চিত্র ১) মোবাইল ফোনের একগুচ্ছ সিম কার্ড। সেগুলিকে কাগজে মুড়িয়ে ভরা হল গোল করে কাটা থার্মোকলের ভিতরে। তার উপরে সেলোটেপ। দেখতে বলের মতো। জেলের ভিতরে সেগুলি ছুড়ে দিতেই টপাটপ কুড়িয়ে নিলেন বন্দিরা। ব্লেড দিয়ে সেই বল কাটতেই বেরিয়ে পড়ল সিম কার্ড।
চিত্র ২) আদালত থেকে ফিরেছেন বন্দি। জেলে দেহ তল্লাশিতে মিলল না কিছুই। একটু পরেই ওই বন্দির নামে কর্তৃপক্ষের কাছে বেআইনি জিনিস রাখার অভিযোগ জমা পড়ল। তল্লাশির পরে দেখা গেল, বন্দির মলদ্বারে লুকনো নেশার ট্যাবলেট। সঙ্গে টাকাও।
চিত্র ৩) জেলে পৌঁছল কয়েক কেজি চিঁড়ের প্যাকেটের মধ্যে লুকনো দু’টি মোবাইল এবং অনেকগুলি সিম কার্ড। ফলের প্যাকেটের মধ্যেও রাখা নেশার সরঞ্জাম।
চিত্র ৪) জেলের পাঁচিলের পাশে এসে গতি কমল মোটরবাইকের। বাইক-আরোহী গামছায় জড়িয়ে জেলের ভিতরে কিছু ছুড়ে দিলেন। জিনিসটি হাতে এল কারারক্ষীদের। দেখা গেল, গামছার আড়ালে রয়েছে মদ-গাঁজা আর মোবাইল।
বেআইনি জিনিস পাচারের এমনই খণ্ড খণ্ড ছবি উঠে এসেছে দমদম, আলিপুর ও প্রেসিডেন্সি জেল থেকে। কারারক্ষীদের তৎপরতায় এই ধরনের পাচার মাঝেমধ্যে আটকানো গেলেও আইনের ফাঁক গলে বেরিয়ে যান অভিযুক্তেরা। কারারক্ষীদের একাংশ জানিয়েছেন, পাঁচিল টপকে বেআইনি জিনিস ভিতরে আসেই। আদালত থেকে ফেরার পথেও বন্দিরা অনেক কিছু লুকিয়ে নিয়ে আসেন। আদালতে বন্দিদের নিয়ে যাওয়া-আসার দায়িত্বে থাকা পুলিশকর্মীদের চোখকে ফাঁকি দিয়েই বেশির ভাগ ঘটনা ঘটে। কারও অভিযোগ, পুলিশকর্মীদেরই একাংশের যোগসাজশে এই পাচার হয়। প্রতি ক্ষেত্রেই স্থানীয় থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। কিন্তু কঠোর আইন না থাকায় কার্যত কোনও ব্যবস্থাই নেওয়া যায় না বলে জানাচ্ছেন কারা দফতরের আধিকারিকেরা।
জেল কর্তৃপক্ষের দাবি, ‘‘কারারক্ষীরা তৎপরতার সঙ্গে কাজ করেন বলেই বন্দিদের থেকে বেআইনি সামগ্রী উদ্ধার হয়।’’ প্রসঙ্গত, আদালতের পথে বন্দিদের সঙ্গে পরিজনেরা দেখা করেন। কিন্তু এ ভাবে দেখা করা যায় না বলেই দাবি কারা দফতরের আধিকারিকদের একাংশের। কারা কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, ‘‘বেআইনি সামগ্রী পাচার বন্ধ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু সব সময়ে নজরদারি এক রকম হয় না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy