রিবেশকর্মী সুভাষ দত্তের কথায়, ‘‘শুধু তা-ই নয়, সেই নয়েজ় মিটারও কাজে লাগানো হয় কি না, সে ব্যাপারেও সংশয় প্রকাশ করা হয়েছে।’’
ফাইল চিত্র।
শব্দহীন এলাকা। তাতে কী? সেখানেও তো প্রায়ই ভাঙা হচ্ছে শব্দবিধি।
এর সাম্প্রতিকতম উদাহরণ দেখা গিয়েছে রবিবারই— আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সামনে রক্তদান শিবির উপলক্ষে তারস্বরে বাজানো হয়েছে মাইক। হাসপাতাল এলাকা ‘সাইলেন্স’ চত্বর হওয়া সত্ত্বেও কী ভাবে প্রকাশ্যে ওই কাণ্ড ঘটতে পারে, তা নিয়ে বিস্মিত পরিবেশবিদ মহল। যদিও অনেকে বলছেন, এ আর নতুন কী! এমন ঘটনা তো এখন কান-সওয়া হয়ে গিয়েছে! যেখানে প্রতি পদে লঙ্ঘন করা হচ্ছে শব্দবিধি।
এ বার সেই একই বক্তব্য শোনা গেল জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশেও। শব্দদূষণ সংক্রান্ত এক মামলার পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার পরিবেশ আদালত মন্তব্য করেছে, উচ্চস্বরে ডিজে বাজানো হচ্ছে। তা বাজানোর অনুমতি রাত ১০টা পর্যন্ত দেওয়া হচ্ছে কি না, তা ধর্তব্যের মধ্যেই পড়ে না। প্রশ্ন হল, তা নির্ধারিত মাত্রার মধ্যে বাজছে কি না। এ দিন শব্দদূষণ নিয়ে কড়া ভাষায় রাজ্য সরকারকে বার্তা দিয়েছে আদালত।
গত ২৫ এপ্রিলের শুনানিতে শব্দদূষণ সংক্রান্ত বর্তমান অবস্থা এবং তা নিয়ন্ত্রণে কী পদক্ষেপ করা হয়েছে, তা নিয়ে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ, পুলিশ এবং রাজ্য সরকারকে হলফনামা জমা দিতে বলেছিল আদালত। দু’চাকা, তিন চাকা ও চার চাকার গাড়ি, ট্রাক, বাস, ভারী পণ্য বহনকারী যানবাহন থেকে নির্গত শব্দ পরিমাপের কথা হলফনামায় উল্লেখ করতে বলা হয়েছিল।
অথচ, তার পরেও দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ ও পুলিশের তরফে হলফনামা কোর্টে জমা দেওয়া হয়নি। যার পরিপ্রেক্ষিতে অসন্তোষ প্রকাশ করে আদালত জানিয়েছে, শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ আইন (নয়েজ় পলিউশন (রেগুলেশন অ্যান্ড কন্ট্রোল) রুলস, ২০০০) প্রয়োগে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। এমনকি, সেই সংক্রান্ত কোনও তথ্যও আদালতকে জানানো হয়নি। সেই কারণে আগামী দু’সপ্তাহের মধ্যে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
এ রাজ্যে শব্দের লাগামছাড়া মাত্রা নিয়ে পরিবেশকর্মীরা দীর্ঘদিন ধরেই সরব। পরিবেশ আদালতের নির্দেশের পরেও রাজ্যে শব্দবিধি লঙ্ঘিত হয়, এবং তা সত্ত্বেও পুলিশ-প্রশাসনের ‘নিষ্ক্রিয়তা’য় রীতিমতো হতাশ তাঁরা। এক পরিবেশকর্মীর কথায়, ‘‘উচ্চগ্রামের শব্দ যে কতটা ক্ষতিকর, সেই বোধটাই তৈরি হয়নি। বাকি সমস্ত কিছুর মতো শব্দের ক্ষেত্রে চূড়ান্ত অনিয়ম চলছে।’’
প্রসঙ্গত, আগের এক শুনানিতে পুলিশ জানিয়েছিল, যানবাহন থেকে নির্গত শব্দের মাত্রা পরিমাপের জন্য তারা নয়েজ় মিটার ব্যবহার করে। যদিও যে সংখ্যক নয়েজ় মিটারের তথ্য পুলিশ দিয়েছিল, তা মোটেই পর্যাপ্ত নয় বলে মন্তব্য করেছে আদালত। পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্তের কথায়, ‘‘শুধু তা-ই নয়, সেই নয়েজ় মিটারও কাজে লাগানো হয় কি না, সে ব্যাপারেও সংশয় প্রকাশ করা হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy