই কেষ্টপুর খালের জল দিয়ে তা নেভানোর চেষ্টা করেন। পরে আসে দমকল। তবে দমকলের দু’টি রোবট ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে নিয়ে আসা হলেও সেগুলি ব্যবহারের প্রয়োজন হয়নি। স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘বেশির ভাগ দোকানের মালিক আশপাশের এলাকায় থাকেন। তাঁরা খবর পেয়ে ছুটে আসেন। আমি দোকানের উপরের ঘরে থাকি। ঘর থেকে বেরোতে গিয়ে শুনতে পাই বিস্ফোরণের শব্দ। প্রাণে বেঁচে গিয়েছি, তবে কিছুই বাঁচাতে পারিনি।’’ প্রদীপ হালদার নামে আর এক স্থানীয় বাসিন্দার কথায়, “আগুনের শিখা অনেক দূর থেকে দেখা যাচ্ছিল। অন্তত ১৫ থেকে ২০টি গ্যাস সিলিন্ডার ফেটেছে।” একটি সেলুনের মালিকের স্ত্রী গঙ্গা শীল বলেন, ‘‘দোকান থেকে একটু দূরেই বাড়ি। রাত ৩টের সময়ে খবর পেয়ে ছুটে এসে দেখি, সব শেষ। কিছুই বাঁচাতে পারলাম না।’’
স্থানীয়দের একাংশের অবশ্য অভিযোগ, খবর পেয়েও দমকলের পৌঁছতে কিছুটা দেরি হয়েছে। যদিও দমকলের আধিকারিকদের দাবি, খবর পাওয়া মাত্রই ঘটনাস্থলে পৌঁছেছিল দমকলের ইঞ্জিন। শনিবার রাতে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু এবং স্থানীয় বিধাননগর পুরসভার ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের কোঅর্ডিনেটর অনুপম মণ্ডল। রবিবার ঘটনাস্থলে যান রাজারহাট-গোপালপুরের বিধায়ক অদিতি মুন্সি। সুজিত বলেন, ‘‘আগুন লাগার কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে আছে প্রশাসন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy