—প্রতীকী চিত্র।
বিচারক, আইনজীবী, বিচারপ্রার্থী, আদালতের কর্মীরা অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁদের চিকিৎসা দেওয়ার জন্য ব্যাঙ্কশাল আদালতে রয়েছে মেডিক্যাল ইউনিট। কিন্তু ‘অসুস্থ’ সেই মেডিক্যাল ইউনিটই!
কয়েকটি শয্যা, রক্তচাপ মাপার যন্ত্র, অক্সিজেনের মাত্রা মাপার যন্ত্র, ওজন মাপার যন্ত্র।
একটি হুইলচেয়ার এবং কিছু ওষুধপত্র। মাত্র এক জন চিকিৎসক এবং এক জন ফার্মাসিস্ট। এই নিয়েই চলছে ওই মেডিক্যাল ইউনিট। বার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক বিজয়শঙ্কর চৌবে, অ্যাডভোকেট অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক প্রবীর মুখোপাধ্যায়দের অভিযোগ, সেখানে চিকিৎসা পরিষেবা কিছুই মেলে না। ওষুধপত্রও প্রায় মেলে না বললেই চলে। একই অভিযোগ পশ্চিমবঙ্গ ল’ ক্লার্ক অ্যাসোসিয়েশনের ব্যাঙ্কশাল ইউনিটের সম্পাদক বাপন চক্রবর্তীরও। আইনজীবী অরূপ দাস বলেন, ‘‘ছোটখাটো জ্বর, মাথাব্যথার ওষুধ মেলে ঠিকই। কিন্তু কারও বুকে ব্যথা বা শ্বাসকষ্ট হলে তার ওষুধপত্র মেলে না। ওই সব ক্ষেত্রে প্রাথমিক চিকিৎসাটুকুও মেডিক্যাল ইউনিটে পাওয়া যায় না।’’
ব্যাঙ্কশাল আদালত চত্বরেই হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন আইনজীবী ইউসুফ হোসেন।
তিনি বলেন, ‘‘আমাকে আদালতের এক প্রবীণ আইনজীবীর গাড়িতে করে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। বুকে স্টেন্ট বসানো হয়। অন্য আইনজীবীরা আমাকে কোর্টের মেডিক্যাল ইউনিটে না নিয়ে গিয়ে বাঁচিয়ে দিয়েছেন।’’ হৃদ্রোগে মৃত্যুর ঘটনাও আদালতে ঘটেছে। বিজয়শঙ্কর জানান, বছরখানেক আগে ছ’নম্বর কোর্টে এক অভিযুক্ত হৃদ্রোগে আক্রান্ত হন। তখনও কোনও চিকিৎসা পরিষেবা মেলেনি। গাড়িতে করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে মৃত্যু হয় ওই ব্যক্তির। বিজয়শঙ্করের অভিযোগ, ‘‘অসুস্থদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য অ্যাম্বুল্যান্সও নেই। এখানে একটা অ্যাম্বুল্যান্সের খুবই দরকার।’’
বিজয়শঙ্কর, বাপনদের আরও অভিযোগ, এজলাসে বা আদালত চত্বরে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে মেডিক্যাল ইউনিটের চিকিৎসক অমিতাভ সরকারকে খবর দেওয়া হলেও তিনি আসেন না। রোগীকেই ইউনিটে নিয়ে যেতে বলেন। অমিতাভ অবশ্য বলেন, ‘‘কেউ
অসুস্থ হয়ে পড়লে ডাক্তার সেখানে যান না। রোগীকেই মেডিক্যাল ইউনিটে আসতে হবে। এটাই সার্ভিস রুল। অসুস্থকে আনার জন্য তো হুইলচেয়ার রয়েছে।’’ চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে তিনি সাফ জানাচ্ছেন, ওই স্বল্প পরিকাঠামোয় সব পরিষেবা দেওয়া সম্ভব নয়। তাঁর কথায়, ‘‘ঠিক পরিষেবার জন্য অন্তত দু’জন ডাক্তার, সিস্টার, টেকনিশিয়ান, গ্রুপ ডি স্টাফ, ইসিজি মেশিন, অক্সিজেন সিলিন্ডার ইত্যাদি দরকার। সেই সব ব্যবস্থা এখানে নেই।’’
মেডিক্যাল ইউনিটের পরিকাঠামোর যে উন্নতির দরকার, তা মানছেন বাপন চক্রবর্তী। তিনি জানান, তাঁদের সংগঠনের তরফে এ নিয়ে কলকাতা নগর দায়রা আদালতের মুখ্য বিচারককে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে। সেখানে একাধিক যন্ত্রপাতি এবং টেকনিশিয়ান, নার্সের প্রয়োজনীয়তার কথা জানানো হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy