(বাঁ দিকে) অল্লু অর্জুন। রেবন্ত রেড্ডি (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
দুর্ঘটনার পরে দুটো সপ্তাহ কেটেছে। কিন্তু অভিনেতা অল্লু অর্জুনের ছবির প্রিমিয়ারে পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনা নিয়ে এখনও রাজনৈতিক উত্তাপ জারি তেলঙ্গানায়। শনিবার সে রাজ্যের বিধানসভায় এ নিয়ে তুলকালাম হয়েছে। আবার এক বার অল্লুর কাণ্ডজ্ঞান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী রেবন্ত রেড্ডি। তবে পর্দার পুষ্পা বাস্তবেও যেন বলছেন, ‘ঝুঁকেগা নহি’। তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে তেলুগু অভিনেতার মন্তব্য, ‘‘আমাকে কি এতটা অসংবেদনশীল মনে হয় আপনার?’’ অল্লুর দাবি, গত ৪ ডিসেম্বর নিজের ছবির প্রিমিয়ারে তিনি হায়দরাবাদের সিনেমাহলে গিয়েছিলেন ঠিকই। কিন্তু যে মুহূর্তে তিনি অনুভব করেছেন, এ বার হাতের বাইরে চলে যেতে পারে পরিস্থিতি, দর্শক এবং ভক্তদের ভিড়ের চাপ ক্রমশ বাড়ছে, তখনই তিনি সন্ধ্যা থিয়েটার চত্বর ছেড়েছেন।
গত ৪ ডিসেম্বর ‘পুষ্পা ২’-এর প্রিমিয়ারের রাতে সন্ধ্যা থিয়েটারে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ৩৫ বছরের এক মহিলার। গুরুতর জখম অবস্থায় উদ্ধার করা হয় তাঁর ৮ বছরের ছেলে সাই তেজকে। বর্তমানে সে চিকিৎসাধীন। ওই ঘটনার প্রেক্ষিতে এফআইআর দায়ের করে হায়দরাবাদ পুলিশ। গত ৬ ডিসেম্বর সকালে অল্লুকে তাঁর বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে রেবন্তের পুলিশ। অল্লু-সহ মোট সাত জনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়। নিম্ন আদালতের বিচারক অভিনেতার ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। তবে রায়কে চ্যালেঞ্জ করে তেলঙ্গানা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন অভিনেতা। তার পর ৫০ হাজার টাকার বন্ডে তাঁর অন্তর্বর্তী জামিন মঞ্জুর হয়েছে।
অন্য দিকে, অভিনেতার গ্রেফতারির পর বিতর্কের মুখে পড়ে মুখ্যমন্ত্রী রেড্ডি জানান, তিনি রাজধর্ম পালন করেছেন। তাঁর সরকারের শাসনে নামডাক, পরিচিতির জন্য আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে কেউ গলতে পারবেন না। আইন সকলের জন্য সমান। তার পর বিধানসভাতেও এ নিয়ে আরও এক বার কথা বলেছেন তিনি। ওই প্রেক্ষিতে এ বার মুখ খুললেন অল্লু। তিনি বলেন, ‘‘যে মুহূর্তে আমি প্রেক্ষাগৃহের বাইরে গন্ডগোলের কথা জানতে পেরেছি, ওই মুহূর্তে ওই জায়গা ছেড়ে চলে এসেছি। পরের দিন সকালে এক মহিলার মৃত্যুর খবর শুনি। জানতে পারি, তাঁর ছেলেও পদপিষ্ট হয়ে জখম হয়েছে। খুবই দুঃখজনক ঘটনা। আমার ২০ বছরের অভিনয় জীবনে এমন ঘটনা কোনও দিন ঘটেনি।’’ বস্তুত, অভিনেতা আগে জানিয়েছিলেন তিনি দুর্ঘটনাগ্রস্ত পরিবারের পাশে আছেন। প্রয়োজনে আহত কিশোরের চিকিৎসার সমস্ত দায়ভার নিতে রাজি। কিন্তু তাতেও বিতর্ক থেমে নেই। শনিবার তেলঙ্গানা বিধানসভায় ‘অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন’ (মিম) বিধায়ক তথা হায়দরাবাদের সাংসদ আসাদউদ্দিন ওয়েইসির ভাই আকবরউদ্দিন ওয়েইসি বলেন, ‘‘আমার কাছে যা খবর আছে, ওই অভিনেতা যখন পদদলিত হওয়া এবং তাতে এক জনের মৃত্যুর কথা শুনেছিলেন, তখন তিনি বলেছিলেন, এখন সিনেমাটি হিট হবে!’’
ওই সমস্ত অভিযোগ অবশ্য রটনা বলে উড়িয়ে দিয়েছেন ‘পুষ্পা’খ্যাত অভিনেতা। তিনি বলেন, ‘‘সে দিন আমাকে বলা হয়, সিনেমাহলে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে পুলিশ। তারা আমার গাড়িকে রাস্তা থেকে হলের গেট পর্যন্ত এগিয়েও দিয়েছে। ভিড় হালকা করার জন্য যে মুহূর্তে পুলিশ এবং নিরাপত্তাকর্মীরা আমায় এসে বলেছেন দর্শকদের উদ্দেশে হাত নাড়তে, আমি তাই করেছি।’’ তাঁর কর্তব্যজ্ঞান নিয়ে যে প্রশ্ন উঠেছে, তা নিয়ে অল্লু বলেন, ‘‘আমি সিনেমাহলে একা যাইনি। আমার সঙ্গে আমার স্ত্রী এবং দুই সন্তান ছিল। আপনাদের কারও মনে হয় যে দুই শিশুকে নিয়ে আমি কোনও কাণ্ডজ্ঞানহীন আচরণ করব? আমি এতটা অসংবেদনশীল?’’ ওই পরিস্থিতির জন্য আবারও রেবন্তের পুলিশের কোর্টেই বল ঠেলেছেন অভিনেতা। তিনি এ-ও জানান, জখম কিশোরকে দেখতে হাসপাতালে যেতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু পুলিশ তাঁকে বলেছে, তাতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। তিনি সেটাই মেনেছেন। নিজে যেতে না-পেরে বাবাকে হাসপাতালে পাঠিয়েছিলেন। অল্লুর কথায়, ‘‘আমি তো বলেইছি, আমরা দুর্ঘটনাগ্রস্ত পরিবারের দায়িত্ব নেব।’’ তার পর আবারও মুখ্যমন্ত্রীর নাম না-করে তাঁকে ঘিরে বিতর্ক নিয়ে ‘পুষ্পা’র অভিনেতা বলেন, ‘‘এ ভাবে আমার চরিত্রহননের যে চেষ্টা চলছে তা সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy