Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
District Magistrate

জেলাশাসকের বাংলোর সামনে ধর্নায় দম্পতি

এই দৃশ্য দেখে থমকে গিয়েছিলেন পথচলতি মানুষজন। হকচকিয়ে যায় পুলিশও। কিন্তু কেন এমন পোস্টার ঝুলিয়ে বসে আছেন ওই দম্পতি? প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জেনেছে, গোবর্ধন নস্কর নামে ওই ব্যক্তি একটি গ্রিল কারখানার মালিক।

বিক্ষুব্ধ: জেলাশাসকের বাংলোর সামনে গোবর্ধন ও জ্যোৎস্না নস্কর। মঙ্গলবার, হাওড়ায়। নিজস্ব চিত্র

বিক্ষুব্ধ: জেলাশাসকের বাংলোর সামনে গোবর্ধন ও জ্যোৎস্না নস্কর। মঙ্গলবার, হাওড়ায়। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০২০ ০৩:০১
Share: Save:

হাওড়ার জেলাশাসকের বাংলোর সামনের রাস্তা ঋষি বঙ্কিম সরণি ঘোষিত কন্টেনমেন্ট জ়োন। গত কয়েক দিন ধরে গার্ডরেল দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে রাস্তাটি। রয়েছে পুলিশি প্রহরা। কন্টেনমেন্ট জ়োন হওয়ায় গাড়ি এবং লোকের সংখ্যাও কম ওই এলাকায়। কারণ, প্রায় প্রতিদিনই সেখানে তিন-চার জন করে আক্রান্ত হচ্ছেন। এরই মধ্যে মঙ্গলবার দুপুরে দেখা গেল, জেলাশাসকের বাংলোর সামনের ফুটপাতে বুকে পোস্টার ঝুলিয়ে বসে আছেন এক দম্পতি। পোস্টারে লেখা, ‘আমপানে ক্ষতিগ্রস্ত আমরা, জেলাশাসক সাহায্য করুন।’

এই দৃশ্য দেখে থমকে গিয়েছিলেন পথচলতি মানুষজন। হকচকিয়ে যায় পুলিশও। কিন্তু কেন এমন পোস্টার ঝুলিয়ে বসে আছেন ওই দম্পতি? প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জেনেছে, গোবর্ধন নস্কর নামে ওই ব্যক্তি একটি গ্রিল কারখানার মালিক। গত ২০ মে ঘূর্ণিঝড়ে উড়ে যায় তাঁর কারখানার ছাউনি। গোবর্ধনবাবুর অভিযোগ,

ছাউনি মেরামত করার সময়ে তাঁকে বাধা দেন স্থানীয় জগদীশপুর পঞ্চায়েতের প্রধান গোবিন্দ হাজরা। শুধু বাধা দেওয়া নয়, তিনি টাকাও চান বলে অভিযোগ। টাকা না-দেওয়ায় বেধড়ক মারধর করা হয় গোবর্ধনবাবুকে। গুরুতর আহত অবস্থায় তিনি পাঁচ দিন হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। পরে পুলিশ ও আদালতের দ্বারস্থ হন। কিন্তু কোথাও বিচার না-পেয়ে জেলাশাসকের দফতরের সামনে সস্ত্রীক ধর্নায় বসেন। পঞ্চায়েত প্রধান অবশ্য সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

গোবর্ধনবাবু এ দিন বলেন, ‘‘গত ৬ জুন কারখানার ছাউনি মেরামতির জন্য লোক লাগাই। তখনই গোবিন্দ হাজরা দলবল নিয়ে এসে কাজ বন্ধ করতে বলেন। আমাকে হুমকি দিয়ে বলেন, ২০ হাজার টাকা না-দিলে কাজ করতে দেবেন না।’’ তাঁর অভিযোগ, টাকা দিতে রাজি না-হওয়ায় গোবিন্দবাবুর লোকজন তাঁকে বেধড়ক মারধর করে। ওই দিনই লিলুয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন গোবর্ধনবাবু।

ওই ব্যক্তির অভিযোগ, তার পরেও পুলিশ ব্যবস্থা নেয়নি। বাধ্য হয়ে তিনি আদালতের দ্বারস্থ হন। দু’পক্ষকে বসিয়ে বিষয়টির মীমাংসা করতে পুলিশকে নির্দেশ দেয় আদালত। গোবর্ধনবাবুর অভিযোগ, আদালতের নির্দেশ পেয়েও সক্রিয় হয়নি পুলিশ। শেষে এ দিন তিনি জেলাশাসকের বাংলোর সামনে স্ত্রী জোৎস্না নস্করকে নিয়ে ধর্নায় বসেন।

গোটা ঘটনা প্রসঙ্গে গোবিন্দবাবুর বক্তব্য, ‘‘ওই কারখানার জমি নিয়ে শরিকি বিবাদ রয়েছে। তা মেটানোর জন্য আমি ওঁদের ডেকে পাঠিয়েছিলাম। মারধর করা বা টাকা চাওয়ার অভিযোগ মিথ্যা।’’ হাওড়া জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘আমাদের কাছে কেউ এমন অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। হাওড়া সিটি পুলিশের সঙ্গেও কথা বলা হবে।’’

হাওড়া সিটি পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘আদালতের নির্দেশ মতো দু’পক্ষকে ডেকে বসানো হয়েছিল। কিন্তু সমস্যা মেটেনি। পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

District Magistrate Amphan Protest
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy