সিগন্যালে সার দিয়ে দাঁড়িয়ে গাড়ি। একটির সামনে এসে চালকের কাছে এক যুবকের কাতরোক্তি, ‘‘দাদা, একটু জল দেবেন? বড় তেষ্টা পেয়েছে।’’ চালক ডান দিকে, নীচে রাখা জলের বোতল তোলার জন্য ঝুঁকতেই অন্য দিকের জানলা দিয়ে হাত বাড়িয়ে আর এক জন বাঁ দিকের সিটে রাখা মোবাইল নিয়ে ধাঁ। ‘তৃষ্ণার্ত’ তখনও ভাবলেশহীন মুখে দাঁড়িয়ে। হইচই শুরু হতে এক ফাঁকে সরে পড়বে সে-ও।
অনেক সময়ে আবার এ কাজে এক জনই যথেষ্ট। সিগন্যালে গাড়ি দাঁড়ালেই তক্কে তক্কে থাকা, কখন কোন গাড়ির চালক একটু অন্যমনস্ক হচ্ছেন। চট করে দেখে নেওয়া চালকের পাশে, সিটের উপরে দামি কিছু রয়েছে কি না। আর তার পরেই সুযোগ বুঝে হাতসাফাই।
মাস কয়েক হল এই একই কায়দায় মোবাইল, ল্যাপটপ, টাকা ভর্তি ব্যাগ ও অন্য দামি জিনিস খোয়া গিয়েছে সিগন্যালে দাঁড়িয়ে থাকা অনেক গাড়ি থেকে। পুলিশ জানায়, মূলত এ ধরনের অপরাধ হয়েছে রবীন্দ্র সরোবর লাগোয়া এলাকায়। শুক্রবার সন্ধ্যায় সাদার্ন অ্যাভিনিউয়ে একটি ট্যাক্সি থেকে মোবাইল হাপিসের ঘটনাতেই এ ধরনের একটি চক্রের সন্ধান পেয়েছে পুলিশ। গ্রেফতার হয়েছে সুরজিৎ মণ্ডল ও অরুণ ভকত নামে ওই চক্রের দু’জন। উদ্ধার হয়েছে একটি মোবাইলও। তবে চক্রে আরও কিছু লোকজন রয়েছে এবং
শহরে এমন একাধিক চক্র রয়েছে বলে অনুমান পুলিশের।
পুলিশ সূত্রে খবর, ওই দিন সাফারি পার্কের কাছে সিগন্যালে দাঁড়িয়ে ছিল ট্যাক্সিটি। চালকের বাঁ দিকের জানালার কাচ নামানো ছিল। সিটে রাখা একটি মোবাইল। দূর থেকে তা দেখে সুরজিৎ। ট্যাক্সিচালক অন্যমনস্ক হতেই মুহূর্তে হাত বাড়িয়ে ফোন নিয়ে পালায় সে। রাস্তায় তখন বাইকে টহল দিচ্ছিলেন লেক থানার এএসআই ভবন সরকার। ট্যাক্সিচালক তাঁকে সব জানালে সুরজিতের পিছু নেন তিনি। উর্দিধারী পুলিশ দেখে যাতে ওই যুবক পালিয়ে না যায়, তাই রাস্তার পাশে বাইক দাঁড় করিয়ে একটি গাড়ি থামান তিনি। চালককে অনুরোধ করেন ওই যুবকের পিছু নিতে। পরে রবীন্দ্র সরোবর লাগোয়া এলাকা থেকে তাকে ধরে পুলিশ। জেরায় হদিস মেলে অরুণের। তাকেও ধরে পুলিশ। ধৃতদের কাছে পুলিশ জেনেছে, রাসবিহারী অ্যাভিনিউয়েও একই ভাবে দুষ্কর্ম করেছে তারা। পুলিশের অবশ্য বক্তব্য, এ ধরনের ‘অপারেশন’ এক ব্যক্তি নির্ভর নয়, বরং ‘টিম ওয়ার্ক’।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy