রাস্তা জুড়ে মিছিল, সঙ্গে যানজট। তাতেই আটকে গেল দমকলের মতো জরুরি পরিষেবার গাড়ি। এ দিকে সময়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছতে না পারায় জনতার ক্ষোভের শিকার হলেন দমকলকর্মীরা। প্রশ্ন উঠেছে রাস্তায় যান নিয়ন্ত্রণে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে। আর এর পরেই একে অপরের উপরে দায় চাপিয়েছে দমকল ও পুলিশ। শুরু হয়েছে দু’পক্ষের যুক্তির লড়াই।
দমকল সূত্রে খবর, সোমবার এন্টালির মতিঝিল লেনে একটি বাড়িতে আগুন লাগার খবর পেয়ে মির্জা গালিব স্ট্রিটের হেড অফিস থেকে দ্রুত গতিতে যাচ্ছিল দমকলের গোটা আটেক ইঞ্জিন। কিন্তু জরুরি পরিষেবার ওই গাড়িগুলি আটকে পড়ে মৌলালি ঢোকার আগেই। সে সময়ে বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে ওই পথ জুড়ে ছিল মাদ্রাসা শিক্ষক সংগঠনের একটি মিছিল। দমকল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই সময়ে গাড়ি থেকে নেমে পুলিশের কাছে যান দমকলের একাধিক অফিসার ও কর্মী। লেনিন সরণিতে প্রবল যানজটে গাড়িগুলি আটকে পড়ায় পরিস্থিতি সামলাতে কর্তব্যরত পুলিশকর্মীকে হাত জোড় করে অনুরোধ করেন তাঁরা। কিন্তু তাতেও পরিস্থিতির বদল হয়নি। লেনিন সরণি, এস এন ব্যানার্জি রোড, মৌলালি মোড়ে তখন সার দিয়ে আটকে গাড়ি।
এর ফলে প্রায় ঘণ্টাখানেক পরে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় দমকল বাহিনী। কিন্তু এখানেই শেষ নয়, দেরিতে আসার কারণে তখন সেখানে উপস্থিত জনতার ক্ষোভের মুখে পড়ে তারা। দমকল কর্মীদের লক্ষ্য করে ছোড়া হয় ইট-পাটকেল। তাতেও আরও কিছুক্ষণ আটকে থাকে আগুন নেভানোর কাজ।
স্বভাবতই প্রশ্ন উঠেছে, দমকলের মতো জরুরি পরিষেবার গাড়ির যাতায়াত নিশ্চিত করতে পারল না কেন পুলিশ?
পুলিশ অবশ্য তাদের তরফে গাফিলতি মানতে নারাজ। কলকাতা পুলিশের এক পদস্থ কর্তার কথায়, ‘‘নবান্নে দমকলের এক অনুষ্ঠান উপলক্ষে তাদের সদর দফতরের অধিকাংশ আধিকারিক না থাকায় সমন্বয়ের অভাব ঘটেছে। তাতেই সমস্যা হয়েছে।’’
কিন্তু দমকল মাঝ রাস্তায় আটকে যাওয়ার সঙ্গে নবান্নের অনুষ্ঠানের সম্পর্ক কী, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। দমকলের অধিকর্তা তরুণ সিংহ বলেন, ‘‘আগুনের খবর পাওয়া মাত্রই সদর দফতর থেকে বার হয় দমকল। যানজটের জন্যই সময়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছনো যায়নি। অন্য কোনও কারণ নেই।’’ তবে পুলিশ জানিয়েছে এমন ঘটনা খুব একটা ঘটে না। ফের যাতে না ঘটে তাই ট্র্যাফিক বিভাগকে সতর্ক থাকতে হবে।
সোমবার রাস্তায় নামল দমকলের নতুন ৫০টি গাড়ি। নবান্নে পতাকা নাড়িয়ে সেগুলির যাত্রার সূচনা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সরকারি সূত্রে খবর, এর মধ্যে ২০টি গাড়িতে পাঁচ হাজার লিটার জলধারণের ক্ষমতা রয়েছে। বাকি ৩০টি একসঙ্গে ২৫০০ লিটার জল ধরে রাখতে পারবে। প্রতিটি গাড়িতে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন পাম্প রয়েছে। বড় গাড়িগুলিতে রয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য ভারী লোহা কাটার যন্ত্র, দুর্ঘটনাগ্রস্ত ব্যক্তিদের উদ্ধারের জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী, মই। মাঝারি মাপেরগুলি ঢুকতে পারবে শহরের অলিগলিতে। নবান্ন সূত্রে খবর, গাড়িগুলি কিনতে খরচ হয়েছে প্রায় ১৩ কোটি ২৬ লক্ষ টাকা।
এই সূচনা অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘রাজ্য জুড়ে বহু দমকল কেন্দ্র করেছি আমরা। আজ ৫০টি নতুন গাড়ি চালু হল।’’ দমকলমন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘১২ কোটি টাকায় কেনা সর্বাধিক উচ্চতার ল্যাডার রাখা হবে রাজারহাটে। সমস্ত বহুতলে এই ল্যাডার কাজ করবে।’’ শোভনবাবু জানান, রাজ্যে আরও দমকল কেন্দ্র গড়ার পরিকল্পনা রয়েছে। অনেক জায়গায় কাজও শুরু হয়েছে। শীঘ্রই সেগুলি চালু হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy