Advertisement
০২ অক্টোবর ২০২৪

সোনা আসছে কখন, তিন দিন ঘুরে লুটের ছক

পুলিশ জানিয়েছে, ৫ অগস্ট রাতে রবীন্দ্র সরণির একটি বিপণির সামনে থেকে এক কর্মীকে তুলে নিয়ে গিয়ে কয়েক কোটি টাকার সোনা লুট করেছিল এক দল দুষ্কৃতী।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ অগস্ট ২০১৯ ০১:৫৬
Share: Save:

পরিকল্পনা করা হয়েছিল প্রায় দু’সপ্তাহ আগে। সেই মতো তিন দিন ধরে ওই এলাকায় রেকি করে গিয়েছিল অভিযুক্তেরা। এমনকি, ঘটনার দিন তারা শিকারের জন্য প্রায় পাঁচ ঘণ্টা ঘটনাস্থলেই অপেক্ষা করেছিল। পোস্তায় সোনা লুটের ঘটনায় আরও দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করার পরে এমনটাই জানতে পারছেন তদন্তকারীরা।

পুলিশ জানিয়েছে, ৫ অগস্ট রাতে রবীন্দ্র সরণির একটি বিপণির সামনে থেকে এক কর্মীকে তুলে নিয়ে গিয়ে কয়েক কোটি টাকার সোনা লুট করেছিল এক দল দুষ্কৃতী। সেই ঘটনাতেই রবিবার গ্রেফতার করা হয়েছে দীপঙ্কর নাগ এবং সোমনাথ ঘোষ নামে দুই অভিযুক্তকে। হুগলির মানকুন্ডু এবং চুঁচুড়া থেকে ওই দু’জনকে গ্রেফতার করেন পোস্তা থানার তদন্তকারীরা। শুক্রবার রাত থেকে শনিবার সকালের মধ্যে ওই ডাকাতিতে যুক্ত থাকার অভিযোগে আরও চার জন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। আদালতের নির্দেশে ওই ছ’জনই পুলিশ হেফাজতে রয়েছে।

লালবাজারের দাবি, আর এক ধৃত সৌম্য ঘোষের দাদা কেন্দ্রীয় একটি গোয়েন্দা সংস্থার অফিসার। পলাতক ওই অফিসার জানত, অভিযোগকারীর কর্মী রোজ রাতে সোনা নিয়ে ফেরেন। সেই মতো চার যুবককে ভাড়া করা হয় লুটের জন্য। দু’সপ্তাহের ওই পরিকল্পনায় তিন দিন ধরে ঘটনাস্থলে গিয়ে সৌম্যের নেতৃত্বে রেকি করে আসে তারা। ঠিক হয় নিজেদের ডিরেক্টরেট অব রেভিনিউ ইন্টেলিজেন্সের (ডিআরআই) অফিসার পরিচয় দেওয়া হবে। এক তদন্তকারী জানান, অভিযুক্তেরা ঘটনার দিন সূত্র মারফত জেনে গিয়েছিল যে সোনা নিতে যেতে দেরি হবে ওই কর্মীর। সেই মতো প্রায় পাঁচ ঘণ্টা অপেক্ষা করে অভিযুক্ত সাত জন। পরে সোনার ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে আসতেই বিষ্ণুকান্ত শর্মা নামের ওই কর্মীকে গোয়েন্দা পরিচয় দিয়ে গাড়িতে তুলে নেয় তারা। পরে সোনা কেড়ে নিয়ে তাঁকে হাওড়ার ফুলেশ্বরের কাছে গাড়ি থেকে নামিয়ে দেয়।

পুলিশের দাবি, রবিবার ধৃত দীপঙ্কর ওই কর্মীকে জোর করে গাড়িতে তুলে মারধর করে তাঁর মুখ ঠেসে ধরেছিল। আর সোমনাথ লুটের সোনা বিক্রির ব্যবস্থা করেছিল। তবে অভিযোগকারী জানিয়েছিলেন, দু’কেজি সোনা লুট হয়েছে। কিন্তু ইতিমধ্যেই প্রায় চার কেজি সোনা উদ্ধার করে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। পুলিশের একাংশ জানান, অভিযোগকারীর সোনা ছাড়াও অন্য এক জনের প্রায় তিন কেজি সোনা নিয়ে যাচ্ছিলেন ওই কর্মী। তবে পুরো সোনা যে বৈধ, তার সপক্ষে প্রামাণ্য নথি দিয়েছেন অভিযোগকারীরা।

পুলিশ জানিয়েছে, কেন্দ্রীয় একটি গোয়েন্দা সংস্থার ওই অফিসার কলকাতার বাইরে বসেই পুরো ছক কষেছিল লুটের। কর্মসূত্রে তার পোস্তায় যাতায়াত রয়েছে। সে ভাল মতো জানত, সোনার কারবার কী ভাবে হয়। তদন্তকারীদের দাবি, ধৃতদের অনুমান ছিল সোনাগুলি চোরাই । তাই গোয়েন্দা সেজে লুট করলে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানানো হবে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Robbery Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE