কমিকস মেলায় উৎসাহীরা। শনিবার। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক
নন্টে-ফন্টে, ব্যাটম্যান বা স্পাইডারম্যানের কমিকস নয়। এই কমিকসের গল্পটা এক সাধারণ মৎস্যজীবীকে নিয়ে। নানা রকম প্রতিবন্ধকতাকে অতিক্রম করে ওই মৎস্যজীবী কী ভাবে নদী থেকে মাছ ধরে বাজারে নিয়ে আসেন এবং তার পরে সেই মাছ বিক্রি করেন, কমিকসের মাধ্যমে বলা হয়েছে সেই গল্প। কলকাতার বিভিন্ন মাছের বাজারের ছবিও ফুটে উঠেছে তাঁর কমিকসে। আবার ‘ডার্ক ডেস্টিনি’ নামে কমিকসে দেখা যাচ্ছে, দেশ ভাগের সময়কার এক কিশোরের নানা ঘাত-প্রতিঘাতের গল্প।
এমনই নানা নতুন নতুন বিষয়ের সম্ভার নিয়ে বসেছিলেন কলকাতার কমিকস-শিল্পীরা। এঁরা কেউই বাঁধাধরা চাকরি করেন না। স্বাধীন ভাবে কাজ করেন। তাঁরা জানালেন, সর্বভারতীয় একটি সংগঠন দেশ জুড়ে বিভিন্ন শহরে ফ্রিল্যান্স কমিকস-শিল্পীদের নিয়ে কমিকস মেলা বসায়। দিল্লি, মুম্বই, গোয়া ঘুরে এই প্রথম কলকাতায় বসেছিল এমনই এক ‘অল্টারনেটিভ’ কমিকস মেলা। শিল্পীরা জানালেন, দিল্লি বা মুম্বইয়ে এই ‘ইন্ডিয়া কমিকস ফেস্ট’-এ প্রচুর পাঠক সমাগম হয়।
এই মেলায় নিজের কমিকসের সম্ভার নিয়ে বসেছিলেন হর্ষমোহন চট্টরাজ। তিনি বলেন, ‘‘আমরা একেবারেই স্বাধীন শিল্পী। অন্যের গল্প বা অন্যের চরিত্র নিয়ে ছবি আঁকি না। নিজেরাই গল্প বানাই, নিজেরাই ছবি আঁকি।’’ পাঠকদের মানসিক ভাবে উদ্বুদ্ধ করার জন্য কমিকস তৈরি করেছেন কলকাতার শিল্পী শ্রেয়া সেন। কমিকসের মাধ্যমেই তিনি দেখাচ্ছেন, কী ভাবে মনের জোর বাড়ানো যায়।
পেশায় ইঞ্জিনিয়ার অমর্ত্য তালুকদার অবসর সময়ে কমিকস আঁকেন। তাঁর কমিকসের বিষয় পুরুষের অধিকার। বইয়ের নাম ‘মেল রাইটস কমিকস’। অমর্ত্য বললেন, ‘‘শুধু মেয়েরা নয়, ছেলেরাও পাচার হয়ে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে সচেতন করতে কমিকসের মাধ্যমে পুরো বিষয়টি বুঝিয়েছি। পুরুষদের অবসাদ নিয়েও কমিকস লিখেছি। এমনকি, ছেলেদের প্রস্টেট ক্যানসার কী ভাবে আটকানো যায়, সেটাও আমার কমিকসের বিষয়।’’
এই নতুন ধরনের কমিকসের সন্ধান পেয়ে রীতিমতো খুশি পার্ক স্ট্রিটের যুবক অনিন্দ্য বসু। বললেন, ‘‘কমিকসের যে এত বিস্তৃত দুনিয়া আছে, তা আগে জানা ছিল না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy