প্রতীকী ছবি।
সারা রাজ্যের বিভিন্ন কলেজে শূন্য শিক্ষকপদের সংখ্যা নিয়োগ-বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হল না কেন, ওই সব পদে আবেদনের ফি কেন বাড়ানো হল ইত্যাদি প্রশ্ন তুলছেন প্রার্থীরা। এই বিষয়ে সোমবার রাজ্য কলেজ সার্ভিস কমিশন (সিএসসি) এবং উচ্চশিক্ষা দফতরে স্মারকলিপি দিয়েছে ডেমোক্র্যাটিক রিসার্চ স্কলার্স অর্গানাইজেশন (ডিআরএসও)। অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর পদে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের বয়স এবং ইন্টারভিউ খাতে নম্বর নিয়ে যা বলা হয়েছে, সেই সব বিষয়েও আপত্তি আছে প্রার্থীদের। তবে এই সব আপত্তি-অভিযোগের কোনও সারবত্তা নেই বলে এ দিন জানিয়ে দিয়েছেন সিএসসি-র চেয়ারম্যান দীপক কর।
রাজ্যের সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত কলেজগুলিতে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে ৩১ ডিসেম্বর। অভিযোগ, বিজ্ঞপ্তিতে শূন্য পদের সংখ্যা কত, তা জানানো হয়নি। কোন বিষয়ে, কোন ক্যাটেগরিতে কত পদ খালি আছে— জানানো হয়নি তা-ও। আগে জেনারেল প্রার্থীদের আবেদন ফি ছিল দেড় হাজার এবং অন্যদের ক্ষেত্রে তা ছিল ৭৫০ টাকা। এ বার জেনারেল প্রার্থীদের আবেদন ফি দু’হাজার টাকা এবং অন্যদের ক্ষেত্রে এক হাজার টাকা করা হয়েছে।
জেনারেল ক্যাটেগরির প্রার্থীদের পিএইচ ডি থাকলে আগে আবেদনের বয়ঃসীমা ছিল ৪২ বছর। অন্যদের ক্ষেত্রে তা ছিল ৩৭। এ বার সকলেরই বয়ঃসীমা ৪০ করে দেওয়া হয়েছে। তবে অ্যাড-হক ও স্টেট এডেড কলেজ টিচারদের (স্যাক্ট) আবেদনের বয়ঃসীমা ৪৭ রেখে দেওয়া হয়েছে আগের মতোই। ডিআরএসও-র তরফে অর্ঘ্য দাস এ দিন বলেন, ‘‘আমরা মনে করি, উচ্চশিক্ষায় বয়স কোনও যোগ্যতামান হতে পারে না। শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকলে অবসরের নির্ধারিত সময়ের আগে যে-কোনও বয়সেই নিয়োগ করা উচিত।’’
নিয়োগের জন্য ইন্টারভিউয়ে কত নম্বর বরাদ্দ থাকবে, তা নিয়েও অভিযোগ উঠছে। অ্যাকাডেমিক স্কোর এবং গবেষণার জন্য কত নম্বর থাকবে, তা-ও স্পষ্ট নয়। ২০১৮ সালে কলেজে শিক্ষক নিয়োগের ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল। অভিযোগ উঠছে, ২০১৮-য় কমিশনের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী তৈরি নিয়োগের প্যানেলের বৈধতা শেষের আগেই এ বার বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে।
অবিলম্বে শূন্য পদের সংখ্যা জানানো, ইন্টারভিউ প্যানেলের হাতে থাকা নম্বর ৪০ থেকে কমিয়ে ১৫ করা, আবেদনের বয়ঃসীমায় বৈষম্য দূর করা এবং আবেদনের ফি কমানোর দাবি তুলেছে ডিআরএসও। সিবিসিএস পদ্ধতিতে পঠনপাঠনের জন্য কলেজগুলিতে হাজার হাজার শিক্ষক প্রয়োজন। সেই শিক্ষকপদ অনুমোদন করে সেখানে স্বচ্ছ ভাবে নিয়োগের দাবিও জানানো হয়েছে এ দিনের স্মারকলিপিতে।
সিএসসি-র চেয়ারম্যান দীপক করের বক্তব্য, আবেদনের বয়ঃসীমা কমিশন ঠিক করে না। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বা ইউজিসি-র নিয়োগ বিধি অনুসারে উচ্চশিক্ষা দফতর যে নির্দেশ কমিশনকে দেয়, কমিশন সেটাই জানায়। এ বারেও উচ্চশিক্ষা দফতর গত ১৮ ডিসেম্বর এই বিষয়ে যে নির্দেশ দিয়েছে, সেই অনুযায়ী আবেদনের বয়স জানানো হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে। কমিশন-প্রধান জানাচ্ছেন, বিজ্ঞপ্তিতে কখনওই শূন্য পদের উল্লেখ থাকে না। চূড়ান্ত প্যানেল প্রকাশের আগে তা জানানো হয়।
ইন্টারভিউ প্যানেলের হাতে থাকা নম্বর ৪০ থেকে কমিয়ে ১৫ করার দাবির বিষয়ে দীপকবাবুর বক্তব্য, আবেদনকারীর শিক্ষাদানের নৈপুণ্য খাতে ১০%, প্রার্থীর বিষয়জ্ঞানের খাতে ১০% এবং ইন্টারভিউয়ে ২০%— বিশেষজ্ঞ কমিটির সামনে পুরো বিষয়টি এ ভাবেই বিচার করা হয়। কাজটা কত স্বচ্ছতার সঙ্গে হয়, নতুন যাঁরা চাকরি পেয়েছেন, তাঁরা সেটা জানেন। ২০১৮ সালের প্যানেল সম্পূর্ণ বাতিল হয়নি বলেও জানান দীপকবাবু। তিনি বলেন, ‘‘করোনা পরিস্থিতিতে বেশ কিছু প্যনেলের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছিল। তার বেশির ভাগের মেয়াদই ডিসেম্বরে শেষ হয়ে গিয়েছে। বাংলা, রসায়ন, ভূগোলের মেয়াদ রয়েছে আগামী ৬ মার্চ পর্যন্ত।’’
আবেদনের ফি বৃদ্ধির অভিযোগ সম্পর্কে কমিশনের বক্তব্য কী? ‘‘ফি না-বাড়ালে চালাব কী করে,’’ পাল্টা প্রশ্ন সিএসসি-প্রধানের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy