দখল: স্বাস্থ্যকেন্দ্রের প্রবেশপথ আগলে সংসার। নিজস্ব চিত্র
ভবনের প্রবেশপথের এক ধারে কাঠের চৌকি পাতা। তার উপরে শুয়ে দু’তিন জন কমবয়সি ছেলেমেয়ে। আর এক পাশের একটি চৌকিতে পাতা মাদুর। চৌকির পাশের কয়লার উনুনে তখন চলছে রান্নাবান্না। এমনই অবস্থা কলকাতা পুরসভার ৪৭ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত ১৬ নম্বর যদুনাথ রোডের পুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র ভবনের।
জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের আর্থিক সহায়তায় কলকাতার প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে এন এইচ ইউ এম (ন্যাশানাল আরবান হেল্থ মিশন) এর কেন্দ্র তৈরি হচ্ছে। কয়েক কোটি টাকা খরচ করে চিকিৎসা পরিষেবার বিভিন্ন সরঞ্জামও ওই সব কেন্দ্রে রাখা হচ্ছে। তেমনই একটি কেন্দ্র রয়েছে ওই ভবনটিতে। কিন্তু সেই ভবন কার্যত ঘেরা দখলদারে। পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের অফিসারদের দাবি, কলকাতায় কোনও পুর স্বাস্থ্য কেন্দ্রের এমন অবস্থা নেই। রোগী, চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীদের অসুবিধা সত্ত্বেও বছরের পর বছর ধরে এ ভাবেই রয়েছে দখলদারদের রাজত্ব। অথচ ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সুমন সিংহ শাসক দলেরই। তবুও পরিস্থিতির কোনও পরিবর্তন হচ্ছে না বলে জানাচ্ছেন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের একাধিক কর্মী। সেখানকার চিকিৎসক অর্পণ মিত্রের কথায়, ‘‘এ নিয়ে কিছু বলার অধিকার আমার নেই। নিজে যা দেখলেন, সে বিষয়ে পুর কর্তাদের বরং জিজ্ঞাসা করুন।’’
সম্প্রতি এক সকালে ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সামনে গিয়ে দেখা গেল, সদর দরজা আগলে চলছে সংসারের কর্মব্যস্ততা। ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পাশেই কাউন্সিলর সুমন সিংহের ওয়ার্ড অফিস। তিনি কোথায় জানতে চাইলে এক কর্মী জানান, বিকেল তিনটের পরে আসুন। এর পরে ফোনে যোগাযোগ করা হলে কাউন্সিলর সুমন বলেন, ‘‘দখলদারদের সরানো নিয়ে বারবার পুলিশকে বলেছি। কিন্তু কাজ হচ্ছে না। এ বার পুলিশ কমিশনারের কাছে লিখিত অভিযোগ জানাব।’’ যদিও এলাকার একাধিক বাসিন্দার অভিযোগ, কাউন্সিলরের সদিচ্ছা থাকলে দখলদার হটানো যেত। তিনি নিজে চাইছেন না বলেই বছরের পর বছর ধরে এমন ছবি রয়ে গিয়েছে।
এ বিষয়ে পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত এক অফিসার জানান, বছর দুই আগে ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির পরিকাঠামো উন্নত করার সময়ে ওই সমস্যার কথা তোলা হয়েছিল। ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলরকে বলা হয়েছিল সমস্যা মেটাতে ব্যবস্থা নিতে। তার পরেও কিছু হয়নি বলে পুরসভায় অভিযোগও জমা পড়েছে।
শহরের শপিং মলের সামনে থেকে দখলদার সরাতে পুরসভা যতটা তৎপর, স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মতো গুরুত্বপূর্ণ ভবনের সামনে থেকে অবৈধ বাস তুলতে ততটা নয়। এমনটা কেন? এই প্রশ্ন ঘোরাফেরা করছে পুরসভার অন্দরেই।
বিষয়টি নিয়ে অবগত কলকাতার ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সামনে দখলদার বছরের পর বছর ধরে কেন বহাল রয়েছে? প্রশ্ন শুনে খানিকটা অস্বস্তিতে অতীনবাবু। বললেন, ‘‘স্থানীয় কাউন্সিলরকে ফের বলা হবে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সামনে থেকে ওই দখলদারদের সরিয়ে দেওয়ার জন্য।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy