Advertisement
০৪ নভেম্বর ২০২৪

জলাভূমির দূষণ রুখতে গড়িমসি, ক্ষুব্ধ আদালত

ভিআইপি রোডের ধারে জলাভূমির দূষণ নিয়ে নির্দেশ না মানায় দক্ষিণ দমদম পুরসভা, দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ-সহ রাজ্য প্রশাসনকে কার্যত ভর্ৎসনা করল জাতীয় পরিবেশ আদালত। নির্দেশ কেন মানা হয়নি, তা নিয়ে পুরসভা, পর্ষদ, জেলা ও রাজ্য প্রশাসনের কাছ থেকে হলফনামাও তলব করা হয়েছে। ভিআইপি রোডের ধারে বিস্তীর্ণ জলাভূমির দূষণ নিয়ে একটি মামলা হয়েছিল কলকাতার জাতীয় পরিবেশ আদালতের পূর্বাঞ্চলীয় বেঞ্চে।

কুন্তক চট্টোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ জুন ২০১৫ ০১:০৭
Share: Save:

ভিআইপি রোডের ধারে জলাভূমির দূষণ নিয়ে নির্দেশ না মানায় দক্ষিণ দমদম পুরসভা, দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ-সহ রাজ্য প্রশাসনকে কার্যত ভর্ৎসনা করল জাতীয় পরিবেশ আদালত। নির্দেশ কেন মানা হয়নি, তা নিয়ে পুরসভা, পর্ষদ, জেলা ও রাজ্য প্রশাসনের কাছ থেকে হলফনামাও তলব করা হয়েছে।
ভিআইপি রোডের ধারে বিস্তীর্ণ জলাভূমির দূষণ নিয়ে একটি মামলা হয়েছিল কলকাতার জাতীয় পরিবেশ আদালতের পূর্বাঞ্চলীয় বেঞ্চে। সেই মামলায় আদালতের বিচারক প্রতাপ রায় ও বিশেষজ্ঞ-সদস্য পি সি মিশ্রের ডিভিশন বেঞ্চ ওই জলাভূমি পুনরুদ্ধারের নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু সেই কাজ পুরসভা বা পর্ষদ করেনি। তাতেই রুষ্ট হয় আদালত। এ বার ওই জলাভূমি পরিদর্শন করার জন্য আদালতের নিজস্ব প্রতিনিধি বা অ্যাডভোকেট কমিশনার নিয়োগ করা হয়েছে। আগামী ২ জুলাই মামলার পরবর্তী শুনানি। তার এক সপ্তাহ আগে ওই প্রতিনিধি নিজের রিপোর্ট পরিবেশ আদালতে জমা দেবেন।

ভিআইপি রোডের ধারে উল্টোডাঙা থেকে দমদম পার্ক পর্যন্ত বিস্তৃত জলাভূমি রয়েছে। তার একাংশ দক্ষিণ দমদম পুরসভার এক কাউন্সিলরের উদ্যোগে সাজিয়ে তুলে রক্ষণাবেক্ষণের কাজও চলছে। কিন্তু সম্প্রতি দ্বৈপায়ন সেনগুপ্ত নামে এক ব্যক্তি পরিবেশ আদালতে অভিযোগ করেন, ওই জলাভূমির একটি বড় অংশকে দূষিত করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, স্থানীয় নির্মাণ ব্যবসায়ীদের একাংশ নিজেদের স্বার্থে ওই জলাভূমি দখলও করে নিচ্ছে। প্রমাণ হিসেবে ছবি ও উপগ্রহ চিত্রও জমা দেন আবেদনকারীর আইনজীবী অনিন্দ্য লাহিড়ী ও মৈনাক গঙ্গোপাধ্যায়।

সেই অভিযোগের ভিত্তিতে পরিবেশ আদালত জানিয়েছিল, ওই জলাভূমি দখল হচ্ছে কি না, তা নিয়ে মুখ্য সচিব ও নগরোন্নয়ন সচিবকে রিপোর্ট জমা দিতে হবে। ওই জলে কী কী দূষিত পদার্থ মিশছে তা রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের বিজ্ঞানীদের সরেজমিন পরিদর্শন করতে হবে। পরীক্ষা করে জানাতে‌ হবে জলে দূষণের মাত্রা কতটা। জলাভূমি বোজানো হচ্ছে কি না, তা জানাতে হবে সংশ্লিষ্ট পুরসভাকে। জলাভূমি সংরক্ষণে প্রশাসনিক দফতর ও সংস্থাগুলি কী করল, তা জানিয়েও রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছিল।

গত ২৯ মে এই মামলার শুনানিতেই অনিন্দ্যবাবুরা আবেদন করেন, ওই জলাশয়ের বাস্তব পরিস্থিতি কী, তা আদালত নিজে একবার পরিদর্শন করুক। এই জন্যই আদালতের প্রতিনিধি বা অ্যাডভোকেট কমিশনার নিয়োগের আর্জি জানান তাঁরা। সম্প্রতি আদালত ওই পদে অনির্বাণ দে নামে এক আইনজীবীকে নিয়োগ করেছে। আদালত সূত্রে খবর, ওই জলাভূমি বোজানোর চেষ্টা করা হয়েছে কি না বা কোনও অবৈধ নির্মাণ গজিয়ে উঠেছে কি না, সেটাই সরেজমিন দেখে অনির্বাণবাবু আদালতে জানাবেন। এর জন্য অনির্বাণবাবুর সঙ্গে প্রয়োজনীয় পুলিশি নিরাপত্তা দিতেও নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE