(বাঁ দিকে) তৃণমূল কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষ এবং গুলি চালানোর মুহূর্তের দৃশ্যের সিসিটিভি ফুটেজ (ডান দিকে)। —নিজস্ব চিত্র।
দক্ষিণ কলকাতার কসবায় গুলি করে খুনের চেষ্টা করা হল এক তৃণমূল কাউন্সিলরকে। কলকাতা পুরসভার ১০৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষ সেই সময় বাড়ির সামনে রাস্তার পাশে বসে ছিলেন। স্কুটারে করে দু’জন এসে রাস্তার পাশে দাঁড়ান। তার পর এক জন স্কুটার থেকে নেমে তাঁকে লক্ষ্য করে পর পর দু’বার গুলি চালানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু বন্দুক কাজ করেনি। গুলি বার না হওয়ায় স্কুটারে চেপে পালানোর চেষ্টা করেন অভিযুক্তেরা। সুশান্ত এবং তাঁর এক সঙ্গী তাড়া করেন তাঁদের। এক জনকে ধরে ফেলা হয়। ওই তরুণকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। খবর জানাজানি হতেই ওই তৃণমূল কাউন্সিলরের সমর্থকেরা কসবায় পথ অবরোধ করেন। ঘটনাস্থলে গিয়েছেন স্থানীয় বিধায়ক জাভেদ খান।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার সন্ধ্যায় কসবায় নিজের বাড়ি সামনেই বসে ছিলেন সুশান্ত। সেই সময়েই দু’জন স্কুটারে করে আসেন। সুশান্তের সামনে স্কুটার দাঁড় করানো হয়। তার পর স্কুটারের পিছনের আসন থেকে নেমে আসেন এক জন। কিছু বুঝে ওঠার আগেই পকেট থেকে বন্দুক বার করে সুশান্তকে তাক করে গুলি চালানোর চেষ্টা করেন। তবে বন্দুক ‘লক্’ হয়ে যাওয়ায় আরও একটি বন্দুক থেকে গুলি চালানোর চেষ্টা করেন অভিযুক্ত। সে চেষ্টাও ব্যর্থ হয়। পর পর দু’বার গুলি চালানোয় ব্যর্থ হওয়ায় পালানোর চেষ্টা করেন তিনি। সে সময়েই তাঁকে ধরে ফেলা হয়।
পুরো ঘটনাটি ধরা পড়েছে কাউন্সিলরের বাড়ির সামনে লাগানো সিসি ক্যামেরায়। ওই ফুটেজে দেখা গিয়েছে, অভিযুক্ত গুলি চালানোর চেষ্টা করছেন বুঝতে পেরে প্রথমেই লাথি চালান সুশান্ত। তার পর তাঁকে ধরতে নিজেই ছুটে যান। সঙ্গে তাঁর অনুগামীরা। অভিযুক্তকে ধরে ফেলে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। তবে অন্য এক জন পলাতক। দু’জনের মাথাতেই হেলমেট থাকায় সিসিটিভি ফুটেজে কারও মুখের ছবিই ধরা পড়েনি। অন্য অভিযুক্তের খোঁজ শুরু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত তরুণ ভিন্রাজ্যের বাসিন্দা।
কেন সুশান্তকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হল, তা নিয়ে ধন্দে তদন্তকারীরা। এ ব্যাপারে তৃণমূল কাউন্সিলর সুশান্ত বলেন, ‘‘কলকাতা পুলিশ দক্ষতার সঙ্গে কাজ করবে। এই ঘটনার নেপথ্যে অন্য কেউ জড়িত আছে। আসল মাথাকে ধরতে হবে। তবে আমার মনে হয় না ১০৭ বা ১০৮ নম্বর ওয়ার্ডের কেউ জড়িত রয়েছেন। বাইরে থেকে কেউ এসে এমন কাণ্ড ঘটিয়েছে বলে মনে হচ্ছে। মাস্টারমাইন্ডকে ধরবে পুলিশ, এটা আমার বিশ্বাস।’’
চলতি মাসের গোড়ার দিকেই কসবা থানা এলাকার হালতুতে একটি ক্লাবে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। অভিযোগ, সেই ঘটনার প্রতিবাদ করায় এক দম্পতিকে মারধরও করা হয়। গোটা ঘটনায় অভিযোগের তির ছিল ১০৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর লিপিকা মান্নার দিকে। স্থানীয় অনেকের মতে, সুশান্ত এবং লিপিকার মধ্যে ‘রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব’ রয়েছে। সেই কারণে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে প্রায়শই ঝামেলা লেগে থাকে। সেই ‘দ্বন্দ্ব’ থেকেই কি শুক্রবারে সুশান্তের উপর হামলার ঘটনা ঘটল, উঠছে প্রশ্ন।
উল্লেখ্য, এই ১০৭ নম্বর ওয়ার্ডে আগে কাউন্সিলর ছিলেন সুশান্তই। গত পুরসভা নির্বাচনে এই ওয়ার্ডটি মহিলা সংরক্ষিত হওয়ায়, তাঁকে পাশের ওয়ার্ডে প্রার্থী করে তৃণমূল। তবে এই ১০৭ নম্বর ওয়ার্ডেই রয়েছে সুশান্তের বাড়ি এবং অফিস। শাসক দল সূত্রে খবর, গুলিকাণ্ডের পর সুশান্তকে ফোন করে খোঁজখবর নিয়েছেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy