কলকাতা আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে, আদৌ কি এমনটা করা যায়? ছবি: প্রতীকী
ময়নাতদন্তের জন্য পাঁচটি দেহ এসেছিল হাসপাতালের মর্গে। কিন্তু সেই সব দেহই বিনা অনুমতিতে চলে গেল অ্যানাটমি বিভাগে। ডাক্তারি পড়ুয়ারা ওই দেহগুলি কাটাছেঁড়াও করেন বলে অভিযোগ। অস্ত্রোপচারের ‘পাঠ’ শেষে সেই দেহ আবার পাঠানো হয় মর্গে। হয় ময়নাতদন্ত। তার পর দেহগুলি তুলে দেওয়া হয় পরিবারের হাতে। কলকাতা আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে, আদৌ কি এমনটা করা যায়? যে কারণে ময়নাতদন্ত করানো হচ্ছে, মর্গে আনা দেহ অ্যানাটমির ক্লাসে পৌঁছলে তো লোপাট হয়ে যেতে পারে তার প্রমাণও। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যদিও এ সবের কোনও সদুত্তর দেননি। রাজ্যের শিক্ষা স্বাস্থ্য অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখব।’’ একই কথা জানিয়েছেন রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম। তিনি বলেন, ‘‘এত আগে কিছু বলা যাবে না। কী ঘটেছিল, সেই নিয়ে রিপোর্ট চেয়েছি।’’
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ৫ জানুয়ারি আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের ইএনটি বিভাগে অ্যানাটমির একটি কর্মশালা ছিল। ডিসেম্বরের শুরুতে ফরেন্সিক বিভাগের প্রধানের কাছে আবেদন জানায় ইএনটি বিভাগ। ওই ক্লাসের জন্য তাদের টাটকা দেহের প্রয়োজন। সূত্রের খবর, হাসপাতালের ফরেন্সিক বিভাগের তৎকালীন প্রধান জানিয়ে দেন, দানের দেহ কর্মশালায় পাঠানো যেতে পারে। কিন্তু ময়নাতদন্তের দেহ কর্মশালায় পাঠানো যাবে না।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, এর পর গত ৩০ ডিসেম্বর ফের দেহ চেয়ে অধ্যক্ষের কাছে আবেদন করে ইএনটি বিভাগ। তত দিনে ফরেন্সিক বিভাগে প্রধান বদল হয়েছেন। এ বার ময়নাতদন্তের জন্য আসা দেহ কর্মশালায় পাঠানো হয়। এই নিয়েই শুরু হয় বিতর্ক। প্রশ্ন উঠছে, কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়েই কি দেহ দেওয়া হয়েছিল? হাসপাতাল কি নিজে থেকে এই পদক্ষেপ করতে পারে? সাধারণত অস্বাভাবিক মৃত্যুর ক্ষেত্রে দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে। কিন্তু সেই দেহ ময়নাতদন্তের আগে কর্মশালায় ব্যবহার করা হলে, ‘প্রমাণ’ লোপাট হতে পারে বলেও অভিযোগ।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এ নিয়ে মুখ খোলেননি। ফরেন্সিক বিভাগের বর্তমান প্রধান প্রবীর চক্রবর্তী বলেন, ‘‘আমি কিছু বলব না। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ জবাব দেবেন।’’ হাসপাতালের অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ এই নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
এ প্রসঙ্গে আরজি করের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান সুদীপ্ত রায় বলেন, ‘‘চিকিৎসা বিজ্ঞানের স্বার্থেই এটা করা হয়েছে। কারও কোনও দেহ থেকে অঙ্গ নিয়ে নেওয়া হয়নি। এগুলি তো দাবিদারহীন দেহও হতে পারে। কোনও রোগী যখন হাসপাতালে ভর্তি থাকেন, তখনও তো অনেক চিকিৎসক তাঁকে দেখে যান। তখন তো পরিবারের অনুমতি নেওয়া হয় না। এ ক্ষেত্রে কেন নিতে হবে, বুঝতে পারছি না!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy