Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Local Train

দূরত্ব-বিধি পিষে গেল চিঁড়েচ্যাপ্টা ভিড়ের চাপে

তবে স্বস্তির খবর একটাই। এ দিন ভিড় নিয়ে রেল-রাজ্য আলোচনার শেষে ট্রেন বৃদ্ধির আশ্বাস মিলেছে।

দমদম স্টেশনে ভিড় যাত্রীদের। বৃহস্পতিবার। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

দমদম স্টেশনে ভিড় যাত্রীদের। বৃহস্পতিবার। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

সুপ্রকাশ মণ্ডল
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০২০ ০২:৩৯
Share: Save:

ব্যারাকপুর-খড়দহ পর্যন্ত ছবিটা এক রকম। সকালের দিকে ডাউন লোকালে ভিড়ের ছবিটা বদলে যাচ্ছে সোদপুর স্টেশনে এসে। ভিড়ে ঠাসা ট্রেনের ভিতরেই আছড়ে পড়ছেন অসংখ্য যাত্রী। দূরত্ব-বিধি মানতে প্ল্যাটফর্মে আঁকা এক-একটি বৃত্তে তখন তিন জন করে যাত্রী।

দূরত্ব-বিধি মানা তো দূর, হুড়োহুড়িতে মাস্কও খুলে যাচ্ছে অনেকের। ট্রেন থামতেই যাত্রীদের নামার ভিড়ের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে ওঠার ভিড়। লোকাল ট্রেনের দরজা তখন নরক গুলজার। ঠেলাঠেলি চরমে পৌঁছচ্ছে দমদম ও বিধাননগর রোড স্টেশনে এসে। ট্রেনের বেশির ভাগ যাত্রীই নামছেন এই দু’টি স্টেশনে। লোকাল ট্রেন চালুর দ্বিতীয় দিন, বৃহস্পতিবারেও বদলাল না সেই ছবি।

প্রাক্-করোনা সময়ে ভিড়ের যে ছবি দেখতে অভ্যস্ত ছিলেন যাত্রীরা, এখনও অবিকল সেই ভিড়। ফলে সংক্রমণ বৃদ্ধির আশঙ্কা করছেন তাঁদের অনেকেই। কিন্তু অনন্যোপায় হয়েই তাঁরা লোকাল ট্রেনে উঠছেন। তাঁদের মতে, ভিড় কমাতে হলে ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানো ছাড়া উপায় নেই। বৃহস্পতিবার ব্যস্ত সময়ে ৭৫ শতাংশ লোকাল ট্রেন চালানো হয়েছে বলে রেল সূত্রে জানা গিয়েছে।

তবে স্বস্তির খবর একটাই। এ দিন ভিড় নিয়ে রেল-রাজ্য আলোচনার শেষে ট্রেন বৃদ্ধির আশ্বাস মিলেছে। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, আজ, শুক্রবার থেকে অফিসের ব্যস্ত সময়ে ৯৫-১০০ শতাংশ লোকাল চালানো হতে পারে।

শান্তিপুরের বাসিন্দা রবীন্দ্রনাথ বসাক এ দিন বিধাননগরে নামতে গিয়ে সহযাত্রীদের ধাক্কায় আছড়ে পড়েন প্ল্যাটফর্মে। কনুই এবং হাঁটুতে চোট পান তিনি। ছিঁড়ে যায় ব্যাগের ফিতেও। লোকাল ট্রেনে যাতায়াতে অভ্যস্ত রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, “ব্যারাকপুর পর্যন্ত ভিড় থাকলেও যাত্রীরা উঠে দাঁড়ানোর জায়গা পাচ্ছিলেন। কিন্তু সোদপুরে এসে ভিড়টা খুব বেড়ে গেল। মুশকিল হল, বিভিন্ন স্টেশন থেকে ওঠা যাত্রীদের সিংহভাগই নামছেন দমদম কিংবা বিধাননগর স্টেশনে। ফলে সেই সময়ে যাত্রীদের হুড়োহুড়ি বেলাগাম হয়ে পড়ছে।”

কাঁচরাপাড়া থেকে ডাউন কল্যাণী সীমান্ত-শিয়ালদহ লোকালে উঠেছিলেন শিবশঙ্কর রক্ষিত। বড়বাজারে একটি সংস্থায় কাজ করেন তিনি। আগে দু’বার বাস বদলে বেশি টাকা খরচ করে কর্মস্থলে পৌঁছতেন। এ দিন কামরার গেটে ঝুলতে ঝুলতে অফিসে গেলেন। তাঁর কথায়, “জানি, সংক্রমণের আশঙ্কা রয়েছে। দূরত্ব-বিধি তো আমরাও মানতে চাই। কিন্তু মানব কী করে বলুন তো! বাসে করে অফিস যেতে গেলে মাইনের অর্ধেকটা বেরিয়ে যাবে।”

ব্যারাকপুর স্টেশনে এ দিন ভিড়ের ছবি তুলছিলেন সংবাদমাধ্যমের কর্মীরা। ট্রেন থেকে নেমে একদল যাত্রী তাঁদের সঙ্গে বচসা জুড়ে দেন। রীতিমতো শাসিয়ে বলেন, “আপনাদের এই ছবি দেখে রেল যদি ফের ট্রেন বন্ধ করে দেয়, তার দায় আপনারা নেবেন তো? ট্রেন না চললে কত মানুষের কাজ চলে যাবে, তা আপনারা জানেন?”

সোদপুর স্টেশনে বরাবরই ভিড় হয়। যাত্রীরা মনে করছেন, ব্যারাকপুর থেকে বাড়তি লোকাল চালানো হলে সোদপুরের ভিড়ের সমস্যার কিছুটা হলেও সমাধান হবে। স্থানীয় বাসিন্দা বিকাশ সরকার বললেন, “এক-একটি লোকালে সর্বাধিক ৬০০ জন যাত্রী তোলার কথা বলছে রেল। সেখানে প্রতিটি আসনে যাত্রী বসেও চিঁড়েচ্যাপ্টা ভিড় হচ্ছে। ফলে যাত্রীদের সংখ্যা কত, সেটা রেলই গুনে দেখুক।”

অন্য বিষয়গুলি:

Local Train Social Distancing Gathering
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy