এত দিন স্কুল স্তরের সমস্ত ব্যর্থতার দায় সরকার অথবা পড়ুয়াদের দিকেই ঠেলে দিত শিক্ষামহল। সম্প্রতি এক সমীক্ষায় যে ভাবে শিক্ষকদের একটি বড় অংশকে কাঠগড়ায় তোলা হচ্ছে, তাতে বিব্রত শিক্ষকেরা। কেউ সাফাই দিলেন তো কেউ অভিযোগ তুললেন সরকারের বিরুদ্ধে। বাড়তি কাজ করতে গিয়ে পড়ানোর কাজেই যে কম মন দেওয়া হচ্ছে, সেটা পরোক্ষে মানলেন অনেকেই। একই ভাবে পাঠ্যক্রমকে অবৈজ্ঞানিক বলেও আখ্যা দিলেন শিক্ষকেরা।
সরকারি, সরকার পোষিত ও সরকার সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলে প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিক স্তরে পঠনপাঠনের ত্রুটি-বিচ্যুতি খুঁজতে উদ্যোগী হয়েছিল স্টেট কাউন্সিল অব এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং (এসসিইআরটি)। সেই সমীক্ষায় রাজ্যের অধিকাংশ পড়ুয়ার দৈন্য অবস্থাই ফুটে উঠেছে। তার জন্য নানা কারণের পাশাপাশি শিক্ষকদের গাফিলতিও উঠে এসেছে বলে খবর। সমীক্ষায় বলা হয়েছে, শিক্ষকেরা শুধু বই দেখে পড়ে যান। পড়ুয়ারা সেটা আদৌ বুঝল কি না, তা ভেবেই দেখেন না শিক্ষকেরা।
নিখিলবঙ্গ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণপ্রসন্ন ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘যত দোষ শিক্ষকদের! ছ’বছর ধরে স্কুলে শিক্ষক নিয়োগ হয়নি। অবৈজ্ঞানিক পাঠ্যক্রমে পড়ুয়াদের উন্নতি হবে কোথা থেকে?’’ শিক্ষামহলের একাংশের ব্যাখ্যা, শিক্ষকদের উপরে দোষারোপ না করে পরিকাঠামোর উন্নতি প্রয়োজন। প্রধান শিক্ষকেরা প্রশাসনিক কাজ করতে গিয়ে আদতে আমলায় পরিণত হয়েছেন। বহু জেলায় পাঠ্যবই পৌঁছতেই কয়েক মাস পেরিয়ে গিয়েছিল। তবে বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, ‘‘সময়ের সঙ্গে শিক্ষকদের মানসিকতার পরিবর্তন করতে হবে। শিক্ষকতার কাজে দায়বদ্ধতা জরুরি।’’ তবে স্কুলশিক্ষা দফতরের এক কর্তা সাফ জানান, পাঠ্যক্রম যথেষ্টই বৈজ্ঞানিক এবং কেন্দ্রীয় সমীক্ষায় তৃতীয় ও পঞ্চম স্তরে এ রাজ্যের গড় অনেকটাই ভাল। এর থেকেই প্রমাণ, পাঠ্যক্রম একেবারেই অবৈজ্ঞানিক নয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy