জীবাণুনাশ: আইসিএসই এবং আইএসসি পরীক্ষা শুরুর আগে চলছে প্রস্তুতি। শনিবার, দক্ষিণ কলকাতার এক স্কুলে। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক
দেশ জুড়ে করোনার সংক্রমণ যখন একটু একটু করে বাড়ছে, ঠিক তখনই কাল, সোমবার থেকে শুরু হচ্ছে আইসিএসই, অর্থাৎ দশম শ্রেণির দ্বিতীয় সিমেস্টারের পরীক্ষা। মঙ্গলবার শুরু হবে আইএসসি, অর্থাৎ দ্বাদশের দ্বিতীয় সিমেস্টারের পরীক্ষা। সেই সঙ্গে ওই দিনই অর্থাৎ ২৬ তারিখ শুরু হচ্ছে সিবিএসই-র দশম ও দ্বাদশের দ্বিতীয় সিমেস্টারের পরীক্ষাও।
দিল্লিতে করোনার প্রকোপ বাড়ায় সেখানকার কিছু পরীক্ষার্থীর অভিভাবক পরীক্ষা স্থগিত রাখার আবেদন জানালেও বোর্ড এ নিয়ে কোনও নির্দেশিকা জারি করেনি। পরীক্ষা নির্ধারিত সূচি মেনেই হবে বলে এখনও পর্যন্ত ঠিক আছে। শিক্ষকদের মতে, যারা পরীক্ষা দিচ্ছে, তারা সকলেই করোনার প্রতিষেধক নেওয়ার অধিকারী। তাই আশা করা যায়, তারা প্রতিষেধক নিয়েছে।
আইসিএসই এবং আইএসসি-র পরীক্ষা হবে হোম সেন্টারে। অন্য স্কুল থেকে পরীক্ষকেরা গার্ড দিতে আসবেন। সিবিএসই হোম সেন্টারে হয় না। বিভিন্ন স্কুলের অধ্যক্ষদের মতে, এ বার বোর্ডের পরীক্ষা দু’টি সিমেস্টারে ভাগ হয়ে যাওয়ায় পরীক্ষার সময়সীমা দেড় ঘণ্টা এবং পূর্ণমানও কম। ফলে এই তীব্র গরমে দীর্ঘ সময় ধরে পরীক্ষা দিতে হবে না। তাঁরা জানাচ্ছেন, পরীক্ষার সময়ে সমস্ত করোনা-বিধি মানতে হবে। স্কুলগুলিতে পরীক্ষা চলাকালীন অন্যান্য শ্রেণির ক্লাসও হবে।
ক্যালকাটা গার্লসের অধ্যক্ষা বাসন্তী বিশ্বাস বললেন, “সমস্ত করোনা-বিধি মেনেই পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে। স্কুলে স্যানিটাইজ়েশনের কাজ শেষ। যারা পরীক্ষা দিতে আসবে, তাদের সকলের প্রতিষেধক নেওয়া থাকলেও করোনা-বিধি শিথিল হবে না।” ন্যাশনাল ইংলিশ স্কুলের অধ্যক্ষা মৌসুমী সাহা বললেন, “যে ঘরে পরীক্ষা হবে, সেই ঘর বিশেষ ভাবে স্যানিটাইজ় করা হয়েছে। থার্মাল গানে শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা করিয়ে তবেই পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢোকা যাবে। কারও জ্বর বা কোনও উপসর্গ থাকলে তার জন্য আলাদা ঘরের ব্যবস্থা থাকছে।”
রামমোহন মিশন হাইস্কুলের অধ্যক্ষ সুজয় বিশ্বাস বললেন, “স্কুল স্যানিটাইজ় করিয়েছি। পরীক্ষার্থীরা মাস্ক পরে আসবে। কেউ ভুলে গেলে তাকে মাস্ক দেওয়া হবে। আলাদা করে স্যানিটাইজ়ারও রাখা হয়েছে।” ফিউচার ফাউন্ডেশন স্কুলের অধ্যক্ষ রঞ্জন মিত্রও জানান, সমস্ত করোনা-বিধি মেনেই পরীক্ষা হবে। পরীক্ষকেরাও যাতে করোনা-বিধি মেনে চলেন, সে বিষয়ে তাঁদের আলাদা করে বলা হয়েছে।
এক দিকে পরীক্ষা চলবে, অন্য দিকে চলবে ক্লাসও। তবে স্কুলের কোনও কোলাহল পরীক্ষার ঘরগুলিতে আসবে না বলেই দাবি করেছেন অধ্যক্ষেরা। কিছু স্কুল জানিয়েছে, পরীক্ষা যে তলে হবে, সেখানে অন্য ক্লাস না রাখার চেষ্টা করছে তারা।
আইসিএসই, আইএসসি বা সিবিএসই-র দশম ও দ্বাদশের পরীক্ষা সাধারণত এত গরমে হয় না। মাসখানেক আগেই হয়ে যায়। এ বার করোনার কারণে পরীক্ষা পিছিয়েছে। তাই গরমেই পরীক্ষা দিতে হবে। চিকিৎসকেরা অবশ্য সতর্ক করে বলছেন, যতই গরম লাগুক, মাস্ক খোলা যাবে না।
জনস্বাস্থ্য চিকিৎসক অনির্বাণ দলুই বললেন, “বাড়ি থেকে বেরিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে আসা থেকে শুরু করে পরীক্ষা দেওয়া এবং ঘরে ফিরে যাওয়া— গোটা সময়টাই মাস্ক পরে থাকতে হবে পরীক্ষার্থীদের। রাখতে হবে স্যানিটাইজ়ার। সার্জিকাল মাস্ক হলে ভাল। না হলে কাপড়ের মাস্কও চলতে পারে।”
সেই সঙ্গে চিকিৎসকদের পরামর্শ, যাঁরা পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে যাবেন, তাঁরাও যেন সতর্কতা মেনে চলেন। স্কুলগুলিকেও করোনা-বিধি মানতে হবে। অনির্বাণবাবু বলেন, “যেখানে ভিড়, সেখানেই কিন্তু সংক্রমণের আশঙ্কা। এটা সব সময়ে খেয়াল রাখতে হবে পরীক্ষার্থীদের।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy