Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus

বড়বাজারে বেড়ে চলেছে সংক্রমণ, চিন্তিত রাজ্য

বড়বাজারের পরিস্থিতি আঁচ করে রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম দিন কয়েক আগে জানিয়েছিলেন, ওই এলাকার বাজার সরিয়ে নেওয়া হতে পারে।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ মে ২০২০ ০৩:২১
Share: Save:

কলকাতার বড়বাজার এবং মেছুয়া এলাকায় করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি ভাবিয়ে তুলছে রাজ্য সরকারকে। তাদের আশঙ্কা, মানুষের আনাগোনার পাশাপাশি ওই এলাকায় যে ভাবে ভিন্‌ রাজ্য থেকে ট্রাকের যাতায়াত বাড়ছে এবং ন্যূনতম সতর্কতা অবলম্বন না-করে পণ্য ওঠানো-নামানোর কাজ চলছে, তাতে যে কোনও দিন সেখানে বিস্ফোরকের আকার নিতে পারে এই অতিমারি। পাশাপাশি রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর মনে করছে, করোনা প্রতিরোধে যে প্রাথমিক সতর্কতা প্রয়োজন, সেটুকুও ওই এলাকায় মানা হচ্ছে না। এই অবস্থায় সংক্রমণ ঠেকাতে বড়বাজার, মেছুয়া এবং পোস্তায় প্রশাসনকে আরও কঠোর হতে হবে বলে মনে করছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞেরা। প্রয়োজনে পুলিশি ব্যবস্থা আরও জোরদার করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে সরকারি মহলে।

বড়বাজারের পরিস্থিতি আঁচ করে রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম দিন কয়েক আগে জানিয়েছিলেন, ওই এলাকার বাজার সরিয়ে নেওয়া হতে পারে। কিন্তু কোথায় তা সরানো হবে, এখনও ঠিক হয়নি। তিনি জানান, বিষয়টি নিয়ে আলোচনার জন্য আজ, মঙ্গলবার ওই এলাকার বাজার সংগঠনগুলির নেতাদের পুর ভবনে ডাকা হয়েছে। সেখানে হাজির থাকবেন কলকাতা পুলিশের কমিশনার অনুজ শর্মা।

সম্প্রতি কলকাতা পুর বোর্ডের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে পুরসভা পরিচালনায় প্রশাসকমণ্ডলী বসিয়েছে রাজ্য সরকার। তার চেয়ারম্যান পদে বসে ফিরহাদ জানান, বড়বাজারের ২০-২৬ নম্বর ওয়ার্ডে যে হারে সংক্রমণ বাড়ছে তা চিন্তার বিষয়। এর কারণ খুঁজতে গত শনিবার স্বাস্থ্য দফতরের অফিসারদের নিয়ে বৈঠক হয় পুর ভবনে। সেখানে বড়বাজার এলাকায় স্বাস্থ্য সমীক্ষার উপরে জোর দিতে বলা হয়। তা ছাড়া যে ওয়ার্ডগুলিতে সংক্রমণ পাওয়া গিয়েছে, সেখানকার বাসিন্দাদের লালারসের নমুনা পরীক্ষার কাজও শুরু হয়।

আরও পড়ুন: অমিল ন্যাপকিন, ঋতু-সমস্যা আছে অন্তরালেই

এর পরে সোমবার বড়বাজার এলাকার অধীনে ৪ নম্বর বরো অফিসে ওয়ার্ড কোঅর্ডিনেটরদের নিয়ে বৈঠক করেন ফিরহাদ। সেখানে প্রশাসকমণ্ডলীর দুই সদস্য অতীন ঘোষ এবং দেবব্রত মজুমদার ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন ওয়ার্ডের বিজেপি, তৃণমূল, কংগ্রেস এবং বামফ্রন্টের বিদায়ী কাউন্সিলরেরা। প্রসঙ্গত, তাঁরাই এখন ওয়ার্ড কো-অর্ডিনেটর।

করোনা সংক্রমণ বাড়ার সম্ভাব্য কারণ হিসেবে বিজেপির মীনাদেবী পুরোহিত, বিজয় ওঝা-রা জানান, বাজারে অনিয়ন্ত্রিত ভিড়ই এর বড় কারণ। অনেকেই মাস্ক ব্যবহার করছেন না। তাঁদের আরও অভিযোগ, ভিড় নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ততটা সক্রিয় নয়। সেই সঙ্গে হাসপাতাল থেকেও সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। ওয়ার্ড কোঅর্ডিনেটরেরা জানান, তাঁদের এলাকায় একাধিক জন সে ভাবেই আক্রান্ত হয়েছেন। অথচ আক্রান্তদের পরিবারের আর কারও করোনা ধরা পড়েনি। আক্রান্তের সংখ্যা সব চেয়ে বেশি ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে। প্রায় ৩০-এর কাছাকাছি। ইতিমধ্যেই সেখানে মারা গিয়েছেন চার জন। ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের কোঅর্ডিনেটর, তৃণমূলের ইলোরা সাহা জানান, রবীন্দ্র সরণির নতুন বাজারে একাধিক বেসরকারি বাজার চলছে। আনাজপট্টি, দুধপট্টি, লেবুপট্টিতে সকালে ও সন্ধ্যায় বাজার বসে। সেখানে অধিকাংশ মানুষই দূরত্ব-বিধি মেনে চলছেন না, পরছেন না মাস্কও। ছোট রাস্তার উপরে দোকান খোলা থাকায় লাগামছাড়া ভিড় হচ্ছে। তাঁর মতে, ভিড় নিয়ন্ত্রণে কঠোর না-হলে বিপদ আরও বাড়তে পারে।

বৈঠকের পরে ২৪ নম্বর ওয়ার্ড এলাকা পরিদর্শন করেন ফিরহাদ। পরে তিনি জানান, বড়বাজারের জন্য বিশেষ দল গঠন করা হয়েছে। এলাকায় জীবাণুনাশক ছড়ানো হচ্ছে। সংক্রমণ প্রতিরোধে সকলকে সতর্কতা মানতে হবে। না-হলে প্রশাসন আরও কঠোর হতে বাধ্য হবে।

আরও পড়ুন: দূরত্ব বিধি মেনে পরিষেবা, প্রস্তুতি নিচ্ছে মেট্রো

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেনআপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE