Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
Cyclone Amphan

পুর ‘ব্যর্থতা’ নিয়ে এ বার বিঁধলেন সাধন

সম্প্রতি কলকাতার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় পুরসভার ব্যর্থতা নিয়ে সরব হয়েছিলেন। তাঁর বক্তব্য ছিল, পূর্বাভাস থাকা সত্ত্বেও পুর প্রশাসন পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যর্থ হয়েছে।

মানিকতলার বিধায়ক সাধন পাণ্ডে।—ছবি সংগৃহীত।

মানিকতলার বিধায়ক সাধন পাণ্ডে।—ছবি সংগৃহীত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০২০ ০২:০৭
Share: Save:

সমালোচনায় শুধু বিরোধীরাই যে সরব হয়েছেন, তা নয়। আমপান মোকাবিলায় পুরসভার ‘ব্যর্থতা’ নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে খোদ শাসক দলের অন্দরেও। মঙ্গলবার যা স্পষ্ট হয়ে গেল রাজ্যের প্রবীণ মন্ত্রী তথা মানিকতলার বিধায়ক সাধন পাণ্ডের মন্তব্যে। এ দিন কোনও রাখঢাক না-করেই সাধনবাবু বলেন, ‘‘এত বড় বিপর্যয় মোকাবিলায় কলকাতার বিধায়ক-মন্ত্রীদের কাজে লাগানো উচিত ছিল পুর প্রশাসকের। কিন্তু তাঁদের ডেকে কোনও বৈঠক করেননি তিনি।’’

সাধনবাবুর ওই মন্তব্য শুনে তাঁকেও একহাত নিতে ছাড়েননি পুর প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, ‘‘রাস্তায় নেমে কাজ করাটাই এখন আমাদের মূল উদ্দেশ্য, সাধনদার মতো ঘরে বসে সমালোচনা করা নয়। কাজ করার মানসিকতা থাকলে তিনি পুরসভায় এসে জানাতে পারতেন তাঁর পরামর্শ।’’

সাধনবাবুর সঙ্গে অবশ্য একমত নন পাশের কেন্দ্রের বিধায়ক তথা মন্ত্রী শশী পাঁজা। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমার তো কাজে কোনও অসুবিধা হয়নি। পুরসভার অফিসার ও কোঅর্ডিনেটরদের সঙ্গে একযোগে কাজ করছি। করোনা প্রতিরোধেও পুরসভার সঙ্গে কাজ করা হচ্ছে।’’ বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় অবশ্য বিতর্কে না গিয়ে বলেন, ‘‘ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি! মানুষের সমস্যা সমাধানে রাত-দিন কাজ করছি। এর পরে কে ডাকল, কে ডাকল না, অতশত ভাবার সময় নেই।’’

আরও পড়ুন: অপহরণ-শঙ্কা নিয়েই কাজে বিদ্যুৎ-যোদ্ধারা

সম্প্রতি কলকাতার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় পুরসভার ব্যর্থতা নিয়ে সরব হয়েছিলেন। তাঁর বক্তব্য ছিল, পূর্বাভাস থাকা সত্ত্বেও পুর প্রশাসন পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যর্থ হয়েছে। এ দিন কার্যত তারই প্রতিধ্বনি শোনা গেল সাধনবাবুর মুখেও।

করোনা মোকাবিলায় এমনিতেই জেরবার প্রশাসন। তার উপরে এসে পড়েছে আমপান। তছনছ করে দিয়েছে শহরকে। বিদ্যুৎ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত। ভেঙে পড়েছে হাজার ছয়েক গাছ। বিদ্যুৎ ও জলের দাবিতে চলছে গণবিক্ষোভ। এরই মধ্যে শাসক দলের মন্ত্রীর এই মন্তব্যে অস্বস্তিতে পুর প্রশাসন।

বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের জন্য সিইএসসি-কেই দুষেছে নবান্ন এবং পুরসভা। সিইএসসি কর্তৃপক্ষকে ফিরহাদ বলেছেন, ‘‘এনাফ ইজ় এনাফ।’’ সেই প্রসঙ্গ তুলে সাধনবাবু বলেন, ‘‘এনাফ ইজ় এনাফ বলে ছেড়ে দেওয়া হবে কেন? উনি তো মন্ত্রীও। সিইএসসি-র বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না কেন? এত বড় শহরে একটি মাত্র বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা থাকবে কেন? কেনই বা তারা একচেটিয়া ব্যবসা করার সুযোগ পাবে?’’ তাঁর মতে, একাধিক সংস্থা বিদ্যুৎ সরবরাহের দায়িত্বে থাকলে দামও নিয়ন্ত্রণে থাকে। এ প্রসঙ্গে মুম্বইয়ের উদাহরণ টানেন তিনি।

আরও পড়ুন: আমপানের রোষ থেকে মুক্তি পেল না বটানিক্যাল গার্ডেনও

সাধনবাবুর আরও অভিযোগ, ফিরহাদ উত্তরের থেকে দক্ষিণ কলকাতাকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। যদিও তাঁর এই অভিযোগ মানতে নারাজ শশী পাঁজা। শ্যামপুকুরের বিধায়ক শশী ওই অভিযোগ নস্যাৎ করে বলেন, ‘‘পুর প্রশাসন উত্তরেও যথেষ্ট গুরুত্ব দেয়। আমরা বঞ্চনার কোনও ঘটনা দেখিনি।’’

সাধনবাবুর আরও বক্তব্য, জেলার বিধায়কেরা যে কোনও বিষয়ে জেলাশাসককে পরামর্শ দিতে পারেন। কিন্তু কলকাতা জেলা হওয়া সত্ত্বেও তেমন কোনও সুযোগ নেই। তিনি বলেন, ‘‘আমরা এলাকার উন্নয়ন, করোনা বা ঘূর্ণিঝড়ের মোকাবিলা— কিছুই করতে পারছি না। পুরসভাও ডাকে না। ওরা শুধু কাউন্সিলরদের গুরুত্ব দেয়। এখন সব বিদায়ী কাউন্সিলর। কিন্তু বিধায়কেরা তো এখনও জনপ্রতিনিধি। তাঁদের কাজে লাগানো হচ্ছে না কেন?’’

পুর প্রশাসকম‌ণ্ডলীর সদস্য তথা পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রাক্তন ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ বলেন, ‘‘ঘূর্ণিঝড়ের পরদিন থেকে সাধনবাবুকে তো রাস্তায় দেখা যায়নি। উনি পুরসভার কাজের সমালোচনা করছেন কোন যুক্তিতে, বোধগম্য হচ্ছে না।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Cyclone Amphan Sadhan Pande Firhad Hakim KMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy