‘প্রত্যাশা’ মতো স্বরাষ্ট্র দফতর হাতে পাননি। তবে মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডের হাতে রইল একাধিক গুরুত্বপূর্ণ দফতর। শনিবার রাতে মহারাষ্ট্র মন্ত্রিসভায় দফতর বণ্টন হয়। দেখা যায়, শিবসেনা প্রধান শিন্ডে পাচ্ছেন নগরোন্নয়ন, আবাসন এবং পূর্ত দফতরের দায়িত্ব। সামগ্রিক ভাবে শিবসেনার হাতে যাচ্ছে বাণিজ্য, জনস্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ, জল, পরিবহণ, স্কুলশিক্ষা এবং মরাঠি ভাষার দায়িত্ব।
শিন্ডে জন্মসূত্রে মরাঠি। তা ছাড়া বালাসাহেব ঠাকরের হাতে গোড়াপত্তন হওয়া শিবসেনা আগাগোড়াই মরাঠি অস্মিতাকে পুঁজি করে রাজনীতির ময়দানে লড়াই করেছে। সেই হিসাবে শিন্ডেসেনার হাতে মরাঠি ভাষা সংক্রান্ত দফতরের দায়িত্বভার দেওয়াকে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।
দ্বিতীয় বারের জন্য মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী হওয়া হয়নি শিন্ডের। উপমুখ্যমন্ত্রিত্ব নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে তাঁকে। তবে বিজেপি এবং শিবসেনার একটি সূত্রে শোনা গিয়েছিল যে, স্বরাষ্ট্র দফতর নিজের হাতে রাখতে চান তিনি। তবে তাঁর সেই দাবি পূরণ না-হলেও মন্ত্রিসভায় শিবসেনা গুরুত্ব ধরে রেখেছে বলেই রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের মত।
শিন্ডে মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময় যে যে দফতর শিবসেনা বিধায়কদের হাতে, মোটের উপর তা অপরিবর্তনীয়ই থাকছে। উল্টে আবাসনের মতো গুরুত্বপূর্ণ দফতরও এ বার নিজেদের ঝুলিতে ভরেছে শিন্ডের দল। তা ছাড়া অর্থ ও পরিকল্পনা, কৃষি, ত্রাণ ও পুনর্বাসন, আইনশৃঙ্খলার মতো বেশ কয়েকটি দফতরের প্রতিমন্ত্রী হচ্ছেন শিবসেনার বিধায়কেরা।
মহারাষ্ট্রের বিধানসভা নির্বাচনে ‘মহাজুটি’র দাপুটে জয়ের পর গত ৫ ডিসেম্বর মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নিয়েছিলেন বিজেপির ফডণবীস। উপমুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেন শিবসেনা (শিন্ডে) প্রধান একনাথ এবং এনসিপি (অজিত) প্রধান অজিত। ১৫ ডিসেম্বর মোট ৩৯ জন বিধায়ক মন্ত্রী হিসাবে শপথ নিয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে ১৯ জনই বিজেপি বিধায়ক। ফডণবীস মন্ত্রিসভায় ঠাঁই হয় শিন্ডেসেনার ১১ জন এবং এনসিপি (অজিত)-র ন’জন বিধায়কের। সেই শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের দু’সপ্তাহের বেশি সময় পরে শনিবার মন্ত্রিসভায় দফতর বণ্টন হয়। দেখা যায়, মুখ্যমন্ত্রী ফডণবীস স্বরাষ্ট্র ছাড়াও শক্তি এবং আইন দফতর নিজের হাতে রেখেছেন। অজিত পেয়েছেন অর্থ দফতর।
আরও পড়ুন:
দফতর বণ্টন নিয়ে বেশ কয়েক দিন ধরে টানাপড়েন চলছিল মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে, যা নিয়ে সরব হয়েছিলেন বিরোধীরাও। ফডণবীসের নেত়ৃত্বাধীন সরকারকে কটাক্ষ করে উদ্ধব ঠাকরের পুত্র আদিত্য দাবি করেন, দফতর বণ্টন এক রসিকতায় পরিণত হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘সকল মন্ত্রী বাংলো এবং গাড়ি পেয়েছেন, কিন্তু কোনও দায়িত্ব পাননি। কেউ মানুষের সেবা করতে চান না।’’